Ajker Patrika

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সিলেটে বাম জোটের বিক্ষোভ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩, ২২: ১৪
রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সিলেটে বাম জোটের বিক্ষোভ 

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবিতে সিলেটে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া গ্রাম-শহরে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রেশনিং ও ন্যায্য মূল্যের দোকান চালুর দাবি জানানো হয়েছে। 

বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরের সিটি পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরের গুরুত্ব পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। 

বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেট জেলা শাখার সমন্বয়ক বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সভাপতি সিরাজ আহমেদের সভাপতিত্বে ও সিপিবি নেতা দেবব্রত পাল মিন্টুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিপিবি সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, বাসদ জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর। 

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাছান, বাসদ জেলার সদস্যসচিব প্রণব জ্যোতি পাল, ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) জেলার সাধারণ সম্পাদক হরিধন দাস, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা সদস্য মোখলেছুর রহমান। 

সমাবেশে নেতারা বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। সোনালি ও কর্কসহ দেশি মুরগির দামও ৬০০ টাকার বেশি। গরু-খাসির মাংসের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে অনেক আগেই চলে গেছে। সস্তা মাছ হিসেবে পরিচিত পাঙাশ, তেলাপিয়ার দামও ২০০ টাকার ওপরে। চাল-আটা, তেল-চিনি, ডাল-ময়দা, মসলাসহ কনফেকশনারি পণ্যের দামও ক্রমাগত বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা তরিতরকারির দামও। দ্রব্যমূল্যের এই পাগলা ঘোড়া কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। 

মন্ত্রীরা বারবারই বলছেন, রমজানে সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। দেশে খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তাই নয়, বাজার সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। 

নেতারা আরও বলেন, সাধারণ মানুষের জীবন দ্রব্যমূল্যের কশাঘাতে চরমভাবে বিপর্যস্ত। অনেক আগেই ৬৪ শতাংশ মানুষ খাদ্য কিনতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ২৯ শতাংশ পরিবার তাদের সঞ্চয় ভেঙেছে। গত এক বছরে ১০ শতাংশ পরিবার তাদের সব সঞ্চয় ভেঙে খেয়েছে। মানুষ টিসিবির পণ্য কিনতে ৫-৬ ঘণ্টা ট্রাকের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে না পেরে মানুষের পুষ্টিহীনতা বেড়ে ইতিমধ্যে তা ৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মানুষ তাদের খাদ্যতালিকা থেকে ইতিমধ্যেই মাছ-মাংস, দুধ-ডিম বাদ দিয়েছে। 

নেতারা আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি বিদ্যুৎ-গ্যাস, পানির মূল্যও বাড়ছে। বাড়ি ভাড়া-গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধিও থেমে নেই। বাড়ছে শিক্ষা ব্যয় ও চিকিৎসা খরচ। বাস্তবে মূল্যবৃদ্ধির চাপে দেশের মানুষ দিশেহারা। এ রকম পরিস্থিতিতে সব চেয়ে বেশি ভোগান্তি বেড়েছে শ্রমজীবী, মেহনতি নিম্ন আয়ের গরিব মানুষের। সরকার যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা না রাখে তা হলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। 

নেতারা অবিলম্বে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান এবং সারা দেশে ন্যায্য মূল্যের দোকান খুলে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার আহ্বান জানান। সমাবেশে নেতারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুটি খাল খনন করে তিস্তা ও জলঢাকা নদী থেকে পানি প্রত্যাহার পরিকল্পনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে বর খুন, নিখোঁজ নববধূকে উদ্ধারে নেমেছে ড্রোন

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার ও কিছু প্রশ্ন

‘৫ মিনিট রুলস’ যেভাবে ইলন মাস্কের জীবনে সাফল্য আনল

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের বাজার দখলের চেষ্টা ভারতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত