Ajker Patrika

নদীভাঙনে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ মে ২০২২, ১৫: ০২
নদীভাঙনে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

রৌমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে শতাধিক পরিবার। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে আরও পাঁচ শতাধিক পরিবার। এসব পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এবারের বন্যার শুরুতে নদীভাঙনে ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই শতাধিক পরিবার। ঘরবাড়ি ভাঙা পরিবারগুলো রাস্তার ধারে, অন্যের জমিতে কোনোমতে ঠাঁই নিয়েছে।

চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল জানান, ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী, খেদাইমারী, সুখেরবাতি, খাউরিয়া, বন্দবেড় ইউনিয়নের গোয়ালেরচর, ফলুয়ারচর, উত্তর ফলুয়ারচর, পালেরচর, কুটিরচর, চরবাঘমারা, রৌমারী ইউনিয়নের কান্তাপাড়া, কাশিয়ারচর, চাক্তাবাড়ী, যাদুরচর ইউনিয়নের দুবলাবাড়ী, ধনারচর পশ্চিমপাড়া ও কাঠিয়ামারী গ্রাম।

যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার কর্তিমারী বাজার রক্ষা বাঁধ ও ধনারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আমি উপজেলা সমন্বয় সভায় বিষয়টি তুলে ধরার পরেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’ 

বন্দবেড় ইউনিয়নের ফলুয়ারচর গ্রামের আসরাফ আলী বলেন, ‘আমাদের বসতভিটা নদীতে ভেঙে গেছে। আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে অন্যের জমিতে কোনোমতে ঠাঁই নিয়ে বেঁচে আছি।’ 

একই ইউনিয়নের পালেরচর গ্রামের ছোরমান মাঝি বলেন, ‘আমার জমিজমা ঘরবাড়ি সব নদীতে ভেসে গেছে। রাস্তার ধারে কাগজের ছাপড়া দিয়ে পোলাপান নিয়ে কোনোমতে জীবন যাপন করছি। কত দিনে আমার বসতভিটা জেগে উঠবে আল্লাই জানে। সরকার যদি একটু খাসজমি দিত, সেখানে ব-পোলাপান নিয়ে থাকতে পারতাম।’ 

উত্তর ফলুয়ারচর গ্রামের মকুল, শানু, সভা দাশ, মঞ্জু, কুতুব আলী, জহেরা, তুলসী, হনুফা, জামাল শেখ, ছামছুল, তারাফুল, ছমেদ জানান, দিনের পর দিন নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হলেও সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। 

বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আব্দুল কাদের জানান, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছে। পানি বৃদ্ধির শুরুতে ফলুয়ারচরে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল, সেগুলোও এখন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পরবে নদীপারের মানুষ। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত