রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
‘মোক কামোত নিয়া যান স্যার। বাড়িত মা, বউ ও ছোট তিনখান ব্যাটা-বেটি। বুড়া মায়ের ওষুধ কিনির টাকা নাই। দুই দিন থাকি কোনো কাম পাও নাই। দুইবেলা কোনোমতে আলু ভর্তা দিয়া ভাত খাছি। এক মুদি দোকান থাকি বাকিত চাল কিনি আনছো। দোকান অয়ালা কইছে টাকা না দিলে বাকিত কিছু দিবে না। আইজ কাম না পাইলে চুলা জ্বলিবে না।’
নীলফামারীর সৈয়দপুরে শ্রমের হাটে শ্রমিক নিতে আসা মালিকের উদ্দেশ্যে এমন আকুতি করেন শহরের গোলাহাট এলাকার ইলিয়াস হোসেন (৪৫) নামে এক দিনমজুরের। কথাগুলো বলার সময় চোখ ছলছল করছিল তাঁর।
ইলিয়াস শুধু একাই নন। তাঁর মতো কাজের আশায় কাঁক ডাকা ভোর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জড়ো হন শত শত দিনমজুর। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও কাজের দেখা মিলছে না অনেকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের স্মৃতি অম্লান চত্বর, শেরে বাংলা সড়কের চৌধুরী টাওয়ার ও স্টেশনের সামনে বসে শ্রমের হাট। শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকেরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের আশায় এখানে ভিড় করেন। এখানে আসার আগেও তাঁরা জানেন না কাজ মিলবে কিনা।
ইট ভাঙা, নির্মাণকাজ, রাজমিস্ত্রি, টাইলস মিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ট্রাকে মালামাল ওঠানো ও খালাস, বস্তা টানা, মাটি কাটা, নালা পরিষ্কারসহ নানা কাজ করেন তাঁরা। কাজ না পেলে কারও ঘরে তিন বেলা ভাত জুটবে না; এ কারণে কাজের জন্য শ্রমিকদের ব্যাকুলতার শেষ নেই। বর্তমানে কাজ কম থাকায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে শ্রম বিক্রি করছেন হাটে আসা শ্রমিকেরা। তবুও কেউ কাজ পান, আবার অধিকাংশই কাজ না পেয়ে ফিরে যান বাড়ি। প্রতিদিন এসব হাটে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ শ্রমিক আসেন। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ জন কাজ পেলেও বাকিরা ফিরে যান।
বুধবার চৌধুরী টাওয়ারের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ব আকাশে তখনো সূর্যের আলোর দেখা নেই। কিন্তু উপকরণ নিয়ে কাজের সন্ধানে জড়ো হচ্ছেন মানুষ। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কামলার হাটে অবস্থান করে দেখা গেছে শ্রম বিক্রি করতে আসা মানুষের হাহাকারের চিত্র। এক দিনের কামলা যাওয়ার জন্য কত যে ব্যাকুলতা সেখানে না দাঁড়ালে উপলব্ধি করা যাবে না।
রঙের খালি কৌটার ওপর বসে নিয়োগকারী ঠিকাদারের অপেক্ষা করছিলেন খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া থেকে আসা দিনমজুর হাসান আলী। সামনে বড় আকারের আরেকটি রঙের খালি কৌটায় বিভিন্ন আকারের ব্রাশ, সিরিশ কাগজ ও অন্য রং-সরঞ্জাম। তাঁর পাশেই সারি দিয়ে বসে ছিলেন আরও কয়েকজন রং মিস্ত্রি।
হাসান আলী বলেন, ‘আগে কাজের অভাব ছিল না। কিন্তু করোনার পর থেকেই একদিন আছে তো অন্যদিন কাজ নেই। কাজ না থাকলে এক মুঠো চাল কেনার উপায় থাকে না। সেদিন অনাহারেই দিন কাটে পরিবারের। এভাবে চলতে থাকলে আমরা বাঁচাব কীভাবে?’
কাজের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা নারী শ্রমিক আরজিনা বেগম বলেন, ‘কাজ না পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তিরও উপায় নেই। কারণ মানুষ বলে সুস্থ হয়ে তুমি ভিক্ষা কর কেন? দিন দিন উপায় হারা হয়ে যাচ্ছি আমরা। আমাদের দিকে নজর দেওয়ার কেউ নাই।’
দিনমজুর সরবরাহকারী ঠিকাদার মিজানুর রহমান বলেন, মজুরদের আগের মতো কাজে নেওয়ার সুযোগ নেই। এখানকার অধিকাংশ শ্রমিকই নির্মাণকাজ করেন। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া এখন আগের মতো আর বহুতল ভবন কিংবা বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে না। কম টাকা মজুরিতেও কাজ নেই। এতে অনেক কষ্টে কাটছে দিনমজুরদের জীবন।
সৈয়দপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জিকরুল হক বলেন, একদিকে কাজের অভাব অন্যদিকে পরিবারের চাহিদা। এসব বিষয় সরকার ও সমাজের দায়িত্বশীল মানুষের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। সঙ্গে সমস্যা সমাধানে দ্রুত কাজ করা উচিত। তাঁদরে যোগ্যতা অনুসারে কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। তা না হলে এই সমস্যা এক সময় মহামারি আকার ধারণ করবে।
‘মোক কামোত নিয়া যান স্যার। বাড়িত মা, বউ ও ছোট তিনখান ব্যাটা-বেটি। বুড়া মায়ের ওষুধ কিনির টাকা নাই। দুই দিন থাকি কোনো কাম পাও নাই। দুইবেলা কোনোমতে আলু ভর্তা দিয়া ভাত খাছি। এক মুদি দোকান থাকি বাকিত চাল কিনি আনছো। দোকান অয়ালা কইছে টাকা না দিলে বাকিত কিছু দিবে না। আইজ কাম না পাইলে চুলা জ্বলিবে না।’
নীলফামারীর সৈয়দপুরে শ্রমের হাটে শ্রমিক নিতে আসা মালিকের উদ্দেশ্যে এমন আকুতি করেন শহরের গোলাহাট এলাকার ইলিয়াস হোসেন (৪৫) নামে এক দিনমজুরের। কথাগুলো বলার সময় চোখ ছলছল করছিল তাঁর।
ইলিয়াস শুধু একাই নন। তাঁর মতো কাজের আশায় কাঁক ডাকা ভোর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জড়ো হন শত শত দিনমজুর। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও কাজের দেখা মিলছে না অনেকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের স্মৃতি অম্লান চত্বর, শেরে বাংলা সড়কের চৌধুরী টাওয়ার ও স্টেশনের সামনে বসে শ্রমের হাট। শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকেরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের আশায় এখানে ভিড় করেন। এখানে আসার আগেও তাঁরা জানেন না কাজ মিলবে কিনা।
ইট ভাঙা, নির্মাণকাজ, রাজমিস্ত্রি, টাইলস মিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ট্রাকে মালামাল ওঠানো ও খালাস, বস্তা টানা, মাটি কাটা, নালা পরিষ্কারসহ নানা কাজ করেন তাঁরা। কাজ না পেলে কারও ঘরে তিন বেলা ভাত জুটবে না; এ কারণে কাজের জন্য শ্রমিকদের ব্যাকুলতার শেষ নেই। বর্তমানে কাজ কম থাকায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে শ্রম বিক্রি করছেন হাটে আসা শ্রমিকেরা। তবুও কেউ কাজ পান, আবার অধিকাংশই কাজ না পেয়ে ফিরে যান বাড়ি। প্রতিদিন এসব হাটে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ শ্রমিক আসেন। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ জন কাজ পেলেও বাকিরা ফিরে যান।
বুধবার চৌধুরী টাওয়ারের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ব আকাশে তখনো সূর্যের আলোর দেখা নেই। কিন্তু উপকরণ নিয়ে কাজের সন্ধানে জড়ো হচ্ছেন মানুষ। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কামলার হাটে অবস্থান করে দেখা গেছে শ্রম বিক্রি করতে আসা মানুষের হাহাকারের চিত্র। এক দিনের কামলা যাওয়ার জন্য কত যে ব্যাকুলতা সেখানে না দাঁড়ালে উপলব্ধি করা যাবে না।
রঙের খালি কৌটার ওপর বসে নিয়োগকারী ঠিকাদারের অপেক্ষা করছিলেন খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া থেকে আসা দিনমজুর হাসান আলী। সামনে বড় আকারের আরেকটি রঙের খালি কৌটায় বিভিন্ন আকারের ব্রাশ, সিরিশ কাগজ ও অন্য রং-সরঞ্জাম। তাঁর পাশেই সারি দিয়ে বসে ছিলেন আরও কয়েকজন রং মিস্ত্রি।
হাসান আলী বলেন, ‘আগে কাজের অভাব ছিল না। কিন্তু করোনার পর থেকেই একদিন আছে তো অন্যদিন কাজ নেই। কাজ না থাকলে এক মুঠো চাল কেনার উপায় থাকে না। সেদিন অনাহারেই দিন কাটে পরিবারের। এভাবে চলতে থাকলে আমরা বাঁচাব কীভাবে?’
কাজের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা নারী শ্রমিক আরজিনা বেগম বলেন, ‘কাজ না পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তিরও উপায় নেই। কারণ মানুষ বলে সুস্থ হয়ে তুমি ভিক্ষা কর কেন? দিন দিন উপায় হারা হয়ে যাচ্ছি আমরা। আমাদের দিকে নজর দেওয়ার কেউ নাই।’
দিনমজুর সরবরাহকারী ঠিকাদার মিজানুর রহমান বলেন, মজুরদের আগের মতো কাজে নেওয়ার সুযোগ নেই। এখানকার অধিকাংশ শ্রমিকই নির্মাণকাজ করেন। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া এখন আগের মতো আর বহুতল ভবন কিংবা বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে না। কম টাকা মজুরিতেও কাজ নেই। এতে অনেক কষ্টে কাটছে দিনমজুরদের জীবন।
সৈয়দপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জিকরুল হক বলেন, একদিকে কাজের অভাব অন্যদিকে পরিবারের চাহিদা। এসব বিষয় সরকার ও সমাজের দায়িত্বশীল মানুষের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। সঙ্গে সমস্যা সমাধানে দ্রুত কাজ করা উচিত। তাঁদরে যোগ্যতা অনুসারে কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। তা না হলে এই সমস্যা এক সময় মহামারি আকার ধারণ করবে।
মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদান, শিক্ষার্থীদের ফি কমানো, ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতায় আনাসহ নয় দফা দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
৯ মিনিট আগেনাটোরের সিংড়ায় ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে প্রবেশের সময় এক ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে। আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার ১০ নম্বর চৌগ্রাম ইউনিয়নের চৌগ্রাম পারুহারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
১৪ মিনিট আগেপৃথক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনশনরত ৯ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। তাঁদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখব
২২ মিনিট আগেচট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে থানার পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, চরলক্ষ্যা নিমতলা এলাকার ইদ্রিস সওদাগরের ছেলে আলমগীর বাদশা (৪২) এবং শিকলবাহা ইউনিয়নের...
৩৪ মিনিট আগে