Ajker Patrika

শিক্ষার্থীশূন্য স্কুলে শিক্ষক ৫ জন, হয়েছে এমপিওভুক্তও

নীলফামারী ও ডিমলা প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ৫৪
শিক্ষার্থীশূন্য স্কুলে শিক্ষক ৫ জন, হয়েছে এমপিওভুক্তও

নীলফামারীর ডিমলায় গয়াবাড়ী ইউনিয়নে মডার্ন নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকলেও গত জুলাই মাসে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, মাঝে মাঝে এর অফিস খোলা হলেও আসে না কোনো শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীবিহীন একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ায় শিক্ষকেরা আনন্দিত হলেও বিষয়টি নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় মহলে আছে নানা আলোচনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এমপিওভুক্তির আবেদনের সময় ২০২০ সাল হলেও প্রতিষ্ঠানটি কাগজে-কলমে স্থাপিত দেখানো হয়েছে ২০০১ সালে। ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। তাঁর বোন আতিকা বেগম ও ভগ্নিপতি আব্দুল মতিনকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান।

গত বুধবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী বসে লুডু খেলছে। তাদের দু-একজনের কাছে স্কুলব্যাগ থাকলেও নেই খাতা-কলম। শিক্ষার্থীশূন্য বাকি দুটি শ্রেণিকক্ষ পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ। একটিতে মোটরসাইকেল, অপরটিতে কাঠখড় রাখা হয়েছে। অফিসরুমে বসে আছেন চারজন সহকারী শিক্ষক। বিদ্যালয়ের সামনে পড়ে রয়েছে ঠিকাদারের সিসি ব্লকের স্তূপ।

 নীলফামারীর ডিমলায় গয়াবাড়ী ইউনিয়নে মডার্ন নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় অবস্থিতঅভিযোগ রয়েছে, গত জুলাই মাসে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে গ্রামের পাঁচ-সাতজন শিক্ষার্থীকে বিনা পয়সায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে শ্রেণি কার্যক্রম সচল দেখানো হচ্ছে। যদিও শিক্ষকেরা দাবি করেছেন, এসব শিক্ষার্থী তাঁদের বিদ্যালয়ের। তখন শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে শিক্ষকেরা তা দেখাতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান ঠিকাদারি কাজে ব্যস্ত থাকেন বলে বিদ্যালয়ে সময় দিতে পারেন না।’

এমপিওভুক্ত হওয়ার শর্ত হলো প্রতিটি শ্রেণিতে কমপক্ষে ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। আর পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ২৫ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে একটি খেলার মাঠ থাকতে হবে। নিজস্ব জমি থাকতে হবে। কাগজে-কলমে জমি থাকলেও বাস্তবে এই বিদ্যালয়ের দখলে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি নেই। 

প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা স্কুলে না এলে শিক্ষকেরা কী করবে। তবে স্কুলে না এলেও পরীক্ষায় ঠিকই অংশগ্রহণ করে তারা। তবে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছি।’ 

কয়েকজনকে স্কুল কক্ষে  লুডু খেলতে দেখা যায়বিদ্যালয়ের সভাপতি মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আমার জানা নেই। আজকে পাঁচজন উপস্থিত হয়েছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, শুরুতে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করায়নি এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এমপিও যেহেতু হয়েছে, আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। শিক্ষকদের বলেছি স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ১৪ হাজার টাকা আছে, সেই টাকা দিয়ে টিন কিনে বারান্দা তৈরি করতে।’ 

নীলফামারী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনিয়ম হলে যাঁরা এমপিও দিতে পারেন, তাঁরা বাতিলও করতে পারেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোমাদের যে কিছু করিনি, তা-ই ভাগ্য—ডাকাতির সময় দুই কিশোরীকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা

গাজীপুরে সাংবাদিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

সাধুর বেশে এসে সাবেক স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

ইরানে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা জানত রাশিয়া, তেহরানে বিতর্ক তুঙ্গে

গাজীপুরে ইট দিয়ে সাংবাদিকের পা থেঁতলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত