Ajker Patrika

সৌদি আরবের আজওয়া খেজুর চাষ হচ্ছে গোবিন্দগঞ্জে

মোমেনুর রশিদ সাগর, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) 
আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, ১৫: ৩৩
সৌদি আরবের আজওয়া খেজুর চাষ হচ্ছে গোবিন্দগঞ্জে

মরুর দেশ সৌদি আরবের বিখ্যাত আজওয়া খেজুর চাষ হচ্ছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। গাইবান্ধা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ছয়ঘড়িয়া গ্রামে এই খেজুরের চাষ হচ্ছে। 

আজওয়া ছাড়াও মরিয়ম, খোরমা, বরই, বারিহীসহ নানা জাতের খেজুরের চাষ করছেন ওই গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৫০) নামের এক কৃষক। স্ত্রীর নামে বাগানের নাম দিয়েছেন ‘নার্গিস নার্সারি’। জাহিদুলের দাবি, রংপুর বিভাগে তিনিই প্রথম এই খেজুর চাষ করছেন। 

শুধু খেজুরই নয়, এই কৃষকের বাগানে চাষ হচ্ছে বিশ্বখ্যাত জাপানি মিয়াজাকি বা সূর্য ডিম কিং অব চাকাপাত, চাইনিজ চ্যাংমাই, আমেরিকান পালমার, ব্রুনাইয়ের ব্রুনাই কিংসহ নানা প্রজাতির আম।

এই দম্পতির সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার অনেকে এই পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে তাঁর গ্রামটি এখন নার্সারি গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এলাকার শতাধিক বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্রায় অর্ধশত নার্সারি। এতে হাজারো নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। 

জাহিদুলের বাগানে সৌদি খেজুর আর জাপানি আম দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করছে মানুষ। কেউ আসছেন বাগান দেখতে, আবার কেউ আম বা খেজুর কিনতে। 

জাহিদুল বলেন, আড়াই যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি নানা প্রকার ফলের চারা ও ফল উৎপাদন করে আসছেন। ১০ বছর আগে বাজার থেকে কিনে আনা সৌদি আরবের খেজুর খেয়ে সেই বীজ সংরক্ষণ করেন। পরে সৌদি আরবে পবিত্র হজে গিয়ে খেজুরের চারা সংগ্রহ করে দেশে ফিরে তিন বিঘা জমিতে খেজুরের চাষ শুরু করেন। 

তিনি জানান, শুরুটা ছিল ২০ শতক জমিতে বিভিন্ন জাতের ২০-২৫টি চারা দিয়ে। বর্তমানে তাঁর বাগানের পরিধি ছয় একর ছাড়িয়েছে। বিস্তীর্ণ এই জমিতে ২৪৯টি খেজুরগাছ রয়েছে। এ ছাড়া আমসহ ছোট-বড় সব মিলিয়ে বাগানে নানা জাতের ২ হাজারেও বেশি ফলের গাছ ও চারা রয়েছে। 

জাহিদুল জানান, সাধারণত মাঘ মাস থেকে খেজুরগাছে মুকুল আসতে শুরু করে। চৈত্র মাস পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। এ বছর তাঁর রোপিত গাছগুলোতে সন্তোষজনক পরিমাণে খেজুর ধরেছে। 

জাহিদুলের বাগানে খেজুর ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছএই কৃষক বলেন, শুরুতে বিশেষ পদ্ধতিতে বস্তার বেডে লাগানো চারাগুলোতে দীর্ঘ নয় বছরেও ফুল আসেনি। এরপর গত বছর তিনি ২৫০টি চারা তুলে মাটিতে নতুন করে রোপণ করেন। এরপর গাছগুলোতে ফুল-ফল আসা শুরু করে। পাশাপাশি প্রায় সব গাছের গোড়া থেকেই একাধিক পার্শ্ব চারা বের হয়। 

জাহিদুল বলেন, ‘বর্তমানে পার্শ্ব চারাগুলো বিক্রির জন্য প্রস্তুত হয়েছে। আমি আশাবাদী, বীজের চারার চেয়ে এসব পার্শ্ব চারায় নিশ্চিতভাবে আরও বেশি খেজুর ফলবে।’ এসব চারা ও ফল বিক্রি করে প্রতিবছর ১০-১২ লাখ টাকা আয় করছেন বলে জানান জাহিদুল। 

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘জাহিদুল ইসলাম একজন সফল ও আদর্শ চাষি। তিনি নানাবিধ ফলের পাশাপাশি বিদেশি খেজুর ও আম চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তাঁর সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার অনেকেই নার্সারি পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত