জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ দিয়েছে, তার শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমানো ও সুশাসন নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। তিন বছর আগে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ।
আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে এই হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমার বদলে আরও বেড়ে চলেছে। ফলে আইএমএফ এটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আপত্তিতে স্থগিত চতুর্থ কিস্তি
খেলাপি ঋণ লাগামহীন বৃদ্ধির ফলে আইএমএফ তাদের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের চতুর্থ কিস্তি (৬৫ কোটি ডলার) স্থগিত রেখেছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুনের আগে এই কিস্তি অনুমোদনের সম্ভাবনা নেই। সময়মতো আইএমএফের ঋণের কিস্তি না মেলায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আবারও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। যদিও আগামী এপ্রিল মাসে আইএমএফের একটি দল বাংলাদেশ সফরে এসে বিস্তারিত পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করবে। সেই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী ঋণ কিস্তির অনুমোদন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাখ্যা ও স্বীকারোক্তি
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর স্বীকার করেছেন ভবিষ্যতে দেশে খেলাপি ঋণ আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা খেলাপির প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করছি। অতীতে এটি গোপন রাখা হতো, যা এখন করা হচ্ছে না। তবে ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালার নতুন নিয়ম কার্যকর হলে খেলাপির হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।’ নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ঋণ ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধ না হলে সেটি খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে। ফলে খেলাপির হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এটা আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়নের একটি অগ্রগতি। এতে খেলাপির হার বাড়লেও আমরা প্রকাশ করতে বদ্ধপরিকর।’
সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি পরিস্থিতি
বর্তমানে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আইএমএফের শর্ত ছিল এটি ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্য ছিল ৫ শতাংশের নিচে রাখা। অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বেড়েছে।
খেলাপি ঋণের মূল কারণ
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে। এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রথমত, ব্যাংকগুলো অনেক গ্রাহকের ঋণ নিয়মিত দেখিয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে সেগুলো খেলাপি ছিল। এখন সেসব ঋণ প্রকৃত অবস্থায় ফিরে আসছে। দ্বিতীয়ত, ঋণ শ্রেণীকরণের প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মান অনুসারে কঠোর হচ্ছে। ফলে খেলাপির সংখ্যা বাড়ছে। তৃতীয়ত, আর্থিক শৃঙ্খলার অভাব, স্বচ্ছতার ঘাটতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
ব্যাংক খাতের সংকট ও সম্ভাব্য পরিণতি
ব্যাংক খাতের এই অব্যবস্থাপনা শুধু ঋণের ওপর প্রভাব ফেলছে না, বরং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য এটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণের উচ্চ হার বৈদেশিক ঋণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে দেশের ক্রেডিট রেটিং কমতে পারে এবং আন্তর্জাতিক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে উচ্চ সুদহার গুনতে হতে পারে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে গেলে নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির হারও নিম্নমুখী হবে।
আইএমএফের কঠোর মনোভাব
আইএমএফ ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক কিছু নীতিমালা এই শর্ত পূরণের লক্ষ্যে করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস্তবায়নে আরও কঠোরতা প্রয়োজন। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের শর্ত মেনে চলতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে নতুন ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ দিয়েছে, তার শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমানো ও সুশাসন নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। তিন বছর আগে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ।
আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে এই হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমার বদলে আরও বেড়ে চলেছে। ফলে আইএমএফ এটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আপত্তিতে স্থগিত চতুর্থ কিস্তি
খেলাপি ঋণ লাগামহীন বৃদ্ধির ফলে আইএমএফ তাদের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের চতুর্থ কিস্তি (৬৫ কোটি ডলার) স্থগিত রেখেছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুনের আগে এই কিস্তি অনুমোদনের সম্ভাবনা নেই। সময়মতো আইএমএফের ঋণের কিস্তি না মেলায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আবারও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। যদিও আগামী এপ্রিল মাসে আইএমএফের একটি দল বাংলাদেশ সফরে এসে বিস্তারিত পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করবে। সেই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী ঋণ কিস্তির অনুমোদন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাখ্যা ও স্বীকারোক্তি
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর স্বীকার করেছেন ভবিষ্যতে দেশে খেলাপি ঋণ আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা খেলাপির প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করছি। অতীতে এটি গোপন রাখা হতো, যা এখন করা হচ্ছে না। তবে ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালার নতুন নিয়ম কার্যকর হলে খেলাপির হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।’ নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ঋণ ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধ না হলে সেটি খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে। ফলে খেলাপির হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এটা আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়নের একটি অগ্রগতি। এতে খেলাপির হার বাড়লেও আমরা প্রকাশ করতে বদ্ধপরিকর।’
সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি পরিস্থিতি
বর্তমানে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আইএমএফের শর্ত ছিল এটি ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্য ছিল ৫ শতাংশের নিচে রাখা। অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বেড়েছে।
খেলাপি ঋণের মূল কারণ
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে। এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রথমত, ব্যাংকগুলো অনেক গ্রাহকের ঋণ নিয়মিত দেখিয়েছে, যদিও প্রকৃতপক্ষে সেগুলো খেলাপি ছিল। এখন সেসব ঋণ প্রকৃত অবস্থায় ফিরে আসছে। দ্বিতীয়ত, ঋণ শ্রেণীকরণের প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মান অনুসারে কঠোর হচ্ছে। ফলে খেলাপির সংখ্যা বাড়ছে। তৃতীয়ত, আর্থিক শৃঙ্খলার অভাব, স্বচ্ছতার ঘাটতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
ব্যাংক খাতের সংকট ও সম্ভাব্য পরিণতি
ব্যাংক খাতের এই অব্যবস্থাপনা শুধু ঋণের ওপর প্রভাব ফেলছে না, বরং সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য এটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণের উচ্চ হার বৈদেশিক ঋণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে দেশের ক্রেডিট রেটিং কমতে পারে এবং আন্তর্জাতিক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে উচ্চ সুদহার গুনতে হতে পারে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে গেলে নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির হারও নিম্নমুখী হবে।
আইএমএফের কঠোর মনোভাব
আইএমএফ ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক কিছু নীতিমালা এই শর্ত পূরণের লক্ষ্যে করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস্তবায়নে আরও কঠোরতা প্রয়োজন। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের শর্ত মেনে চলতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে নতুন ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
কেনাকাটার অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করতে দারাজ বাংলাদেশ চালু করেছে ‘চয়েস’— নামে একটি বিশেষ শপিং চ্যানেল। যেখানে গ্রাহকেরা পাবেন উন্নত মানের বাছাইকৃত পণ্য, দ্রুত ডেলিভারি, এবং এক্সক্লুসিভ ডিল।
১১ ঘণ্টা আগেউত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ নৌবন্দর সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর, যা দেশের নৌপরিবহন-ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতিদিন চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা এবং অন্যান্য নৌবন্দর থেকে সার, কয়লা, পাথর, সিমেন্ট, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজ এখানে নোঙর করে। তবে শুকনো মৌসুম এলেই নাব্য
১১ ঘণ্টা আগেব্যাংক এশিয়া পিএলসি নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে গত সোমবার (৩ মার্চ) আর্থিক সাক্ষরতা দিবস— ২০২৫ পালন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণ করে দিনটি পালন উপলক্ষে দেশব্যাপী ব্যাংকের এজেন্ট, মাঠকর্মী ও শাখা কর্মকর্তাদের সংযুক্ত করে আর্থিক সাক্ষরতা বিষয়ক একটি অনলাইন মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়।
১২ ঘণ্টা আগেআসন্ন ঈদ উৎসবে দেশের ইলেকট্রনিক খাতের সেরা ব্র্যান্ড ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতারা আবারও মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ক্যাম্পেইনের এই সিজনেও দেশের যে কোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন অথবা বিএলডিসি ফ্যান কিনে ক্রেতারা পেতে পারেন ১০ লাখ টাকা...
১২ ঘণ্টা আগে