Ajker Patrika

ধর্ষণের পর ‘যৌনকর্মী’ বলে ফেসবুকে পোস্ট, থানায় অভিযোগ

বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৩৭
ধর্ষণের পর ‘যৌনকর্মী’ বলে ফেসবুকে পোস্ট, থানায় অভিযোগ

ধর্ষণের পর ‘যৌনকর্মী’ আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক তরুণী। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার শিকার তরুণীর দাবি, অভিযুক্তরা ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করেছিল এবং এখন প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে।

এ ঘটনায় গত ২১ এপ্রিল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী। তাঁর দাবি, গত ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে বানিয়াচং উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। 

থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘটনার শিকার তরুণী একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। ঘটনার দিন তিনি খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে যান। সেদিন দিবাগত রাতে সংঘবদ্ধ কয়েক ব্যক্তি অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। পরে একটি স্কুলে নিয়ে তাঁকে ফের ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করা হয়। সে সময় ‘যৌনকর্মী’ হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে তাঁকে মারধর করা হয় বলেও উল্লেখ করেছেন ওই তরুণী।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীকে বাড়িতে না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক তাঁকে খুঁজতে বের হন। এরপর অভিযুক্তরা ওই প্রতিষ্ঠানের মালিককেও বেঁধে ফেলেন এবং ভুক্তভোগী তরুণী ও তাঁকে মারধর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে ধারণ করা ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

ঘটনার শিকার তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, একপর্যায়ে কৌশলে পালিয়ে তিনি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় গত ২১ এপ্রিল বানিয়াচং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। 

ভুক্তভোগী তরুণীর এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ধর্ষণ হইল, নির্যাতিত হইল, এখন আবার উল্টো চরিত্র নিয়া দোষ দিচ্ছে। গরিব বলে কি বিচার পাবে না? আসামিরা সাক্ষীদের বিভিন্নভাবে ভয়ও দেখাচ্ছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’

তরুণীটি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভুক্তভোগী তরুণী আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। বিভিন্ন সময়ে বখাটেরা ওই তরুণীকে উত্ত্যক্ত করত। আমি বিরোধিতা করায় আমাকে ও মেয়েটিকে দেখে নেবে বলে হুমকিও দিয়েছিল।’ তিনি আরও জানান, মামলার সাক্ষী হওয়ার কারণে বর্তমানে তাঁকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমারের নির্দেশে তাঁর পরিবারকে গ্রামের মধ্যে একঘরে করে রাখা হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন, এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত