Ajker Patrika

ড্রপ দেখানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
Thumbnail image

অসুস্থ সহপাঠীর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার একটি কোর্সে কোনো শিক্ষার্থী অংশ নেয়নি। ফলে কোর্সের শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল থেকে ড্রপ (অকৃতকার্য) দেখানোর সিদ্ধান্ত হয়। এটিকে ‘অমানবিক সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন করেছে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

আজ সোমবার সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন ‘বি’ এর সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করে তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোর্সের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান। এর আগে তারা সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবিতে ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করে। 

‘অমানবিক সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘আমাদের জীবন থেকে ছয় মাস কেড়ে নেবেন না’, ‘দাবি মোদের একটাই, পরীক্ষায় বসতে চাই’, ‘ছয় মাসের বিলম্ব, পরিবারকে কি বলব?’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্লাকার্ড হাতে কর্মসূচিতে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

এ সময় পরিচালক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এটা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত। আমি তোমাদের আশ্বাস দিতে পারব না যে তোমরা উঠে পড়ো, তোমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে।’ তবে তিনি শিক্ষার্থীদের হয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তাদের। 

পরে এক ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি বলেন, গত ১৬ জুলাই বাংলা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টারের ‘গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র’ শিরোনামের ৩ ক্রেডিটের একটি কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষার কথা ছিল। কিন্তু সেসময় আমাদের এক সহপাঠী জ্বর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় এবং অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। ‘গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র’ কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষার দুই-একদিন আগে পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করেছি। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বিভাগীয় প্রধানকে মৌখিকভাবে পরীক্ষাটি পেছানোর অনুরোধ করি। তখন বিভাগের শিক্ষকেরা সভা করে আমাদের জানান, পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। 

শাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরাতিনি বলেন, শিক্ষকেরা চাইলেই বিভাগের শিক্ষার্থীর শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষাটি পেছাতে পারতেন। পরবর্তীতে আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় প্রধানের পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেশ, নির্দেশনা পরিচালক এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করি। আমাদের আবেদন মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। 

জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি আরও বলেন, এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উল্লেখিত কোর্সে আমাদের অনুপস্থিত দেখিয়ে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিচ্ছি না। ইতিমধ্যে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা সমস্ত ক্লাস করা বর্জন করেছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি পালনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকা গণমাধ্যমে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে আমি কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত নিবে আমরা তাই করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত