Ajker Patrika

নার্সারিতে ভাগ্য বদল রহিমের

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
আপডেট : ২১ জুন ২০২৩, ১৫: ৩৮
নার্সারিতে ভাগ্য বদল রহিমের

কর্মসংস্থানের জন্য গ্রাম ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন ইট-পাথরে মোড়া শহর ঢাকায়। একপর্যায়ে জিরানী বাজারে শুরু করেন মুদির দোকান। আর্থিক টানাপোড়নে চার বছর আগে বাধ্য হোন দোকানটি ছেড়ে দিতে। গ্রামে ফিরে শুরু করেন নার্সারি। রাত-দিন পরিশ্রম করে দাঁড় করান নার্সারিটিকে। এখন তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত এলাকায়। গল্পটা গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের কিশামত দশলিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের (৩৫)। 

রহিম বলেন, ‘তরুণ বয়সে সংসারের অভাব-অনটনের কারণে ঢাকা শহরে পাড়ি দিই। শুরুতে পোশাক কারখানায় চাকরি করি। তারপর সেটা ছেড়ে দিয়ে সাভারের জিরানী বাজারে একটি মুদির দোকান দিই। সেই দোকান অর্থের অভাবে বেশি দিন টেকেনি। বেকার অবস্থায় ফিরে আসি গ্রামের বাড়িতে। জীবনযুদ্ধে হার না মেনে পরিচিত এক কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ২০১৯ সালে বাড়ির পাশের পতিত ১০ শতক জমিতে গাছের চারা রোপণ করি।’ 

রহিম আরও বলেন, ‘শুরুতে জায়গার সংকটসহ নানান সমস্যায় পড়তে হয়। নার্সারি ব্যবসায় ধীরে ধীরে সফলতা আসতে শুরু করে। একপর্যায়ে পাশে দাঁড়ান বড় ভাই সাইফুল ইসলাম। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে চারা রপ্তানি করছি তুরস্ক, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি দেশে চারা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখন আকারে অনেক বড় হয়েছে নার্সারিটি। 

সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের কিশামত দশলিয়া গ্রামে রহিমের মায়ের দোয়া নামের ২০ বিঘা জমির ওপর বিশাল এক নার্সারি। বিভিন্ন জাতের গাছ দোল খাচ্ছে বাতাসে। নার্সারিতে শোভা পাচ্ছে বিদেশি জাতের আম, মাল্টা, লেবু, জাম্বুরা, আনারস, ফুলসহ দেশি শতাধিক জাতের চারা। উন্নত জাতের ফল, ফুল ছাড়াও এখানে আছে ঔষধি গাছের চারা। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রহিম নতুন নতুন জাতের চারা উৎপাদন করে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। একজন প্রতিষ্ঠিত নার্সারি মালিক হয়েও এখনো তিনি নিজ হাতে চারার পরিচর্যা করেন। কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করেছেন। 

রহিমের ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, নার্সারিতে উন্নত জাতের ফল ও ফুলের চারা বিক্রি করে মাসে ৩ লাখ টাকা উপার্জন করছেন তাঁর ছোট ভাই। নার্সারিতে প্রতিদিন ২০-২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। 

দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আব্দুর রহিমের নার্সারি এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর নার্সারিতে যদি কোনো রকম সহযোগিতার দরকার হয়, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে থেকে করা হবে। 

সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিউল আলম দৈনিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুরু থেকে সফল ওই নার্সারির মালিককে আমরা পরামর্শ দিয়ে আসছি। সফলতার জন্য আমরা তাঁকে ক্রেস্টও দিয়েছি। এই নার্সারির উন্নত জাতের ফল ও ফুলের চারা বিদেশে রপ্তানি করে যাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারেন, সে জন্যও নানান ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত