Ajker Patrika

‘এমোন জাড় থাকলে গরিব মানুষ মরি যাইবে’

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ২০: ২৪
‘এমোন জাড় থাকলে গরিব মানুষ মরি যাইবে’

‘জাড়োতে (শীত) হাত-পাও কাহিল হয়া গেইচে। দোপোরসমেও (দুপুর বেলা) পোড় পোয়া (খড়ে আগুন) শরিল গরোম কত্তে কত্তে জাইবরাও শ্যাষ হয়া গেল। কদ্দিনে যে ব্যালা দেখা যাইবে। এমতোন জাড় থাকলে তো হামার মোতোন গরিব মানুষ মরি যাইবে।’ আজ শুক্রবার দুপুরে খড়ের গাদায় আগুন জালিয়ে গা নিভারনের সময় ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের স্কুলপাড়া গ্রামের ষাট বছরের বৃদ্ধা জামেনা বেগম। 

রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

এবার শীতের আগমন বিলম্ব হলেও গত চার দিন ধরে উত্তর জনপদে সূর্যের দেখা মিলছে না। দিন-রাত অবিরাম কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পুরো এলাকা। কুয়াশার সঙ্গে মাঝে মধ্যে বইছে শুষ্ক শীতল বাতাস। এমন অবস্থায় খেটে খাওয়া মানুষেরা রোজগারের জন্য ঘরের বাইরে যেতে পারছে না। এর ওপর শীতজনিত বিভিন্ন রোগও জেঁকে বসেছে শিশু ও বয়স্কদের মাঝে। 

প্রচণ্ড ঠান্ডায় মাঠ-ঘাট হয়ে পড়েছে জনশূন্য। হাট-বাজারে দোকান খোলা থাকলেও মিলছে না তেমন ক্রেতার দেখা। ফলে বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মূলধন খরচ করেই সংসার চালাতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রচণ্ড শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। 

কথা হয় উপজেলা বাজারের গালামাল ব্যবসায়ী হিমেল আহম্মেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শীত মনে হয় কাস্টমারোক (ক্রেতা) ধরছে। সকাল থাকি ২ হাজার টাকা ব্যবসা হয় নাই।’ 

বিকেল ৪টার দিকে কথা হয় বড়াইবাড়ী গ্রামের অটো চালক মিলন মিয়ার সঙ্গে তিনি বলেন, ‘কয়দিন থাকি আস্তা-পতে যাত্রী খুব কম। তেমোন কামাইও হয় না। আইজ সকাল ১০টা থাকি এলা চাইট্টা বাজে। কেবল কামাই হইচে ২০০ টাকা। জাড়োতে আর গাড়ি চালবারো পাংচোল না। হাত-পাও কোঁকড়া নাগি যায়চোল। গাড়িত চাজও ফুরি যায়চোল। এই টাকা দিয়া কি কিনিম, চিন্তায় মাতা কুলায়চোল না।’ 

এদিকে রংপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টায় রংপুরে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন একই তাপমাত্রা ছিল। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। একই সঙ্গে স্থানভেদে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজমান রয়েছে। চলমান পরিস্থিতি কিছুটা কমে আরও কমপক্ষে ২ দিন এমন তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে মেঘের আনাগোনা শুরু হতে পারে। 

গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ ফেরদৌস জানান, শীতের প্রকোপে শিশু ও বয়স্ক মানুষের মাঝে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, এজমা, সর্দি রোগ বেড়েছে। এ সব রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আন্তবিভাগীয় ভর্তি হয়েছে প্রায় ৭২ জন রোগী। এ ছাড়াও বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ৮ শতাধিক রোগী। এদের অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক। 

তিনি আরও জানান, ঠান্ডা থেকে দূরে থাকলেই এসব রোগ থেকে সহজেই বাঁচা সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত