Ajker Patrika

চিরচেনা সুবজ চা-বাগানগুলো এখন ধূসর

সহিবুর রহমান, প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২০: ৪৭
চিরচেনা সুবজ চা-বাগানগুলো এখন ধূসর

চা-বাগান মানেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে সবুজে মোড়া মনোরম প্রকৃতি। কিন্তু বছরের এই সময়ে এসে চা-বাগানগুলো হারায় চিরচেনা সেই রূপ। চা-গাছগুলোর অগ্রভাগ ছাঁটাই ও অন্যান্য পরিচর্যামূলক কাজের জন্য বাগানগুলো ধূসর রং ধারণ করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চা উৎপাদনকারী জেলা হবিগঞ্জের ৩৩টি বাগানে এখন চলছে প্রুনিংয়ের (চা-গাছের অগ্রভাগ ছাঁটাই) কাজ। যে কারণে এখন চা-পাতা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।

জেলার চুনারুঘাট উপজেলার চান্দপুর চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সাধন সাঁওতাল বলেন, ‘প্রতিবছর এই মৌসুমে আমরা চা-গাছ ছাঁটাই করি। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। পুরো জানুয়ারি মাস এই ছাঁটাই চলবে। এ সময় চা-পাতা তোলা বন্ধ থাকে। এখন চা-শ্রমিকেরা গাছের অগ্রভাগ ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি চা-গাছের গোড়া পরিষ্কার, ড্রেনের কাজসহ অন্যান্য চা-গাছের পরিচর্যামূলক কাজ করে থাকে। মার্চ মাস থেকে আবারও চা-পাতা উত্তোলন শুরু হবে।’

জেলার কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, চা-গাছ ছাঁটাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকেরা। একটা নির্দিষ্ট মাপে গাছের অগ্রভাগ ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে শীতকালে চা-বাগানের উৎপাদনপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। প্রকৃতির সহজাত নিয়মে এ সময়টিতে চা-গাছের শাখায় শাখায় শুভ্র ফুল আসে। গাছে ফুল আসায় ও গাছের পাতাগুলো চা উৎপাদনের অনুপযুক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে চা পাতার উৎপাদন কমে যায়। দুটি পাতা একটি কুঁড়ি থেকে সবচেয়ে ভালো মানের চা উৎপাদন হয়।

কর্মরত চা-শ্রমিকদের একজন চুনারুঘাট উপজেলা বেগম খান চা-বাগানের স্বপ্না মুণ্ডা বলেন, পরের মৌসুমে ভালো চা পাতা উৎপাদনের জন্য এ সময় চা-গাছগুলো ছেঁটে দেওয়া হয়। বৃষ্টি শুরু হলে এসব গাছ থেকে নতুন কচি চা পাতা বের হয়। আর এসব নতুন চা পাতা ও কুঁড়ি থেকেই উৎপাদন হয় উন্নতমানের চা।

চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি চা-বাগান ফ্যাক্টরি সূত্রে জানা যায়, কয়েক ধরনের ছাঁটাই বা প্রুনিং রয়েছে। যেমন কলার প্রুনিং (গলাকাটা ছাঁটাই), মিডিয়াম প্রুনিং (মধ্যম ছাঁটাই), লাইট প্রুনিং (হালকা ছাঁটাই), লো প্রুনিং (নিচু ছাঁটাই), ক্লিন প্রুনিং (পরিষ্কার ছাঁটাই)। গাছের বয়স, মাটির উর্বরতা প্রভৃতি দিক বিবেচনা করে প্রতিটি সেকশনের জন্য আলাদা আলাদা প্রুনিং নির্বাচন করা হয়। ছাঁটাই শেষে ফাঙ্গাস থেকে চা-গাছ রক্ষায় শৈলচূন ছিটিয়ে দেওয়া হয়। প্রুনিং করার পর চা-বাগানের চিরাচরিত সবুজের প্রকৃতি ধূসর বর্ণ ধারণ করে। এরপর বৃষ্টির আগেভাগে বাগানে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়।

মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক দীপন কুমার সিংহ বলেন, এই সময়ে শ্রমিকেরা মূলত চা-গাছ ছাঁটাইসহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যার কাজ করে থাকেন। এরপর বর্ষার শুরুতে চা-গাছগুলোতে নতুন পাতায় ভরে ওঠে। বাগান ফিরে পায় আবারও চেনা সবুজ প্রকৃতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বাজার দখলের চেষ্টা ভারতে

‘৫ মিনিট রুলস’ যেভাবে ইলন মাস্কের জীবনে সাফল্য আনল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত