Ajker Patrika

উত্তরে বাড়ছে শীত ও ঘন কুয়াশা, দিনের বেলায় লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন

শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪: ৩১
উত্তরে বাড়ছে শীত ও ঘন কুয়াশা, দিনের বেলায় লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ সব সময় একটু বেশি থাকে। পৌষের আগেই এই জনপদে এবার বাড়তে শুরু করেছে শীত। দুই দিন ধরে ঘন কুয়াশায় দুপুর পর্যন্ত আচ্ছন্ন থাকছে। দিনের বেলায়ও লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে দূরপাল্লার যানবাহন। শীতের প্রকোপ বাড়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে শ্রমজীবী ও দরিদ্র পরিবারে মানুষের।

আজ রোববার রংপুর বিভাগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই-এক দিনে এই তাপমাত্রা আরও কমবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রংপুরের হাজীরহাট বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ভ্যানচালক জিন্নুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাউ শীত আসি গেইছে। দুইডা জাম্বার গাওত দিছু, তাও হেব্বি শীত নাগোছে। এবার কুয়াশা বেশি। সকাল থাকি দুপুর, বিকাল থাকি রাইত কুয়াশাতে ঢাকা থাকেছে সড়ক। ভ্যানের লাইট জ্বলে চালচল করির নাগোছে।’

ভ্যানে থাকা যাত্রী বেলতলী এলাকার বাসিন্দা নুর জাহান বেগম বলেন, ‘এবারের শীতে খালি মাথাত ধরে। হিম বাতাস শরীর ফোড়ে ঢোকোছে।’

দুই দিন ধরে শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। তা বোঝা গেল পাগলাপীর বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী দুলাল হোসেনের কথা শুনে। দুলাল হোসেন জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বেচাকেনা হয় ৩ হাজার টাকা। কিন্তু দুই দিন ধরে এই সময়ে সর্বোচ্চ বিক্রি তাঁর দেড় হাজার টাকা। শীতের কারণে মানুষ না আসায় তাঁর বেচা-বিক্রিতে এমন ভাটা পড়েছে।

ঘন কুয়াশার মধ্যে সবজি নিয়ে বের হয়েছেন এক ব্যক্তিপাগলাপীরের পরেই তারাগঞ্জের বামনদীঘি গ্রাম। গ্রামের পাশের মাঠে মহাসড়কের পাশে তামাকখেতে কাজ করছিলেন ওই গ্রামের ৩০ বছরের কৃষক সামছুল আলম। তিনি বলেন, ‘সকালে আসছু তাংকু খেতোত নাঙল টানির। এত শীত যে হাত-পাও কোঁকড়া নাগোছে। খড়কুটাত আগুন নাগে গাও তাপানু। তাও বেলা উঠোছে না। ঠান্ডা নাগায় এ্যালা বাড়ির পথ ধরছু।’

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ইকরচালী বাজারে কথা হলে হানিফ পরিবহনের বাসের চালক (৫০) এনামুলক হক বলেন, ‘শীত কুয়াশা বাড়ছে, দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালাই গাড়ি চালাই। রংপুর ছেড়ে উত্তরের যত যাই, ততই শীত কুয়াশা বেশি। সব গাড়িই এখন দিনের বেলাও হেডলাইট জ্বালাই চলছে। সকাল-সন্ধ্যা এত বেশি কুয়াশা যে গাড়ির গতি অনেক কমিয়ে চলতে হয় এ অঞ্চলে।’

ইকরচালী বাজারে কথা হয় পোদ্দারপাড়া গ্রামের গৃহবধূ রওশন আরার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পৌষ-মাঘ মাস এ্যালাও আইসে নাই। তাতে ঝরির মতো রাইতোত শীত-কুয়াশা পড়ে। এবার বৃষ্টি কম হইছে। শীততে হামার মতন গরিব মানুষের যান বেড়ে যাইবে।’

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোববার রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রংপুরে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা দু-এক দিনের মধ্যে আরও কমতে পারে। এখন বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত