Ajker Patrika

চার মাসেও ভাতা ফেরত পাননি ২৭০ প্রতিবন্ধী

  • ২৭০ জন প্রতিবন্ধীর ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা অন্য নম্বরে চলে গেছে
  • এক কর্মকর্তার ৩ নম্বরে গেছে প্রতিবন্ধীদের ৭ হাজার ৬৫০ টাকা
আশরাফুল আলম আপন বদরগঞ্জ (রংপুর)
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের পীরগঞ্জে ২৭০ জন প্রতিবন্ধীর ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। পরে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে জানাজানি হলে ওই টাকা আত্মসাতে ব্যর্থ হন জড়িত ব্যক্তিরা। তবে ঘটনার চার মাসেও ভাতাভোগীরা টাকা ফেরত পাননি বলে জানা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, তিন কর্মকর্তার জোগসাজশে ওই টাকা আত্মসাতে চেষ্টা করা হয়। এতে জড়িত সমাজসেবা অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন। পীরগঞ্জ উপজেলার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল নম্বরে প্রতিবন্ধীদের ৭ হাজার ৬৫০ টাকা যায়, তাঁকেই রাখা হয় তদন্ত কমিটিতে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাটিতে প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চতুর্থ কিস্তির এপ্রিল-জুন তিন মাসের প্রতিবন্ধী ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ-এর মাধ্যমে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ২ হাজার ৫৫০ টাকা করে দেওয়া হয়। অনেকের নম্বরে টাকা না যাওয়ায় হতাশ হয়ে যোগাযোগ করেন উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে। সেখান থেকে তাঁদের বলা হয়, হ্যাকারেরা টাকা তুলে নিয়েছে।

পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা প্রতিবন্ধীর টাকা ভুল নম্বরে যাওয়া তিনটি মোবাইল নম্বর নিয়ে জানতে পারেন ওই তিনটি নম্বর সদ্য বদলি হওয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে গত বছরের ১০ নভেম্বর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন সমাজসেবা অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় রংপুর হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিনকে। এতে সদস্য করা হয় তারাগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ্ মো. মাহমুদুল হক ও রংপুর শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমানকে। কমিটি তদন্ত করে ওই বছরের ১৪ নভেম্বর জেলায় প্রতিবেদন জমা দেয়।

উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রিপু মিয়া বলেন, ‘স্যারেরা কয় তোমার মোবাইল হ্যাক করে প্রতারকেরা টাকা তুলে নিয়েছে। এখন শুনছি, স্যারেরাই নাকি তাঁদের নম্বর দিয়ে টাকা তুলে নিয়েছেন।’ ওই এলাকার প্রতিবন্ধী বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘প্রথমে বলা হয়, তোমার পিন কোড অন্যরা জানার কারণে টাকা তুলে নিয়েছে। এখন কয় টাকা আছে, একটু ধৈর্য ধরেন, আপনার মোবাইলেও যাবে। কিন্তু টাকা আর আসছে না।’

সদ্য বদলি হওয়া আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমি আসার পর অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে আমার কোনো হাত নেই। আমি পাসওয়ার্ড দিয়ে এসেছি।’

সমাজসেবা অধিদপ্তরের রংপুরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, ওই ২৭০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর টাকা গচ্ছিত আছে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে তাঁরা সবাই টাকা পাবেন।’ তিনি বলেন, ‘ওই প্রতিবেদন হতে পেয়েছি। ওই উপজেলার ২৭০ জন প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা অন্যের নম্বরে গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কেবা কাহারা অফিসের সফটওয়্যারে ঢুকে ভুক্তভোগীদের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে অন্য মোবাইল নম্বর বসিয়ে দেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত