Ajker Patrika

সিসিকের ৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী জালিয়াতির ঘটনায় ওএসডি, তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
Thumbnail image

স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া নকশা অনুমোদনে জড়িত থাকার অভিযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ওএসডি করা হয়েছে। গত রোববার সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এমনটি জানানো হয়।

ওএসডি হওয়া তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন সিসিকের পূর্ত শাখার সহকারী প্রকৌশলী রওসুনাআরা সিদ্দিকা নূপুর, মোহতাসিম আহমদ তানভীর ও প্রকৌশল শাখার অফিস সহকারী (ড্রিলিং অ্যাসিস্ট্যান্ট) জাহিদ আল হাসান ফাহিম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রওসুনাআরা সিদ্দিকা নূপুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এর মধ্যে আমার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। জাহিদের বিষয়টি আমার কাছ থেকে ধরা খাইছে। এখন এর মধ্যে দেখতেছি আমার নাম। মাননীয় মেয়র স্যারসহ সবার কাছে গিয়েছি। আমাকে কেন জড়ানো হলো এটাই জানি না।’

মোহতাসিম আহমদ তানভীর বলেন, ‘১০-১২টি ফাইল পেশ করে দাবি করা হয়েছে, এগুলো আমার বা নূপুর আপুর। আসলে এ রকম কিছু না। আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’

আদেশে বলা হয়েছে, ‘স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া নকশা অনুমোদনের বিষয়টি তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে জানা যাওয়ায় তদন্তের স্বার্থে আপাতত তাদের করপোরেশনের সব ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

এর আগে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঘটনা তদন্তে সিসিক সচিব মো. আশিক নূরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান; সম্পত্তি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাস; শিক্ষা, সংস্কৃতি, পাঠাগার ও সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা নেহার রঞ্জন পুরকায়স্থ। তা ছাড়া সহকারী প্রকৌশলী পর্যায়ের প্রতিনিধি ও সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবরকে সদস্যসচিব রাখা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে মেয়র বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে সিসিক সচিব মো. আশিক নূর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা তদন্তকাজ শুরু করেছি। সাক্ষী, অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীদের বক্তব্য নিচ্ছি। সরেজমিনেও গিয়েছি। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’

সিসিক সূত্র জানায়, জাহিদ তাঁর মামা জুনেল আহমদের সুবাদে সিসিকের প্রধান প্রকৌশলীকে ধরে নগর ভবনে কার্যসহকারী পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি নেন। জুনেল প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরের সহকারী (পিএ)। ২০১৯ সালে যোগদানের পর তিনি ড্রিলিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে পূর্ত শাখায় নগর ভবনে আসা সেবা গ্রহীতাদের ভবনের ফাইল অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মামা জুনেলের সুবাদে জাল রসিদের মাধ্যমে অসংখ্য ফাইল অনুমোদন করিয়ে নেন তিনি। এসব অভিযোগ প্রমাণ হলে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে পলাতক রয়েছেন জাহিদ আল ফাহিম। ব্যাংক রসিদে স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে তিনি রাজস্বের প্রায় কোটি টাকা লুটপাট করেন। অনিয়মে জড়িত থাকার পরও সিসিক তাঁকে আইনের আওতায় না নিয়ে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত