Ajker Patrika

সংসারের হাল ধরার সামর্থ্য নেই 'খোয়াজ খাঁর' 

প্রতিনিধি
সংসারের হাল ধরার সামর্থ্য নেই 'খোয়াজ খাঁর' 

ভাঙ্গুড়া (পাবনা): খোয়াজ খাঁর বয়স ১০০ বছরেরও বেশি। বার্ধক্যের কারণে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁর শরীরে। কানে শুনতে পান না ঠিকমতো। চোখেও তেমন ভালো দেখেন না। লাঠিভর দিয়ে চলাফেরা করতে হয় তাঁকে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলের উপার্জনে স্ত্রী, পরিজন নিয়ে কোনোমতো চলছিল তাঁদের দিন। প্রায় এক বছর আগে হঠাৎ মারা যান ছেলে হাসিনুর রহমান। সেই থেকে তাঁদের সংসারে অভাব জেঁকে বসেছে। লোকলজ্জার ভয়ে কারও কাছে হাত পাততেও পারেন না তিনি। বৃদ্ধ খোয়াজ খাঁর সামর্থ্য নেই এই বয়সে কোন কাজ করে সংসারের হাল ধরা। 

বয়োবৃদ্ধ খোয়াজ খাঁ পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরশহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সারুটিয়া মহল্লার বাসিন্দা। পরিবারের সদস্য বলতে এখন তিনি ও তাঁর বৃদ্ধ স্ত্রী হাজেরা খাতুন। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই। ছেলের মৃত্যুর পর পুত্রবধূ সাবিনা খাতুনের সঙ্গে থাকলেও বর্তমানে শ্বশুর-শাশুড়ির থেকে আলাদা থাকেন তিনি। 

কথা হয় বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া খোয়াজ খাঁর সঙ্গে। কষ্টের কথাগুলো বলতেই তাঁর দু'চোখ জলে ভরে যায়। এখনো তিনি ভুলতে পারেননি একমাত্র ছেলে হাসিনুরকে। একদিকে সন্তানের বিয়োগব্যথা আর অন্যদিকে দু'মুঠো খাবার জোগাড় করার চিন্তায় দিশেহারা এ মানুষটি। 

খোয়াজ খাঁ বলেন, আগে তিনি ভাঙ্গুড়া হাইস্কুলে নাইটগার্ডের চাকরি করতেন। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় ভালোভাবে চলতে ফিরতে পারেন না। 

তিনি আফসোস করে বলেন, ছেলে হাসিনুর বেঁচে থাকতে আমাকে কানে শোনার মেশিন (হেয়ার এইড) কিনে দিয়েছিল। এখন কেউ দেয় না। একটা মেশিন না থাকায় কানে শুনতে পাই না। 

বৃদ্ধার স্ত্রী হাজেরা খাতুন বলেন, সংসারে তাঁদের আয়ের কোন মানুষ নেই। বয়স্কভাতার যে টাকা পান তা দিয়ে সংসার চলে না। ছেলে বেঁচে থাকতে ভ্যানগাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতো। ছেলের মৃত্যুর পর মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে চলছি। হাসিনুরের আব্বার বয়স এখন ১০০ বছরেরও বেশি। সে নিজে ঠিকমতো চলাফেরাই করতে পারে না, কাজ করবে কীভাবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত