Ajker Patrika

সেচের পানির দাবিতে খেতে কৃষকদের প্রতিবাদ

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বোরো ধান খেতে পানির দাবিতে ফসলি জমিতে মানববন্ধন করেছেন ৩৫–৪০ জন কৃষক। আজ রোববার দুপুরের উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের বাগপুর মৌজায় এ মানববন্ধন করেন তাঁরা। 

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কৃষকদের দাবি, তাঁরা বরেন্দ্র সেচের মাধ্যমে ওই মৌজায় প্রায় ৩০ দোনের (২২ শতকে ১ দোন) জমিতে সেচ দেন ৫০ থেকে ৬০ জন কৃষক। কিন্তু সেচ প্রকল্প বরেন্দ্রর দেখভালের দায়িত্বে থাকা অপারেটর শাহিনুর রহমান বিপ্লব ঠিকমতো তাদের ধান খেতে পানি দেন না। এ জন্য পানির অভাবে জমি ফেটে যাচ্ছে এবং মৌজাটিতে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তাদের ধান উৎপাদন কম হবে। 

মানববন্ধনে সাবুল মিয়া (৪৭) নামের এক কৃষক বলেন, ‘আমি ২২ শতকের জমিতে হাইব্রীড জাতের ধান লাগিয়েছি। এই ধান ১ শতকে প্রায় এক মণ করে হয়। পানি ঠিকমতো না দেওয়ায় তেমন ফলন হয়নি। এবারে শতকে ১৫–২০ কেজি হতে পারে। পানি অভাবে যে কয়টা ধানে চারা লাগাছি সেই কয়টায় আছে ভুল করিয়াও আর একটা চারা জন্মায় নাই।’ 

সাদ্দাম মিয়া (৩৫) নামের আর এক কৃষক বলেন, ‘এক দোন জমিতে পানি দেয়া ২ হাজার টাকা দেয়া হয়। কিন্তু সে ১০–১২ দিন পর পানি দেয়। এতে ধানে জমি ফাটি চৌচির হয়া গেইছে। আমাদের প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি আমরা যাতে ঠিকমতো আবাদ করতে পারি।’ 

রব্বানী নামের আরের কৃষক বলেন, ‘স্যার আমরা চাষাবাদ করি খাই। প্রতিবারে ধানের সময় এই বিপ্লব পানি দিবার সময় এ রকম করে। টাকাও আগে বুঝি নেয়। কিন্তু পানি ঠিকমতো দেয় না। যদি হামরা কৃষক মানুষ আবাদ-সুবাদ করিবার নাই পাই তাহইলে বউ-বাচ্চাক নিয়া কি খায়া থাকমো? এই অপারেটর এত খারাপ কারেন্ট থাকলেও পানি দিবার চায় না।’ 

এ বিষয়ে দায়িত্বে থাকা বরেন্দ্র সেচের অপারেটর শাহিনুর রহমান বিপ্লবের কাছে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমান বিদ্যুৎ ঠিকমতো থাকে না, আর যতই পানি দেই না কেন বর্তমান তাপপ্রবাহের কারণে জমিতে পানি থাকতেছে না। জমিতে পানি না থাকলে আমার করার কী আছে।’ 

বিদ্যুৎ সংকটের বিষয়ে গঙ্গাচড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মোহাম্মাদ আব্দুল জলিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমান দেশের যে অবস্থা মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সে তুলনায় আমাদের গঙ্গাচড়া অনেক ভালো আছে। আমরা কৃষিতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ বিতরণ করতেছি। আমাদের কৃষিতে বিদ্যুৎ বিতরণ নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকার কথা নয়। কোনো সেচ মালিক যদি এ ধরনের কথা বলে থাকে তাহলে তিনি মনগড়া কথা বলেছেন।’ 

সেচের অভাবে খেত ফেটে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকারংপুর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মশিউর রহমানের অফিসের সরকারি নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি শুধু সদস্য এগুলো আমাদের কাজ না। আমরা শুধু সমন্বয় করি। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ বা কৃষকেরা যদি আসে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত