Ajker Patrika

মহাসড়কে ‘নিরুপায়’ চাষিদের ধান-খড়, দুর্ঘটনার ঝুঁকি

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের মিঠাপুকুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে শুকানো হচ্ছে বৃষ্টিতে ভিজে থাকা ধান। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের মিঠাপুকুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে শুকানো হচ্ছে বৃষ্টিতে ভিজে থাকা ধান। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের মিঠাপুকুরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ধান শুকানোর কাজ। উপজেলার রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক ও মিঠাপুকুর-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কেই ধান শুকাচ্ছেন চাষিরা। এতে ওইসব সড়ক দিয়ে যানবাহনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি রয়েছে সড়কে ধান শুকানোর কাজে নিয়োজিতদেরও। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশ বলছে, সড়কে ধান না শুকানোর জন্য চাষিদের বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাষিরা একরকম নিরুপায় হয়েই সড়কে ধান শুকাতে এসেছেন। রংপুরের মিঠাপুকুরে ধান কেটে বেকায়দায় পড়েছিলেন চাষিরা। ধান কাটার পরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে পারছিলেন না তাঁরা। গত সোমবার থেকে ঝলমলে রোদ পেয়ে ধান শুকানোর ধুম পড়ে যায়। তবে ব্যক্তিগত চাতাল বা ধান শুকানোর মতো জায়গা না থাকায় সড়ক ও মহাসড়কেই ধান ও গোখাদ্য খড় শুকাতে আসেন তাঁরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।

স্থানীয় চাষিরা বলেন, কাটা-মাড়াইয়ের শুরুর দিকে আবহাওয়া খুব ভালো ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইতে শুরু হওয়ায় কাঁচা ধান নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তাই উপায় না পেয়ে সড়ক-মহাসড়কেই ধান শুকাতে আনতে হয়েছে। ধান না শুকিয়ে স্তূপ করে রাখলে তাতে চারা গজিয়ে যায় এবং দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।

ধান শুকাতে দেখা গেছে উত্তরের জনপদের সবচেয়ে ব্যস্ততম রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা সদর, গড়ের মাথা, জায়গীর ও বৈরাগীগঞ্জ এলাকায়, মিঠাপুকুর-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রসিদপুর, ভবানীপুর, পাগলার হাট, মোসলেম বাজার, তালিমগঞ্জ এলাকায় এবং গাইবান্ধা ভায়া মিঠাপুকুর হয়ে দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানেও ধান শুকাতে দেখা গেছে।

প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে মহাসড়কে ধান শুকাতে আসা দুলহাপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন রাখু জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষ করেন। ধান কাটার পরই শুরু হয় বৃষ্টি। বেশি দিন স্তূপ করে রাখলে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় উপজেলা সদরে হেনা মেমোরিয়াল মহিলা কলেজসংলগ্ন মহাসড়কে ধান শুকাচ্ছেন। মাজরা পোকার আক্রমণে তাঁর ফলন কম হয়েছে বলে জানান তিনি।

কাশিপুর গ্রামের হোসেন আলী জানান, কাঁচা ধান স্তূপ করে রাখলে চারা গজিয়ে যায় এবং দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এ কারণে মহাসড়কেই ধান শুকাতে হচ্ছে।

এদিকে সড়কে ধান ও খড় শুকানোয় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা। মোটরসাইকেল আরোহী ওয়াজেদ মিয়া বলেন, সড়কে গো-খাদ্য খড় শুকানোর কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

সড়কে ধান-খড় শুকানোর কারণে দুর্ঘটনার খবরও পাওয়া গেছে। গ্রাম পুলিশ চন্দন মহন্ত বলেন, ‘সড়কে খড় শুকাতে দেওয়ায় আমি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছি।’

কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বলেন, কাঁচা ধান বেশি দিন স্তূপ করে রাখা যায় না। এ কারণে সবাই একসঙ্গে ধান শুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। যার কারণে অনেকেই ধান রক্ষায় সড়ক-মহাসড়কেই ধান শুকাতে বাধ্য হচ্ছেন।

বৈরাতী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ আঞ্চলিক ওই সড়কে ধান না শুকানোর জন্য চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরিদর্শক রফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, সড়ক-মহাসড়কে ধান শুকানোর কাজে নারীদের সংখ্যাই বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া ‘শিবিরের লোক’ আকাশ চৌধুরীকে ধরছে না পুলিশ

প্রফেসর আনোয়ারা আ.লীগের লোক হলে এত অপমান নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হত না: ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময়

বৈষম্যবিরোধীদের মিছিল থেকে জি এম কাদেরের বাড়ি ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন

ফারুক কেন নিঃসঙ্গ হলেন

পরিচালক পদ বাতিল, বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুককে অপসারণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত