Ajker Patrika

ঈদের ছুটি, কলকারখানা বন্ধ তবু কেন রংপুরে লোডশেডিং

শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৩, ১৩: ০২
ঈদের ছুটি, কলকারখানা বন্ধ তবু কেন রংপুরে লোডশেডিং

‘বাহে কারেন্ট ঈদ-তাওয়ার কিছু বুঝে না, সউগ সময় ডিস্টাব দেয়। অফিস আদালত কারখানা সউগ বন্ধ, তাও কেন এ্যালা কারেন্ট থাকোছে না। পনেরো বিশ মিনিট থাকলে, দেড় দুই ঘণ্টা থাকোছে না। মাস ফুরাইলে তো বিল দেওছে, টাকা দেউছি তাহইলে হামরা কারেন্ট কেন পাওছি না। দ্যাশত কি কারেন্টের আকাল নাগিল নাগি।’ 

ঈদের দ্বিতীয় দিনের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের তারাগঞ্জে উপজেলার ছুট মেনানগর গ্রামের কৃষক সোলেমান মিয়া। 

ঈদের দিন ও শুক্রবার (৩০ জুন) সারা দিন বাড়িতে আত্মীয়স্বজন আসা ও বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিং হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েন তিনি। তাই তাঁর প্রশ্ন—সারা দেশেই কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছে, কলকারখানা সবকিছু বন্ধ থাকার পরও কেন বিদ্যুতের এমন ঘনঘন যাওয়া-আসা? 

রংপুর শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার এবং তারাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে ইকরচালী বাজারের অবস্থান। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো বাজার ছিল অন্ধকারে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা চলছে। 

লোডশেডিং নিয়ে ওই বাজারে কথা হলে প্রামাণিকপাড়া গ্রামের দিনমজুর জরিবুল ইসলাম বলেন, ‘দ্যাওয়া নাগাইলেও কারেন্ট যায়, রইদ উঠালেইও কারেন্ট যায়। হামরা বাঁচমো কেমন করি। কারেন্ট খালি মিস্ছায়ানা (অল্প) সময় থাকে। না পাই ঠিক মতোন ফ্যানের বাতাস খাবার, না পাই রাইতো লাইট জ্বলার। খুব যন্ত্রণায় আছি এই কারেন্ট নিয়া।’ 

ঈদের সব কলকারখানা, অফিস-আদালত বন্ধ থাকার পরও গ্রামে লোডশেডিং বাড়ায় এমন আক্ষেপ শুধু কৃষক সোলেমান মিয়া ও দিনমজুর জরিবুল ইলামেরই নয়; গ্রামের প্রত্যেক গ্রাহকের। 

তবে পল্লী বিদ্যুতের দাবি, ঈদ উপলক্ষ্যে গ্রাহক পর্যায়ে কোনো লোডশেডিং নেই। ১৮ মেগাওয়াট সরবরাহ রয়েছে। বৃষ্টিবাদলের কারণে ট্রান্সফরমার জ্বলে যাওয়া ও বৈদ্যুতিক তারে সমস্যার কারণে লাইন বন্ধ রাখতে হয়। 

নারায়ণগঞ্জ গ্রামের গৃহবধূ বুলিমাই বলেন, ‘আইজ (শুক্রবার) সকালে দ্যাওয়া নাগাইতে কালায় কারেন্ট চলি গেইছে। আলছে আছরের আজাইনের সময়। আধা ঘণ্টা থাকি ফির চলি গেইছে। এই বছর কারেন্টের খুব সমস্যা হইছে। বছরখান যাওছে সারা দিনে অর্ধেক বেলাও কারেন্ট পাই না। দ্যাওয়ার পানি আইলে তো কারেন্ট ঘুম পাড়ে!’ 

ওই গ্রামের আরেক গৃহবধূ সায়মনা বেগম বলেন, ‘মিটার নাগাছি খালি ফাও টাকা দিবার তকনে। ওই আগের মোতন তো এ্যালাও ন্যাম্পো জ্বলাওছি, হাতপাখা দিয়া বাতাস খাওছি। কারেন্ট থাকি কোনো লাভ হওছে না। বছর বছর খালি কারেন্টের দাম বাড়াওছে, সারা দিন সরকার কারেন্ট দিবার পারোছে না।’ 

রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর তারাগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মনোয়ার হোসেন সুমন বলেন, ‘বর্তমান ঈদ উপলক্ষে শহর-গ্রাম সবখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক আছে। তবে বৃষ্টি-বাদলের কারণে সমস্যা হওয়ায় হয়তো কোনো কোনো এলাকায় লোডশেডিং সাময়িক দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে চাহিদা ও সরবরাহ ১৮ মেগাওয়াট। তবে যখন লোডশেডিং হয়, তখন ১৮ মেগাওয়াটের জায়গায় ৫ থেকে ৬ মেগাওয়াট বরাদ্দ পাওয়া যায়। তাই আমরা সরবরাহ করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত