Ajker Patrika

নাম জটিলতায় এক যুগ পার, উদ্বোধনের অপেক্ষায় সিলেটের একমাত্র শিশুপার্ক

প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ৫৩
নাম জটিলতায় এক যুগ পার, উদ্বোধনের অপেক্ষায় সিলেটের একমাত্র শিশুপার্ক

সিলেট: এক যুগেও শেষ হয়নি সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) 'জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক'–এর নির্মাণকাজ। শুরুতে নাম সংক্রান্ত জটিলতায় অনেকদিন বন্ধ ছিল এর নির্মাণ। প্রায় ১৫ বছর আগে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার আলমপুরে এই পার্কের নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

২০০৬ সালে পার্কের কাজ শুরু হওয়ার পর মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপন, দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণসহ পার্কের যাবতীয় কাজ শেষ হয় ২০০৯ সালে। এরপর ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর থেকে পার্কে রাইড বসানোর কাজ শুরু হয়। বিগত দুই মাস যাবত আবারও কাজ শুরু হয়েছে পার্কের।

পার্কের প্রধান ফটকের সামনে ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’ নামে লাগানো হয়েছে নামফলক। এই এক যুগে থেমে থেমে কাজ হলেও এখনো পার্কটি চালু করতে সক্ষম হয়নি সিলেট সিটি কর্পোরেশন।

যদিও সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলছেন, এই পার্কের কাজ চলমান ছিল। এখন পার্কের প্রায় সব কিছু তৈরি আছে। মেয়র চাইলে যে কোনও সময় উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করতে পারবেন তারা।

জানা যায়, পার্কটির মূল অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ করার পর নামকরণ সংক্রান্ত জটিলতায় পরে সিসিক কর্তৃপক্ষ। ২০০৬ সালে তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের প্রচেষ্টায় পার্কটির জন্য বরাদ্দ আসে। তাই প্রথমে ‘সাইফুর রহমান পার্ক’ নামে কাজ শুরু হয় এই শিশু পার্কের। পরবর্তীতে সরকার বদল হওয়ার পর এই নাম নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। যার ফলে প্রায় আট বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় পার্কটি। পরিত্যক্ত অবস্থায় পার্কের বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের মূল্যবান সব জিনিসপত্র চুরি হয়ে যায়। পরে ‘সিলেট ন্যাচারাল পার্ক’ নামে পার্কটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় সিসিক। এরপরও জটিলতার নিরসন না হওয়ায় ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশুপার্ক’ নামকরণ করা হয় পার্কটির।

সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, পার্কটি নির্মাণে ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক ধাপে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। রাইড বসানোর কাজও প্রায় শেষ। প্রায় ১৫টি রাইড বসানো হয়েছে। এর মধ্যে আছে রেলগাড়ি, স্লিপার, সসরাইড, বোট, হানি, সুইং, নাগরদোলা, বাম্পার কার ইত্যাদি। পার্কটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকাকালীন বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের সরঞ্জামাদি চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে এতদিন বিকল্প সংযোগের মাধ্যমে কাজ চলানো হয়েছে। এখন সাবস্টেশনের সব সরঞ্জাম আনা হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় যে রাইডের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেগুলোও সংস্কার করা হয়েছে।

২০১৭ সালে যখন দ্বিতীয়বারের মতো পার্কে রাইড বসানোর কাজ শুরু হয়, তখন ছয় মাসের ভেতর পার্কটি চালু করার ঘোষণা দিয়েছিল সিসিক। তবে রাইডগুলো বসানোর পর চার বছর পেরিয়ে গেছে।

সিলেট নগরীতে বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত স্থানের অভাব রয়েছে। তাই এই পার্ককে ঘিরে আগ্রহের কমতি নেই নগরবাসীর। বিশাল পরিসরে এরকম একটি পার্ক তৈরি করার পরও চালু না করায় সিসিকের ওপর ক্ষুব্ধ সিলেটের সাধারণ জনগণ।

সিলেট নগরীর কলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, একযুগ হতে চলেছে অথচ সিসিক এখনো চালু করতে পারেনি পার্কটি। এই দায় সিসিককেই নিতে হবে। নগরীর ভিতরে কোনও খেলার মাঠ নেই, উন্মুক্ত স্থান নেই। ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোথায় যাবো? মাঝে মাঝে চা বাগানে ঘুরতে নিয়ে যাই। কিন্তু বাচ্চারা চায় পার্কে যেতে।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, পার্কটি তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। বর্তমানে রাইড বসানোসহ প্রায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলোরও কাজ চলছে। নাম সংক্রান্ত জটিলতাও আর নেই। ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’ নামেই পার্কটি চালু হবে। বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের যে মালামাল চুরি হয়েছিল সেগুলোও আনা হয়েছে। ট্রান্সফরমার এখন বসাচ্ছি না। কারণ উদ্বোধনের আগে ট্রান্সফরমার বসালে চুরি হয়ে যেতে পারে। তাই উদ্বোধনের তারিখ ঠিক করলে ট্রান্সফরমারটি বসানো হবে। সব কাজ প্রায় শেষ। এখন মেয়র মহোদয় চাইলে উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতিহাস দরজায় কড়া নেড়ে বলছে, ১৯৭১ থেকে পাকিস্তান কি শেখেনি কিছুই

‘আমাদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ো না’

কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের খামারবাড়ি অবরোধের ঘোষণা

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত