Ajker Patrika

সিলেট-৫ আসন: স্বতন্ত্রপ্রার্থীর প্রধান এজেন্টসহ ৩১ জনের নামে মামলা

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
সিলেট-৫ আসন: স্বতন্ত্রপ্রার্থীর প্রধান এজেন্টসহ ৩১ জনের নামে মামলা

সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনের এক স্বতন্ত্রপ্রার্থীর নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট, পৌর মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের নেতাসহ ৩১ জনের নামে মামলা করেছে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই)। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে-আসামিরা নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সম্পর্কে বিরূপ প্রচারণা চালায়। ফলে জনমনে বিভ্রান্তি, ভয়, আতঙ্ক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। 

গতকাল শুক্রবার জকিগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করলে আজ শনিবার ভোরে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হিসেবে রেকর্ড করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ। মামলার বাদী ডিজিএফআইয়ের সিলেট শাখার এসএএসআই শাহালম দেওয়ান। 

আজ শনিবার সন্ধ্যায় জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি–তদন্ত) সুকান্ত চৌধুরী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আমরা দেখতেছি। সব পুলিশ তো বিভিন্ন কাজে। তবুও আমরা চেষ্টা করতেছি।’ 

মামলার আসামিরা কানাইঘাট-জকিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৫ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আল কবিরের অনুসারী। এই আসনে আরেক স্বতন্ত্রপ্রার্থী হলেন হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী (কেটলি প্রতীক)। হুছামুদ্দীন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি। এখানে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দলটির সিলেট মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। 

গত বুধবার লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শাব্বির আহমদ অভিযোগ করেন, ‘সরকারি দল ও তাদের ডামি প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে থাকতে পারছে না, তাদেরকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সংস্থা থেকে চাপ সৃষ্টি করছে, ওই সংস্থা এক প্রার্থীর (হুছামুদ্দীন চৌধুরী) পক্ষ অবলম্বন করে নির্বাচন থেকে সবাইকে সরে দাঁড়ানোর চাপ দিচ্ছে। এই অবস্থায় সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো পরিবেশ না থাকায় আমি নির্বাচন বয়কট করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম।’ অবশ্য পরদিন তিনি তাঁর এই বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। 

গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদও সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন বরাবর একই লিখিত অভিযোগ করেন। তবে পরদিন মাসুক উদ্দিনের ছেলে ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তানিম আহমদ লিখিতভাবে অভিযোগটি প্রত্যাহার করেন। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আল কবিরও গত মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে অভিযোগ করেন। ৮ দফার অভিযোগে হুছামুদ্দিন চৌধুরীকে পাস করিয়ে দিতে নির্বাচনী এলাকায় ধারাবাহিক একটি গোয়েন্দা সংস্থার লোক দিয়ে ভয়ভীতি, কুৎসা রটনা, মিথ্যা খবর, নেতা-কর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে বলে জানান। 

ডিজিএফআইয়ের মামলার বিষয়ে আহমদ আল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে যাদের নাম রয়েছে, তাঁদের অনেকেই স্মার্টফোন ব্যবহারই করেন না। আমার নির্বাচনে বিজয় দেখে কেউ যদি এটা করে থাকে, তাহলে তো আমার আর কিছু করার নেই। আমরা আদালতের শরণাপন্ন হয়ে যতটুকু করার, ততটুকু করব।’ 

নির্বাচনী কোনো পরিবেশ নাই জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির আরও বলেন, ‘ইলান (এ রকম) যদি আগেরদিন মামলা করা হয় কর্মীদের ইলেকশন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য, তাহলে নির্বাচনী পরিবেশ কীভাবে থাকে? এই মামলার কারণে আমি অনেকটা শঙ্কিত। আমি একজন নিরীহ মানুষ। নিরীহ মানুষকে এভাবে হয়রানি করলে কষ্ট হয়। সাধারণত আমি কখনো দেখিনি ডিজিএফআই–এ মামলা করতে। মামলা তো সাধারণত পুলিশ করার কথা।’ 

নির্বাচন কমিশনে অভিযোগের বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির বলেন, ‘আমি একটা নয়, অনেকগুলো অভিযোগ করছি। সবকিছু লিখিতও দিয়েছি। তারা যেসময় পারেন, বিচার করবেন। আমার সঙ্গে পরে আর যোগাযোগ হইছে না। তবে প্রশাসন ও পুলিশ থেকে সব সময় বলা হয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আর এই আশার মধ্যেই আমি আছি। এই আসনে সবে নির্বাচন নিয়া প্রতিবাদ করতেছেন।’ 

ডিজিএফআইয়ের মামলার আসামিরা হলেন-৯ নম্বর মানিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাফর মো. রায়হান (৪৮), ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী আহমদ আল কবিরের ছোট ভাই ও নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট আহমদ আল ওয়ালী (৫৫), ৬ নম্বর সুলতানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (৫৩), জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদ (৪০), ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কমরু (৪০), সোনার বাংলা সমবায় সমিতির এমডি জাফরুল ইসলাম (৪২), সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ (৪৫), মাতারগ্রামের সফিকুল হকের ছেলে আল আমিন আব্দুল্লাহ সুমন (৪০), জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ সালাম (৩৮), ১ নম্বর বারহাল ইউপির চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী (৫৫), ৩ নম্বর কাজলসার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জুলকারনাইন লস্কর (৫৮) এবং ৪ নম্বর খলাছড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সামাদ আজাদ (৩৫)। 

এ ছাড়া বিএনপি নেতা ও ৭ নম্বর বারঠাকুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন (৫৫), বিএনপি নেতা ও খলাছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা মাসুক (৫৮), রূপালী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক আবু মোহাম্মদ জাকারিয়া ওরফে স্বপন (৪৫), ২ নম্বর বিরশ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার (৫২), ৮ নম্বর কসকনকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুছ সাত্তার মঈন (৫৫), সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াজ (৫৫), সীমান্তিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের আব্দুর রউফ তাপাদার (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল হাই (৫৮), গঙ্গাজল বাজারের সাবেক সেক্রেটারি মো. আসলাম মিয়া (৫৭), যুবলীগ নেতা ইমরান হোসেন লিমন (৩২), বিরশ্রী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এমাদ মিয়া (৫০) এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বুরহান উদ্দিনের (৫১) নাম মামলার আসামি হিসেবে আছে। 

খলাছড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তাক আহমদ (৫২), ফুলতলী গ্রামের মৃত আব্দুস শহিদ চৌধুরীর ছেলে আলবাব হোসেন চৌধুরী (৪৫), এনায়েত চৌধুরী (৪০) সহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচণায় আসামি আব্দুল হাকিম শামীম, শাহরিয়ার কবির রায়হান, আরএ নোমান, এমডি নুরুল আমিন রোকনদের ফেসবুক আইডি থেকে এসব অপপ্রচার চালানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম আসলাম হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের পারিচা গ্রামের মোলায়েমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরের দিকে বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর মধ্যপাড়া (মণ্ডলপাড়া) গ্রামে মুসা নামের এক ব্যক্তির নারকেলগাছে উঠেছিলেন আসলাম। ধারণা করা হচ্ছে, ডাব চুরি করার সময় তিনি গাছ থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের নিচে ডাবসহ লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বদলগাছী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাব পাড়তে গিয়ে পা ফসকে পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ, অবস্থা গুরুতর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে এমএস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং নামে একটি কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন— কারখানাটির শ্রমিক আল আমিন (৩০), আজিজুল্লাহ (৩২), মো. সেলিম (৩৫), মো. জালাল মোল্লা (৪০), মো. নাজমুল হুদা (৩৫) এবং সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

দগ্ধরা জানান, সকালে কারখানার নিচতলায় বয়লার রুমে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তেই সেই কক্ষে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে ৬ জনের শরীর ঝলসে যায়। সহকর্মীরা দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের সবার অবস্থাই গুরুতর। কার শরীরে কত শতাংশ পুড়েছে তা পরবর্তীতে বলা যাবে।

ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকা বলেন, সকালে এসএম ডাইং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কারাখানা থেকে কোনো তাদের (ফায়ার সার্ভিস) বিস্ফোরণের সংবাদ জানানো হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছেন। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় কারখানাটির বেশ কয়েক শ্রমিক-কর্মচারী আহত হয়েছেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। অফিশিয়ালি আমাদের এই বিষয়ে কেউ তথ্য দেয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেশবপুরে হাডুডু খেলায় অতর্কিত হামলা: ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ আহত ১০

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের মধ্যপাড়ায় হাডুডু খেলার পুরস্কার বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, বিদ্যানন্দকাটির কামরুজ্জামান (২৮), মির্জাপুর গ্রামের আবু মুসা (২০), পাত্রপাড়া গ্রামের নয়ন (২১), সাগরদত্তকাটি গ্রামের সুমন হোসেন (২৫), মইনুল ইসলাম (২৫), মনোহরনগর গ্রামের আলী হাসান, মজিদপুর গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২) ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন (২৩)। রাতে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খেলা দেখতে আসা একাধিক দর্শক জানান, আটদলীয় হাডুডু টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ও অতিথি নির্বাচন নিয়ে আয়োজক কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

শনিবার দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার পরই আয়োজক কমিটির একটি অংশ এতে আপত্তি জানিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা মকবুল হোসেন মুকুলকে উদ্দেশ করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে চলে যান।

সন্ধ্যায় ওই হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখার জন্য মঞ্চে আসেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান। ফাইনালে উপজেলার বুড়ুলি দল খুলনার চুকনগর দলকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ হস্তান্তর করার সময় একদল যুবক মঞ্চে এসে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় মঞ্চে থাকা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। হামলার কারণে দর্শকেরা ভয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খেলার রেফারি শওকত হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে হাডুডু খেলা সম্পন্ন হলেও পুরস্কার বিতরণের সময় ওই ঘটনা ঘটে। টুর্নামেন্টের সভাপতি রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘হামলা শুরু হলে আমি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করি।’

পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, ‘কিছু যুবক পুরস্কার বিতরণের সময় হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ও নয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের সহকারী কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, খেলার অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, নিহত ১

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ (৫৩) নামের এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে মাইজদী টিভি সেন্টার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আবুল কালামকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। তখন মাইক্রোবাসের যাত্রী আবুল কালাম আজাদ মারা যান এবং আহত হন আরও তিনজন।

আবুল কালাম আজাদ জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে শনিবার রাতে দেশে ফেরেন আজাদ। এরপর মাইক্রোবাস যোগে স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমনসহ গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। যাত্রাপথে মাইক্রোবাসটি সোনাপুর-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেন।

এতে মাইক্রোবাসটি ধুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পরপরই মাইক্রোবাসের চালক পালিয়ে যান। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত