Ajker Patrika

ভেকু দিয়ে পাথর আনলোডে রেলপথের ১৫০ স্লিপার নষ্ট

প্রতিনিধি, নীলফামারী
ভেকু দিয়ে পাথর আনলোডে রেলপথের ১৫০ স্লিপার নষ্ট

কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে ওয়াগনের পণ্য খালাসের কাজ অব্যাহত রেখেছে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার। এতে স্টেশনের চলাচলের অনুপযোগী ৫ নম্বর লুপ লাইনের ১৫০টি কাঠের স্লিপার নষ্ট হয়েছে। রেলপথের ট্রাকের মাটি কেটে নেওয়ায় বেঁকে গেছে রেলপাত। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে পণ্য বোঝাই ওয়াগনগুলো বুধবার ট্রাকে নিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে আমদানি করা ৪২টি পাথরের ওয়াগন তিন দিন আগে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে এনে তা আনলোড করা হচ্ছে। চুক্তিভিত্তিক অদক্ষ শ্রমিকের মাধ্যমে দিন-রাত পাথর আনলোড করায় রেললাইন (ট্রাক) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাথরগুলো রেলপথের ওপর ফেলে দেওয়ার পর আমদানিকারকেরা রেলওয়ের নীতিমালার বহির্ভূত ভেকু মেশিন দিয়ে তা পণ্যবাহী ট্রাকে লোড করছেন। এতে রেলপথের পাশের মাটি কেটে নেওয়ায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ১৫০টি কাঠের স্লিপারের একাংশ ভেঙে গেছে। ফলে বেঁকে গেছে রেলপাত। লুপ লাইন থেকে ১০ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে পাথর আনলোডের নির্দেশ থাকলেও তা মানছে না রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার।

সৈয়দপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ সহ প্রকৌশলী সুলতান মৃধা জানান, স্টেশনের ৫ নম্বর লুপ লাইনটি পাথর আনলোড ও ভেকু ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হিসেবে গত এক সপ্তাহ আগেই পণ্য বোঝাই ওয়াগন প্রবেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়ে সৈয়দপুর স্টেশন মাস্টারকে অবগত করা হলেও তিনি ঝুঁকি নিয়ে পাথরের ওয়াগন ওই লুপ লাইনে প্রবেশ করছেন।

সুলতান মৃধা জানান, ১৮৭০ সালে নির্মিত এ রেলপথে চারটি ৬০ পাউন্ডের পয়েন্ট ক্রসিং রয়েছে। এতে ২৫ টনের হাইড্রোলিক ইঞ্জিন দিয়ে খালি ওয়াগন সান্টিং করা হতো। ১৫০ বছরের পুরোনো ওই সব পয়েন্টে এখন ১২৫ টনের ইঞ্জিন প্রবেশ করায় যে কোন মুহুর্তে লাইনচ্যুত হবে ইঞ্জিনসহ ওয়াগনগুলি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. শওকত আলী জানান, চলাচলের অনুপযোগী লুপ লাইনটিকে বালু ও ইটের টুকরো দিয়ে উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। তাই ওই রেলপথে পণ্যবাহী ওয়াগন প্রবেশ করানো নিয়ে কোন সমস্যা নেই। ভেকু দিয়ে পাথর লোডের বিষয়টি আমদানিকারকেরা করছেন। তবে ইটের টুকরো ও বালু দিয়ে রেলপথ সচল করা কি আদৌ সম্ভব এবং ভেকু ব্যবহার নিষিদ্ধ কি’না-এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সিদ্দিক তানজিলুর রহমান জানান, এ ধরনের অভিযোগে প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে রেলের ক্ষতি সাধনের বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছে। রাতের বেলায় ওয়াগনের পণ্য খালাস করার এখতিয়ার তাঁদের নেই। এখানে রেলের কোন ক্ষতি ও দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁর দায়ভার স্টেশন মাস্টারকেই বহন করতে হবে। তিনি জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত