Ajker Patrika

সিলেট জেলা বিএনপির বিবাদের মূলে চার ধারা

শাকিলা ববি, সিলেট
সিলেট জেলা বিএনপির বিবাদের মূলে চার ধারা

রাজপথে সরব না হলেও সিলেট বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ বিবাদ লেগেই আছে। বেশ কিছু দিন ধরে চার ভাগে বিভক্ত সিলেট বিএনপির কোন্দল নানা সময়ে সামনে এসেছে। বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে।

গত ১৭ আগস্ট সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নিজেদের বলয়ের নেতারা প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন সিলেট বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা। এর মধ্যে গত ১৮ আগস্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জামান জামান পদত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ইলিয়াস আলী পক্ষের লোক। তাঁর পদত্যাগের পর সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী পদত্যাগ করেন।

এদিকে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, সিলেটে বিএনপি পরিবারে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। জেলা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া কিছু নেতা দলকে ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করা হয়। সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য সংবাদ সম্মেলনে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

সিলেট বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিএনপি চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির এক ভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ–ক্ষুদ্র ও ঋণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামানের রয়েছে একটি বলয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী মিলে একটি বলয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তা ছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে রয়েছে আরেকটি বলয়।

এদিকে পুরোনো বিরোধ নতুন করে সামনে আসার ব্যাপারে জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতাদের কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে দলের অভ্যন্তরীণ অনিয়ম–অসন্তোষ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও নেতা–কর্মীদের পদত্যাগের ঘটনায় নিজেরা বিব্রত বলে জানান তাঁরা।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ–ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক বলেন, সিলেট বিএনপি পরিবার আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এখনই যদি এর সুরাহা করা না হয়, তাহলে সিলেট বিএনপি পরিবার যে ক্ষতির মুখে পড়বে, তা আর পূরণ করা যাবে না। জেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কমিটি গঠনে পরিকল্পিতভাবে সংগঠনকে ধ্বংস করা হচ্ছে।

ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদের বাদ দিয়ে। যুবদলকে যারা সংগঠিত করেছিল, তাদের যুবদলে স্থান দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতেও ত্যাগীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, দলটির আদর্শিক কর্মী হারিয়ে গেলে দল টিকে থাকবে কীভাবে?

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গিরদার বলেন, নেতাদের এমন পদত্যাগের ঘোষণা ও সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন অভিযোগ দলের জন্য বিব্রতকর। তবে এতে দলে কোনো প্রভাব পড়বে না। বড় দলে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ থাকতে পারে। এই ক্ষোভ নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করা যেতে পারে। প্রকাশ্যে এভাবে পদত্যাগের ঘোষণা বা সংবাদ সম্মেলন শোভনীয় নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

অপারেশন রেড ওয়েডিং ও নার্নিয়া: ইরানের সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানীদের হত্যায় ইসরায়েলি অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত