Ajker Patrika

ডিমলায় ভুল চিকিৎসায় সিজারের পর মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ 

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ৪৫
Thumbnail image

নীলফামারীর ডিমলায় সিজারের সময় ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে মেডি-নোভা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। 

মৃত নারীর নাম লাভলি আক্তার (২৫)। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের মো. সামিউলের স্ত্রী। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই সিজার অপারেশন করায় লাভলি নামে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অনুমোদনহীন ওই ক্লিনিকে প্রায়ই রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের অভিযানে মাঝেমধ্যে ক্লিনিক সিলগালা হলেও অজ্ঞাত কারণে আবার চালু হয়। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন রোগীর অপারেশনের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ সার্জন, একজন অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট, একজন এমবিবিএস চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল আবশ্যক। এসব জনবলের অনুপস্থিতিতে কোনোভাবেই অস্ত্রোপচার করতে পারবেন না সার্জন। 

স্বজন ও ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে প্রসবজনিত অস্ত্রোপচার করাতে লাভলিকে মেডি-নোভা ক্লিনিকে ভর্তি করায় তাঁর পরিবার। রাত ১২টার দিকে বিশেষজ্ঞ সার্জন ও অ্যানেস্থেসিওলজিস্টের উপস্থিতি ছাড়াই লাভলির সিজার করেন ক্লিনিকের এমবিবিএস চিকিৎসক মমিনুর রহমান সনেট। সিজারের পর চিকিৎসক জানান, মা ভালো আছে তবে নবজাতক অসুস্থ। এর কিছু সময় পর নবজাতকের মৃত্যুর খবর জানায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরে রাত ১টার দিকে প্রসূতিকে ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। তখন চিকিৎসকেরা জানান, লাভলি ভালো আছে। 

পরে ভোর ৬টার দিকে লাভলি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাঁকে রংপুর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। 

লাভলির বাবা সৈয়দ আলী বলেন, ‘প্রসব বেদনা উঠলে মেয়ে লাভলীকে ওই ক্লিনিকে নিয়ে যাই। সিজারের পর মা ও শিশুর মৃত্যু হয়।’ 

তবে ক্লিনিকটির ব্যবস্থাপক হর্ষবর্ধন রায় জানান, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে ভর্তি করতে চায়নি। তাঁর (প্রসূতির) স্বজনদের অনুরোধে ভর্তির পর সিজার করা হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞ না হয়েও অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক মমিনুর রহমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাশের উপজেলাগুলোতে অনেক এমবিবিএস চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করছে। তারা কেউই বিশেষজ্ঞ নয়। তাই আমিও করছি।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্লিনিকটির অনুমোদন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা কাগজপত্র জমা দিয়েছে, তবে লাইসেন্স পেয়েছে কি না জানা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত