Ajker Patrika

বোনকে ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় হামলা, অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ০৪
বোনকে ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় হামলা, অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

বোনকে ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হয়েছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (১৬)। এই ঘটনায় মামলা করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় উপজেলার রাউৎগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা। 

স্কুলটির প্রাক্তন ছাত্র খালেদ সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিলকিস বেগম, শিক্ষক আদিত্য চন্দ্র দাস, মাও. আব্দুস সাত্তার, অরুন মোহন নাথ, মো. রুনু মিয়া, মো. তারেক আহমদ, ইন্দ্রজিৎ দেব। এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন আজাদ আহমেদ। 

মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা ও হামলার শিকার মেহেদীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, মেহেদী ও তার ছোট বোন রাউৎগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রতিদিন ভাই-বোন এক সাথে স্কুলে যাওয়া–আসা করত। ওই ইউনিয়নের নর্তন গ্রামের বাসিন্দা রজব আলীর ছেলে এলাকার চিহ্নিত ইজিবাইক চালক আসাব আলী (১৬) ও রমজান আলীর ছেলে আলমাছ আলী (১৫) প্রায়ই রাস্তায় মেহেদির বোনকে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় মেহেদীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আসাব ও আলমাছ। 

ঘটনার দিন গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় মেহেদী আমঝুপ বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিল। পথে আসাব ও আলমাছ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় আমঝুপ বাজারের পূর্ব পাশের মাদ্রাসার রাস্তা থেকে মেহেদীকে জোরপূর্বক ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় মেহেদীর গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। মেহেদীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে এলাকাবাসী আলমাছকে আটক করলেও প্রধান আসামি আসাব পালিয়ে যান। 

মেহেদীর স্বজন ও স্থানীয়রা তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নয় দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরে মেহেদী। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মেহেদীর শ্বাসনালির ভেতরে ৫টি ও গলায় ২২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। গলায় মারাত্মক জখমের কারণে ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না মেহেদী। 

হামলার ঘটনায় মেহেদীর পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় মামলা দায়ের করা হলেও প্রধান আসামি আসাব আলীকে এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ। 

মেহেদীর পিতা চিনু মিয়া বলেন, আমার ছেলে মেহেদীর ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা করলে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপস করার জন্য আমাকে নানান হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ৭ নভেম্বর আমি মৌলভীবাজার আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেছি। আমার নিরপরাধ ছেলের ওপর হামলার ন্যায় বিচার দাবি করছি। 

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় জানান, এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রধান আসামি পলাতক রয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত