Ajker Patrika

গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে কর্মস্থলে বৃদ্ধের আত্মহত্যা 

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে কর্মস্থলে বৃদ্ধের আত্মহত্যা 

নাটোরের গুরুদাসপুরে দানাদার কীটনাশক সেবন করে হজরত আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ কর্মস্থলে আত্মহত্যা করেছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে লিখে ছিল, ‘সাইফুল হাজী আমাকে বাঁচতে দিলনা’। 

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্থানীয় সাইফুল ইসলামের গদি ঘরে তিনি আত্মহত্যা করেন। আজ শনিবার মাগরিবের নামাজের পর তাঁর দাফন সম্পন্ন। 

হজরত আলী উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের মৃত কলি প্রামানিকের ছেলে। তিনি উপজেলার পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজারের ধান-চাল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ও তাঁর পার্টনার আসাদ আলীর ম্যানেজার ছিলেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাইফুল ইসলামের গদি ঘরে তিনি দানাদার কীটনাশক সেবন করেন। এ সময় সেখানে বমি করেন তিনি। এ অবস্থায় তাঁকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। এ ঘটনায় গুরুদাসপুর থানা-পুলিশ হজরত আলীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান। 

ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মে ঠাকুরগাঁও জেলার শিবগঞ্জ এলাকা থেকে ৯ লাখ টাকার চাল কিনে বাড়ি ফেরার পথে বগুড়ার শাহজাহানপুর এলাকায় গভীর রাতে হজরত আলীকে ট্রাক ড্রাইভার ও তাঁর সহকারীরা মারধর করে ট্রাক থেকে ফেলে দেন। এ ঘটনায় শাহজাহানপুর থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় চাল উদ্ধারের জন্য হজরত আলী তার মহাজনের সঙ্গে চেষ্টা তদবির করে চাল উদ্ধারে ব্যর্থ হন। 

হজরত আলী মৃত্যুর আগে তাঁর সাবেক মহাজন আয়নাল হক তালুকদারের কাছে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। চিরকুটে প্রথমেই লেখা ছিল ‘বেটা সাইফুল হাজী আমাকে চোর কয়, গালাগালি করে আমাকে চর মারে। আমি তার ক্ষতি করিনি, আমাকে বাঁচতে দিলনা।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে বলেন, চাপ সইতে না পেরে হজরত আলী আত্মহত্যা করেছেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার ৯ লাখ টাকার চাল হারিয়ে গেছে। আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি তাঁকে বকাবকি করেছি তবে তাঁকে চোর বলি নাই।’ 

মৃত হজরত আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাবা দানাদার কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার বাবার মহাজন সাইফুল ইসলামের গদি ঘরে কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা করার আগে একটি চিরকুট লিখে রেখে গেছেন যেটি থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এখনো কোনো মামলা করিনি। দাফনের সম্পন্ন হয়েছে। মুরুব্বিদের সঙ্গে আলাপ করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত