Ajker Patrika

আ.লীগের কৌশলে রংপুরে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি

শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ৩০
আ.লীগের কৌশলে রংপুরে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ছয়টি আসনে বাণিজ্যমন্ত্রী ও স্পিকারসহ তিনটিতে নৌকা, দুটিতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ও একটিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের জয়লাভ করেছেন। ছয়টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ দুটি আসনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে জাপার চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাতিজাকে ছেড়ে দেয়। ছাড়ের দুটি আসনের একটিতে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে পরাজয় ঘটে লাঙ্গলের। চার ভাগের একভাগ ভোট না পাওয়ায় হারান জামানত। জাপার দুর্গ খ্যাত রংপুরে ব্যাপকভাবে ভরাডুবি হয়েছে দলটির। আওয়ামী লীগের সুকৌশলে ছয়টির পাঁচটিতে পরাজয় ঘটেছে জাপার। 

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও সিটির আংশিক) থেকে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদেরে ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ারকে (লাঙ্গল) ছাড় দেয়। কিন্তু জাপার মনোনয়নবঞ্চিত বহিষ্কৃত নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ (ট্রাক) স্বতন্ত্র প্রার্থী হন এবং আওয়ামী লীগের শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু (কেটলি) থাকায় ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে লাঙ্গল ও ট্রাকের পরাজয় হয়। 

রংপুর এক আসনে আসাদুজ্জামান বাবলু কেটলি প্রতীকে সর্বোচ্চ ৭৩ হাজার ৯২৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ ট্রাক প্রতীকে ২৪ হাজার ৩৩২ ভোট পান এবং হোসেন মকবুল শাহরিয়ার ১০ হাজার ৮৯২ ভোট পেয়ে জামান হারান। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩২ হাজার ২১৯ জন। ১২৩টি ভোটকেন্দ্রে মোট ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৩২ ভোট প্রদান করা হয়। এর মধ্যে বৈধ ১ লাখ ১৩ হাজার ২০২ ভোট ও বাতিল ভোট ১ হাজার ৭৩০টি। 

রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনে ভোটের মাঠে ত্রিমুখী লড়াইয়ে হয়। এখানেও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার মাঠ দাপিয়ে বেড়ায় বেশ সংকটে ছিল আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। কিন্তু শেষ লড়াইয়ে সবকিছু উতরে বিজয়ী হয়েছে নৌকার ডিউক চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে সর্বোচ্চ ৮১ হাজার ৫৯৯টি ভোট পেয়ে ডিউক বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকার ট্রাক প্রতীকে ৬১ হাজার ৫৮৩ ভোট পান। এ ছাড়া এ আসনে আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিছুল ইসলাম মণ্ডল লাঙ্গল প্রতীকে ২৪ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৫৩, পুরুষ ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮৫ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৪ জন। দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের ১৩৬টি ভোটকেন্দ্রের ৮১৫টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বেসরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা করেছে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। জি এম কাদের লাঙ্গল প্রতীকে ১৭৫টি কেন্দ্রে ৮১ হাজার ৮৬১টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী। তিনি ঈগল প্রতীকে ২৩ হাজার ৩২৬ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৪ জন; পুরুষ ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন। 

রংপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডলকে প্রত্যাহার করে লাঙ্গলের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ আসনে জি এম কাদেরের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী। এখানে নৌকার প্রার্থী না থাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা ভোটারদের কাছ লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চান। 

রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনে লাখো ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন নৌকার প্রার্থী বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্যমন্ত্রীর জয়লাভের//// বিষয়টি আগে থেকেই ///আচ করেছিলে রংপুরের মানুষ। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ২১ হাজার ৬২২টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে এমপি নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল লাঙ্গল প্রতীকে ৪১ হাজার ৬৭১ ভোট পান। এ ছাড়া এ আসনে আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ কংগ্রেসের সিরাজুল ইসলাম ডাব প্রতীকে ১ হাজার ১৯৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। 

রংপুর-৪ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৩৮৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩০ জন; পুরুষ ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন। দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের ১৬৩টি ভোটকেন্দ্রের ৯৭৭টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসেনও ত্রিমুখী মুখী লড়াইয়ের কথা জানত সাধারণ মানুষ, হয়েছেও তাই। এ আসনে নৌকার প্রার্থীকে ৩৪ হাজার ১১৯ ভোটে পরাজিত করেছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগী জাকির হোসেন সরকার। জাকির হোসেন সরকার ট্রাক প্রতীকে ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৯টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে এমপি নির্বাচিত হয়েছে। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী রাশেক রহমান। তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৯০ ভোট। এ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী আনিছুর রহমান ১০ হাজার ৩৩৪ ভোট। ১৫০টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

পীরগঞ্জ উপজেলার নিয়ে গঠিত রংপুর-৬ আসন। এ আসনের মানুষ এবারও ভরসা রেখেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর ওপর। এ আসনে ১১১টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৮ হাজার ৬৩৫টি ভোট পেয়ে শিরীন শারমিন বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। তিনি ট্রাক প্রতীকে ৩৬ হাজার ৮৩২ ভোট পান। লাঙ্গলের প্রার্থী নুর আলম যাদু মিয়া পান ৯ হাজার ১৬ ভোট। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৫৪ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৮ জন, পুরুষ ১ লাখ ৬৪ হাজার ২৫২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন। এ আসনের ১১১টি ভোটকেন্দ্রের ৭১২টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

রাত সাড়ে ১০টায় ফলাফল ঘোষণা শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান বলেন, রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু কেটলি প্রতীকে ৭৩ হাজার ৯২৭ ভোট, রংপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কামাল মো. আহসানুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৮১ হাজার ৫৯৯ ভোট, রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টি প্রার্থী জি এম কাদের লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৮১ হাজার ৮৬১ ভোট, রংপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী টিপু মুনশি পেয়েছেন এক লাখ ২১ হাজার ৬২২ ভোট, রংপুর-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৯ হাজার ৭০৯ ভোট ও রংপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শিরীন শারমিন চৌধুরী এক লাখ ৮ হাজার ৬৩৫ ভোট পান। ছয়টি আসেন তাঁরা সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ায় তাদের বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ডাব চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম আসলাম হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের পারিচা গ্রামের মোলায়েমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরের দিকে বদলগাছী উপজেলার আক্কেলপুর মধ্যপাড়া (মণ্ডলপাড়া) গ্রামে মুসা নামের এক ব্যক্তির নারকেলগাছে উঠেছিলেন আসলাম। ধারণা করা হচ্ছে, ডাব চুরি করার সময় তিনি গাছ থেকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছের নিচে ডাবসহ লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বদলগাছী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাব পাড়তে গিয়ে পা ফসকে পড়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ, অবস্থা গুরুতর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ২৯
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
এম এস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে এমএস ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং নামে একটি কারখানায় বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন— কারখানাটির শ্রমিক আল আমিন (৩০), আজিজুল্লাহ (৩২), মো. সেলিম (৩৫), মো. জালাল মোল্লা (৪০), মো. নাজমুল হুদা (৩৫) এবং সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ (৩৫)।

দগ্ধরা জানান, সকালে কারখানার নিচতলায় বয়লার রুমে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তেই সেই কক্ষে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে ৬ জনের শরীর ঝলসে যায়। সহকর্মীরা দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের সবার অবস্থাই গুরুতর। কার শরীরে কত শতাংশ পুড়েছে তা পরবর্তীতে বলা যাবে।

ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার খায়রুল ইসলাম আজকের পত্রিকা বলেন, সকালে এসএম ডাইং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কারাখানা থেকে কোনো তাদের (ফায়ার সার্ভিস) বিস্ফোরণের সংবাদ জানানো হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছেন। বিস্ফোরণের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় কারখানাটির বেশ কয়েক শ্রমিক-কর্মচারী আহত হয়েছেন।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। অফিশিয়ালি আমাদের এই বিষয়ে কেউ তথ্য দেয়নি। গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেশবপুরে হাডুডু খেলায় অতর্কিত হামলা: ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ আহত ১০

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলার অনুষ্ঠানে অতর্কিত হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাগরদত্তকাটি গ্রামের মধ্যপাড়ায় হাডুডু খেলার পুরস্কার বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান, বিদ্যানন্দকাটির কামরুজ্জামান (২৮), মির্জাপুর গ্রামের আবু মুসা (২০), পাত্রপাড়া গ্রামের নয়ন (২১), সাগরদত্তকাটি গ্রামের সুমন হোসেন (২৫), মইনুল ইসলাম (২৫), মনোহরনগর গ্রামের আলী হাসান, মজিদপুর গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২) ও মাদারডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন (২৩)। রাতে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খেলা দেখতে আসা একাধিক দর্শক জানান, আটদলীয় হাডুডু টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ও অতিথি নির্বাচন নিয়ে আয়োজক কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

শনিবার দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মুকুল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার পরই আয়োজক কমিটির একটি অংশ এতে আপত্তি জানিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চে থাকা মকবুল হোসেন মুকুলকে উদ্দেশ করে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকলে তিনি মঞ্চ থেকে চলে যান।

সন্ধ্যায় ওই হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখার জন্য মঞ্চে আসেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান। ফাইনালে উপজেলার বুড়ুলি দল খুলনার চুকনগর দলকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ হস্তান্তর করার সময় একদল যুবক মঞ্চে এসে অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় মঞ্চে থাকা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। হামলার কারণে দর্শকেরা ভয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

খেলার রেফারি শওকত হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে হাডুডু খেলা সম্পন্ন হলেও পুরস্কার বিতরণের সময় ওই ঘটনা ঘটে। টুর্নামেন্টের সভাপতি রেজাউল করিম সরদার বলেন, ‘হামলা শুরু হলে আমি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করি।’

পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, ‘কিছু যুবক পুরস্কার বিতরণের সময় হামলা চালিয়েছে। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ও নয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের সহকারী কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন বলেন, খেলার অনুষ্ঠানে মারামারির ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, নিহত ১

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত
আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ (৫৩) নামের এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে মাইজদী টিভি সেন্টার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আবুল কালামকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। তখন মাইক্রোবাসের যাত্রী আবুল কালাম আজাদ মারা যান এবং আহত হন আরও তিনজন।

আবুল কালাম আজাদ জেলার সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে শনিবার রাতে দেশে ফেরেন আজাদ। এরপর মাইক্রোবাস যোগে স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমনসহ গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। যাত্রাপথে মাইক্রোবাসটি সোনাপুর-চৌমুহনী আঞ্চলিক মহাসড়কের মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেন।

এতে মাইক্রোবাসটি ধুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আজাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পরপরই মাইক্রোবাসের চালক পালিয়ে যান। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত