Ajker Patrika

তালা ভেঙে মায়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার, পাশেই অচেতন ছিল ১৪ মাসের শিশু

সিলেট প্রতিনিধি
তালা ভেঙে মায়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার, পাশেই অচেতন ছিল ১৪ মাসের শিশু

সিলেট নগরীর বালুচর এলাকা থেকে এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বালুচর এলাকার সেকান্দর মহলের নিচতলার একটি ইউনিটের তালাবদ্ধ দরজা ভেঙে আফিয়া বেগম (৩১) নামের ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মরদেহের পাশেই অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁর ১৪ মাস বয়সী মেয়ে সন্তানকে।

এদিকে আফিয়া বেগমের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ—এটি একটি হত্যাকাণ্ড। আর এতে আফিয়া বেগমের স্বামী নিয়াজ জড়িত রয়েছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, সিলেট মহানগরীর বালুচরের সোনার বাংলা আবাসিক এলাকার সেকান্দর মহল নামক (৩৬৪ নম্বর) পাঁচতলা বাসার নিচতলার একটি ইউনিটের ভাড়াটে আফিয়া বেগম। প্রায় দুই বছর আগে ওই বাসা ভাড়া নেন তিনি। তিনি তার শিশুসন্তানকে নিয়ে একা সেখানে থাকতেন। গত দু-তিন দিন থেকে প্রতিবেশীরা আফিয়াকে দেখতে পাননি। মঙ্গলবার রাতে তার ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। পরে দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তারা দেখতে পান আফিয়ার ইউনিটের দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। এরপর তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে আফিয়ার মরদেহ খাটের পড়ে থাকতে দেখে। মরদেহ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। মরদেহের পাশেই অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় আফিয়ার মেয়ে শিশুটিকে। পরে পুলিশ শিশুটির শ্বাস-প্রশ্বাস চলতে দেখে দ্রুত উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। শিশুটি এখন সুস্থ রয়েছে।

মৃত আফিয়া বেগমের পরিবার জানায়, তাদের পরিবার হতদরিদ্র। আফিয়া বেশ কয়েক বছর আগে সিলেট মহানগরীতে এক নারী চিকিৎসকের বাসায় কাজ করতেন। ওই নারী চিকিৎসক প্রায় ১০ বছর আগে আফিয়াকে নিয়াজের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের কয়েক বছর পর নিয়াজ প্রবাসে চলে যান। গত দুবছর আগে নিয়াজ দেশে ফিরলে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আফিয়ার সঙ্গে কলহের সৃষ্টি হয়। এ সময় আফিয়ার বাবার বাড়িতে এ বিষয়ে বিচার সালিসও হয়। পরে বিষয়টি আর সমাধানের পথে যায়নি এবং নিয়াজ পুনরায় ওমানে চলে যান। 

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, নিয়াজ কয়েক বছর ধরে আফিয়া ও তাঁর সন্তানের ভরণ-পোষণ দেন না। বিষয়টি নিয়ে আফিয়া স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। কিছুদিন আগে নিয়াজ দেশে ফিরলে এ মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠায়। গত ৮ দিন আগে জামিন পেয়ে নিয়াজ কারাগার থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি লাপাত্তা। নিয়াজের বাড়ি কোথায় বা তার অন্যান্য বিষয়ে আর কোনো তথ্য দিতে পারছে না আফিয়ার পরিবার। 

আফিয়ার বড় বোন বলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমাদের তেমন যোগাযোগ ছিল না। আমার বোন (আফিয়া) তাঁর সন্তানকে নিয়ে ওই বাসায় একাই থাকতেন। ৪ দিন আগে আমাদের সঙ্গে আফিয়ার সর্বশেষ ফোনে কথা হয়। এরপর আর কোনো কথা হয়নি। এরই মাঝে গতকাল (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পুলিশ আমাদের ফোন করে তার মৃত্যুর খবর দেয়।’ 

এ বিষয়ে শাহ পরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, ‘বাসার দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। প্রাথমিক ধারণা-এটি হত্যাকাণ্ড। তবে ঘটনাটি রহস্যজনক। বিভিন্ন দিক সামনে নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। আমরা বেশ কিছু ক্লু (সূত্র) পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে এসব বলা যাচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত