Ajker Patrika

দুর্লভ মর্মর বিড়াল

বিকুল চক্রবর্তী, মৌলভীবাজার
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ২০: ২১
দুর্লভ মর্মর বিড়াল

প্রথম দেখায় মনে হবে মেছো বিড়াল। কিন্তু এটি সাধারণ বিড়ালের চেয়ে বড়। নাকের ডগা থেকে লেজ পর্যন্ত তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট লম্বা। শরীরের লোম ঘন ও নরম। দেহ বাদামি-ধূসর থেকে হলদে বা লালচে বাদামি। তাতে ফ্যাকাশে বড় বড় ছোপ। পায়ে কালো ফোঁটা এবং মাথা ও ঘাড়ে কালো রেখা। মাথা ছোট ও গোলাকার, কপাল চওড়া। চোখের মণি বড়।

দেশে দুর্লভ এ প্রাণীর একমাত্র অস্তিত্ব পাওয়া গেছে শ্রীমঙ্গলস্থ পরিবেশপ্রেমী সিতেশ রঞ্জন দেবের বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে। এটি মর্মর বিড়াল, ইংরেজি নাম মার্বেল ক্যাট (বৈজ্ঞানিক নাম Pardofelis Marmorata)। সিলেট অঞ্চলে ‘পাখি খাওড়া’ বা ‘ছোট পাখি খাওড়া’ নামে অধিক পরিচিত।

স্বাধীনতার পর জীবিত মর্মর বিড়াল পাওয়া যায়নি। তবে পাহাড়ি এলাকায় এর চামড়া পাওয়া যায় বলে ধারণা করা হয়েছিল। এর অস্তিত্ব দেশের পার্বত্য এলাকায় রয়েছে। অনেকে মনে করতেন, হয়তো এটি দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সর্বশেষ সিতেশ রঞ্জনের প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে এর সন্ধান প্রাণী গবেষকদের মধ্যে রীতিমতো হইচই ফেলে দেয়। প্রাণীটি খোদ সিতেশ রঞ্জন দেবের কাছেই অজানা ছিল। বন্যপ্রাণী গবেষক শরীফ খানকে এর সম্পর্কে জানালে তিনি ছুটে আসেন শ্রীমঙ্গলে। তিনিই প্রথম এটিকে মর্মর বিড়াল হিসেবে চিহ্নিত করেন।

শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, ২০১৪ সালে উপজেলার নিরালা পুঞ্জির এক খাসিয়া যুবকের কাছ থেকে বিড়াল ছানাটি সংগ্রহ করেন। তখন এর চোখও ফোটেনি। বাচ্চাটিকে নিয়ে আসেন তাঁর বাসায়। প্রথমে ড্রপার, পরে ফিডার দিয়ে দুধ খাওয়ান। পরম আদরে সিতেশ রঞ্জনের বাসায় এক সদস্য হিসেবেই বড় হতে থাকে সে। কিছুদিন পর যখন বিড়ালের মতো ডাকে তখন এটি নিয়ে তাঁর সন্দেহ বেড়ে যায়। ধারণা করেন, এটি সংকর প্রজাতি হতে পারে।

‘ছোট পাখি খাওড়া’ নামের কারণ হিসেবে সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, এটি বেশির ভাগ সময় গাছে থাকে এবং ছোট ছোট পাখি ধরে খায়। খাদ্যতালিকায় রয়েছে বনের ছোট ছোট পাখি, পাখির ডিম ও বাচ্চা, বুনো খরগোশ, বড় ইঁদুর ও ব্যাঙ। তবে তারা খাদ্যতালিকায় বেশির ভাগ সময় জীবিত কোয়েল ও মুরগির মাংস দিয়ে থাকেন। তাঁর ছেলে সজল দেব জানান, প্রাণীটি এখন তাদের সেবা ফাউন্ডেশনেই রয়েছে। এটি পুরুষ প্রজাতি। বংশ বিস্তারের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর আরেকটি মাদি প্রজাতির সন্ধান করেছেন, কিন্তু পাননি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি ড. মনিরুল এইচ খান জানান, প্রাণীটি অনেকটা নিশাচর এবং গাছে থাকতেই ভালোবাসে। খাবারের সন্ধানে অনেক সময় মাটিতে নেমে আসে। একটি মা মর্মর বিড়াল একসঙ্গে এক থেকে চারটি বাচ্চা দিয়ে থাকে। এটি বিলুপ্তির পথে। তাই প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (আইইউসিএন) এটি শিকার নিষিদ্ধ করেছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

অপারেশন রেড ওয়েডিং ও নার্নিয়া: ইরানের সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানীদের হত্যায় ইসরায়েলি অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত