Ajker Patrika

সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সংকট, রোগী জিম্মি বেসরকারিতে

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের সিন্ডিকেটের দাপটে এক যুগের বেশি সময় ধরে ন্যূনতম অ্যাম্বুলেস সেবা পাচ্ছে না এ জেলার বাসিন্দারা। জেলার ৩৫ লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র এটি। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায়ীরা। সরকারি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের সংকট থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে রোগীরা।

এই অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স সেবার চরম সংকট নিয়ে বিপাকে পড়ছে সেবাগ্রহীতারা। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবার সংস্কার দাবি করছে তারা। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার জন্য চালকের সংকটকে দায়ী করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে দুটি অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ থাকলেও চালক মাত্র একজন। কয়েক দফায় চালক ও অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠালেও কোনো কাজ হয়নি। ফলে রোগী পরিবহনে কাজ করছেন মাত্র একজন চালক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৫০ শয্যার গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক ও অবকাঠামোর সংকটের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য গুরুতর রোগীকে প্রতিনিয়ত রেফার করা হয় রংপুর, বগুড়া, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সংকটে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগী ও তাদের স্বজনদের। এ দিকে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ব্যক্তি ফিটনেসবিহীন মাইক্রোবাসকে মডিফাই করে তৈরি করেছে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স। এসব অ্যাম্বুলেন্সে নেই প্রশিক্ষিত নার্স ও চিকিৎসক। নেই জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ। সংকটাপন্ন রোগীর জীবন বাঁচানোর তাগিদে সমস্যায় জর্জরিত এসব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে সেবাগ্রহীতারা। এসব অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ায় অতিরিক্ত খরচও গুনতে হচ্ছে তাঁদের।

রোগীর স্বজনদের দাবি, হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা তলানিতে থাকার সুযোগে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সচালক প্রতিদিন রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। হাসপাতালের একটি সিন্ডিকেট প্রতি মাসে মাসোহারা পেয়ে থাকে, তাই সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সংকট জিইয়ে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। তাঁরা বলেন, সঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্স সেবা না পেয়ে প্রাণ হারানোর ঝুঁকিও বাড়ছে।

ফুলছড়ি চর সিদাইয়ের বাসিন্দা লুৎফর আলী বলেন, ‘আমার ৭০ বছর বয়সী মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাই দুদিন আগে। অবস্থা ভালো না হওয়ায় চিকিৎসকেরা জরুরিভাবে রংপুরে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে গলাকাটা ভাড়ায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিতে হচ্ছে।’

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আসিফ রহমান বলেন, জেলার এই বৃহত্তর চিকিৎসালয়ে দুটি অ্যাম্বুলেন্স আছে। কিন্তু ড্রাইভার মাত্র একজন। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ও চালক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি দ্রুত সমাধানে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে কি না, তা আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেনকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত