Ajker Patrika

তেঁতুলিয়ায় জমি দখলের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
তেঁতুলিয়ায় জমি দখলের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় জমি দখলের অভিযোগে নুরুল ইসলাম লালুকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা-পুলিশ। সোমবার বিকেলে কালান্দিগঞ্চ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শালবাহান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, গত শনিবার রাতে শালবাহান ইউনিয়নের কালান্দিগঞ্জ এলাকার পত্মীপাড়া গ্রামের জাহেরুল ইসলামের ভোগদখলীয় জমি ভাড়াটে লোকবল নিয়ে অবৈধভাবে দখল করেন লালু ও তার তিন ভাই। জমি দখলে বাধা দিতে গেলে মারধরের শিকার হন ভুক্তভোগীরা। গুরুতর আহত ভুক্তভোগী জাহেরুল ইসলাম বর্তমানে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। 

এ ঘটনায় নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে শালবাহান ইউনিয়নের কালান্দিগঞ্জের পত্মীপাড়া গ্রামের সোহরাব আলীর চার ছেলে তারা মিয়া (৪০), বাবুল আক্তার (৩৫), নুরুল ইসলাম লালুসহ (৫০) ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেন। 

অভিযোগে জানা যায়, বোয়ালমারী মৌজার ১৮ খতিয়ানের ২০০৫,২০০৬ ও ২০০৭ এই তিনটি দাগে ১ একর ৭৩ শতক জমির মধ্যে ৬৩ শতক জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছিলেন জাহেরুল ইসলাম ও তার ছেলে নাজমুল ইসলাম। কিন্তু তফশীল বর্ণিত জমি অভিযুক্তরা নিজেদের বলে দাবি করে। দীর্ঘ সময় ধরেই জমি জবর দখলে গভীর ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। এ নিয়ে আদালতে দ্বারস্থ হলে উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থানে থাকার কথা বলা হয়। বাটোয়ারা মামলা করে রায় পান ভুক্তভোগীরা। অপরদিকে অভিযুক্তরা আদালতে মামলা করলে তা খারিজ হয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী নাজমুল জানান, সাহরির সময় ধারালো অস্ত্র ও ভাড়াটে লোকজন নিয়ে জমি জবর দখল করতে অবস্থান নেন তারা মিয়া, বাবুল, নুরুল ইসলাম লালু ও মোস্তফা চার ভাইসহ গংরা। তারা ভয়ভীতি দেখান। বাধা দিতে গেলে মারধর করে জমিতে দুটি টিনের ছাপড়া তুলে তারা। উপায়ন্তর না পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে পুলিশে ফোন দিলে তেঁতুলিয়া মডেল থানা-পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জমি দখলে বাধা দেন ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

হাসপাতালে চিকিৎসারত ভুক্তভোগী জাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরেই রেকর্ডীয় এ জমি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু নুরুল ইসলাম লালু ও তার ভাইরা খতিয়ান বলে জমিটি তাদের দাবি করছে। এ নিয়ে আদালতে বাটোয়ারা মামলা করে রায় পেয়েছি। কিন্তু লালু গংরা শনিবার রাতে ভাড়াতে লোকজন নিয়ে জমিতে টিনের ছাপড়া তুলে দখল করে নেয়। বাধা দিতে গেলে মারধর করে। একপর্যায়ে প্রাণনাশের উদ্দেশে আমার গলা চেপে ধরে জবাই করার চেষ্টা চালায়।’ 

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এলাকায় রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। জমি দখল, নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন, চাঁদাবাজি আর মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকার মানুষকে হয়রানিসহ বহু অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে লালুর বিরুদ্ধে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লালুসহ অভিযুক্তরা। 

গ্রেপ্তারের আগে সব অস্বীকার করে নুরুল ইসলাম লালু বলেন, ‘জমিটা আমাদের। তারা অবৈধভাবে দখল করে ভোগদখলে ছিল। তাই দখলে নিয়েছি।’ 

এ বিষয়ে সোমবার সন্ধ্যায় মডেল থানার ওসি আবু ছায়েম মিয়া জানান, নুরুল ইসলাম লালু এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি গত শনিবার গভীর রাতে অবৈধভাবে জমি দখলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে গভীর রাতে জমি দখলের অভিযোগে লালুসহ ১৮ জনকে নামীয় অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে। অজ্ঞাত করা হয়েছে এক শ জনকে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত