Ajker Patrika

আ.লীগ-জামায়াতের ২৩ জন বগুড়া ছাত্রদলের কমিটিতে, অভিযোগ পদবঞ্চিতদের

বগুড়া প্রতিনিধি
আ.লীগ-জামায়াতের ২৩ জন বগুড়া ছাত্রদলের কমিটিতে, অভিযোগ পদবঞ্চিতদের

বগুড়ায় সদ্যঘোষিত ছাত্রদলের তিনটি কমিটিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং জামায়াত ঘরানার মোট ২৩ জনকে অর্থের বিনিময়ে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে জেলা ছাত্রদলে ১৮ জন, শহর ছাত্রদলে তিনজন ও সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রদলে দুজন রয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। তাঁরা এ বিষয়ে জেলা বিএনপির মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেযারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা গেছে, ৪ জুন বগুড়া জেলা ছাত্রদলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬৮টি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরদিন ৫ জুন পদবঞ্চিত বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী শহীদ খোকন পার্কে আমরণ অনশন শুরু করেন। সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির নেতারা সেখানে গিয়ে আলোচনা করে তাঁদের অনশন ভাঙিয়ে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যান। এরপর গতকাল মঙ্গলবার পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের পক্ষে নাছিরুজ্জামান মামুন, আলমগীর হোসেন, শাহরিয়ার পারভেজ শাকিল ও রুবেল মিয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ জেলা বিএনপির সভাপতির কাছে জমা দেন। লিখিত অভিযোগে তাঁরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছি। হামলা, মামলা, নির্যাতন এমনকি গুলিবিদ্ধও হয়েছি। অথচ সদ্যঘোষিত জেলা ছাত্রদল কমিটিতে অনেককেই অর্থের বিনিময়ে পদায়ন করা হয়েছে। যারা অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিল, জামায়াত-শিবির ঘরানা থেকে এসেছে এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দলে যোগ দিয়েছে।’

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘বগুড়া জেলা ছাত্রদলের কমিটি সারা দেশে মডেল হওয়ার কথা। কিন্তু সদ্যঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আওয়ামী লীগের দোসর, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী ও হাইব্রিডদের স্থান দেওয়া হয়েছে।’ এতে বগুড়া জেলা ছাত্রদলে ১৮ জন, শহর ছাত্রদলে তিনজন, সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রদলে দুজনসহ মোট ২৩ জনের বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।

অভিযোগে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে নাছিরুজ্জামান মামুন বলেন, ‘গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলন করতে গিয়ে আমার নামে তিনটি মামলা হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালে আন্দোলন করতে গিয়ে দুটি মামলা হয়। আমি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলাম। আশা করেছিলাম পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আমাকে সহসভাপতি করা হবে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটির ১৩১ জনের মধ্যে আমাকে স্থান দেওয়া হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন করতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন আলমগীর হোসেন, ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শাহরিয়ার পারভেজ শাকিল। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের মারধরে তাঁর দাঁত ভেঙে যায়। রুবেল মিয়ার নামে একাধিক মামলা। তাঁদেরও কোনো কমিটিতেই স্থান দেওয়া হয়নি। এ কারণে কমিটি ঘোষণার পরদিন আমরা অনশন শুরু করি। সন্ধ্যায় জেলা বিএনপি নেতারা এসে বিষয়টি তাঁরা দেখবেন বলে আশ্বস্ত করে আমাদের অনশন ভাঙিয়ে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যান। আমরা কমিটি ভেঙে দিয়ে ত্যাগী ও বঞ্চিতদের সমন্বয়ে নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবি জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছি।’

বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এম আর হাসান পলাশ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘কমিটি ছোট করার নির্দেশনা ছিল, যার কারণে অনেকের নাম বাদ পড়ে গেছে। আলোচনার মাধ্যমে পদবঞ্চিতদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। কিন্তু পদ না পেয়ে তাঁরা যা করছেন, তাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত