Ajker Patrika

আত্মহত্যা নয়, স্কুলশিক্ষিকাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন ছেলে ও স্বামী

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০: ১৯
আত্মহত্যা নয়, স্কুলশিক্ষিকাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন ছেলে ও স্বামী

তিন বছর সাত মাস পর ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলশিক্ষিকা সান্ত্বনা রায় মিলি চক্রবর্তী (৪৫) হত্যা মামলাটি নতুন মোড় নিয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত শেষে তাঁর স্বামী, ছেলেসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও সদর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল আমলি আদালতে এ চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন।

আসামিরা হলেন ভুক্তভোগীর স্বামী সমির কুমার রায়, ছেলে রাহুল রায়, সমিরের ভাইয়ের ছেলে স্বপন কুমার রায় ওরফে মানিক ও মিলির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সোহাগ।

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, জেলা বিএনপির নেতা আমিনুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান স্কুলশিক্ষিকা সান্ত্বনা রায় মিলি চক্রবর্তী। মোবাইলে খুদে বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে তাঁরা মিলিত হতেন। বিষয়টি মিলির ছেলে রাহুল রায় ও তাঁর স্বামী জেনে যান। ঘটনার দিন (২০২১ সালের ৮ জুলাই) মিলির সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদ হয়।

একপর্যায়ে তাঁকে মারধর ও বুকে আঘাত করলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর রাত ৩টার দিকে তাঁকে ঘর থেকে বের করে বাইরে নিয়ে যান তাঁরা। পথে বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী জিজ্ঞাসা করলে স্বামী ও ছেলে জানান, অসুস্থ হওয়ায় মিলিকে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন।

এরপর বাড়ির পাশের একটি গলিতে কেরোসিন ঢেলে মিলির শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। আগুনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায়।

সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডটি মূলত ঘটেছে আসামি আমিনুল ইসলাম সোহাগের মোবাইল ফোনে অশ্লীল মেসেজ আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে। তিনি আদালতে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, আমার মেসেজ আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।

অন্যদিকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি মিলির স্বামী ও ছেলে অংশ নিলেও হত্যার আলামত নষ্ট করার দায়ে মামলায় অভিযুক্ত হন সমিরের ভাইয়ের ছেলে স্বপন কুমার রায় ওরফে মানিক।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৮ জুলাই শহরের মোহাম্মদ আলী সড়কে নিজ বাসার পাশে থেকে সান্ত্বনা রায় মিলি চক্রবর্তীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১০ জুলাই ঠাকুরগাঁও থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করা হয়। মিলি ‘প্রারম্ভিক কিন্ডারগার্টেন’ নামের একটি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর স্বামী সমীর কুমার রায় পঞ্চগড় চিনিকলে কর্মরত।

তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সম্প্রতি সিআইডি নতুনভাবে তদন্ত শুরু করলে মিলির স্বামী সমির কুমার রায় ও সমিরের ভাতিজা স্বপন কুমার গ্রেপ্তার হন। সোহাগ ও রাহুল জামিনে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত