আসাদ সরকার
রোজ তাঁর সকাল শুরু হয় মাঠের ঘাস কেটে। একটু বেলা হলেই নিজের রিকশাভ্যানটা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পথে। কখনো মানুষ, কখনো মালপত্র টানেন।
তবে মালপত্রের চেয়ে মানুষ পেলেই বেশি খুশি হন তিনি। মেঠো পথ ধরে যখন ভ্যান চলে, যাত্রীকে গলা ছেড়ে গান শোনান, মানবেন্দ্রর গান ‘…কেন কাঁদে পরান কী বেদনায় কারে কহি’। সওয়ারি মুগ্ধ হয়ে গান শোনে। নীরবে চোখের জল ফেলে।
গান শুনে কেউ যখন দুই চোখ বন্ধ করে, তার সামনে এসে দাঁড়ান মরমি গায়ক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। সেই কণ্ঠ, সেই উচ্চারণ। শুধু চোখ খুলতেই ভাঙা চোয়ালের অসহায় এক দরিদ্র ভ্যানচালক।
কিছুদিন আগে সেই ভ্যানচালক গায়কের সঙ্গে দেখা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামে। নাম রেজাউল করিম। তিন সন্তানের বাবা। সম্পদ বলতে শুধু বাড়ির ভিটে আর গানের গলা। দারিদ্র্য তাঁকে লেখাপড়া শিখতে দেয়নি। কারও কাছে গান শিখবেন, তা–ও ভাগ্যে জোটেনি। যা শিখেছেন নিজের চেষ্টায়। ১৩ বছর বয়সে তিনি সংসারের হাল ধরেন। বাবা গ্রামে যাত্রাপালা করতেন। সেই সুবাদে তিনিও একআনির (শিশুশিল্পী) চরিত্রে অভিনয় করতেন। কখনো বাবার সঙ্গে, কখনো একাই গলা মিলিয়ে যাত্রাপালার গান ধরতেন। নায়ক না, নায়িকার গান। বাবার মৃত্যুর পর সেই গাওয়ার নেশাটাকে পেশা করে পরিবারকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হয়নি। যাত্রাপালার সেই ‘একআনি’ হয়েই থেকে গেলেন এই কণ্ঠশিল্পী। আর ছোটবেলায় যেসব যাত্রাপালায় গানের সুযোগ পেতেন না, সেখানে যন্ত্র সংগত–হারমোনিয়াম।
যাত্রা এখন আর নেই। তাই রেজাউলের পথ এসে থেমে গেছে আধুনিক গানে। এখন আধুনিক গান করেন রেজাউল। বেশির ভাগই মানবেন্দ্রর। নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীতও গলায় সয়ে যায়। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী কেন্দ্রে নজরুলসংগীতের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। টেলিভিশনসহ বড় বড় মঞ্চে নজরুলসংগীত গেয়ে প্রশংসায় ভেসেছেন, অনেকেই বলেছেন তিনি একালের মানবেন্দ্র। কিন্তু সব এ পর্যন্তই। কোনো প্রশংসা তাঁর ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারেনি। নিজের চেষ্টায় গানের ওপর বেশ দখল আনতে পারলেও জীবন–বাস্তবতার কাছে বড় অসহায় রেজাউল করিম। তিন সন্তানের অভাবের সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বউটা রান্নার জন্য ঘুঁটে কুড়াতে কুড়াতে স্বপ্ন দেখেন স্বামী একদিন বড় গায়ক হয়ে নাম কুড়াবেন।
সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর সন্ধ্যায় যখন ঘরে ফেরেন রেজাউল ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে, তার পরও হারমোনিয়াম নিয়ে বসে পড়েন ঘরের কোনাকাঞ্চিতে। না, গান গাইতে নয়, হারমোনিয়ামটাকে পরম যত্নে পরিষ্কার করতেন। মন চাইলে একটু গলাও সাধেন। না হলে হারমোনিয়ামে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর তো ‘সম্পদ ওই গলাটুকুই।
রাতের পরে সকাল আসে। ভ্যান চালিয়ে রেজাউলকে যেতে হয় বহু দূরে, নতুন খ্যাপে। ভালো করে ভ্যানের চেইনে তেল দেন। এখনো বহু পথ পেরোনো বাকি, বাকি জীবনের বহু খুনসুটিও। ভ্যানের ক্যাঁচর-ক্যাঁচর শব্দের সঙ্গে মিশে যায় বাড়ির গাছে পাখির শিসের আওয়াজ, মেঘলা আকাশের নিচে গাই-বাছুরের ডাক আর তাঁর গান ‘…নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল, ফুল নেবে না অশ্রু নেবে...’।
রোজ তাঁর সকাল শুরু হয় মাঠের ঘাস কেটে। একটু বেলা হলেই নিজের রিকশাভ্যানটা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পথে। কখনো মানুষ, কখনো মালপত্র টানেন।
তবে মালপত্রের চেয়ে মানুষ পেলেই বেশি খুশি হন তিনি। মেঠো পথ ধরে যখন ভ্যান চলে, যাত্রীকে গলা ছেড়ে গান শোনান, মানবেন্দ্রর গান ‘…কেন কাঁদে পরান কী বেদনায় কারে কহি’। সওয়ারি মুগ্ধ হয়ে গান শোনে। নীরবে চোখের জল ফেলে।
গান শুনে কেউ যখন দুই চোখ বন্ধ করে, তার সামনে এসে দাঁড়ান মরমি গায়ক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। সেই কণ্ঠ, সেই উচ্চারণ। শুধু চোখ খুলতেই ভাঙা চোয়ালের অসহায় এক দরিদ্র ভ্যানচালক।
কিছুদিন আগে সেই ভ্যানচালক গায়কের সঙ্গে দেখা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামে। নাম রেজাউল করিম। তিন সন্তানের বাবা। সম্পদ বলতে শুধু বাড়ির ভিটে আর গানের গলা। দারিদ্র্য তাঁকে লেখাপড়া শিখতে দেয়নি। কারও কাছে গান শিখবেন, তা–ও ভাগ্যে জোটেনি। যা শিখেছেন নিজের চেষ্টায়। ১৩ বছর বয়সে তিনি সংসারের হাল ধরেন। বাবা গ্রামে যাত্রাপালা করতেন। সেই সুবাদে তিনিও একআনির (শিশুশিল্পী) চরিত্রে অভিনয় করতেন। কখনো বাবার সঙ্গে, কখনো একাই গলা মিলিয়ে যাত্রাপালার গান ধরতেন। নায়ক না, নায়িকার গান। বাবার মৃত্যুর পর সেই গাওয়ার নেশাটাকে পেশা করে পরিবারকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হয়নি। যাত্রাপালার সেই ‘একআনি’ হয়েই থেকে গেলেন এই কণ্ঠশিল্পী। আর ছোটবেলায় যেসব যাত্রাপালায় গানের সুযোগ পেতেন না, সেখানে যন্ত্র সংগত–হারমোনিয়াম।
যাত্রা এখন আর নেই। তাই রেজাউলের পথ এসে থেমে গেছে আধুনিক গানে। এখন আধুনিক গান করেন রেজাউল। বেশির ভাগই মানবেন্দ্রর। নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীতও গলায় সয়ে যায়। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী কেন্দ্রে নজরুলসংগীতের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। টেলিভিশনসহ বড় বড় মঞ্চে নজরুলসংগীত গেয়ে প্রশংসায় ভেসেছেন, অনেকেই বলেছেন তিনি একালের মানবেন্দ্র। কিন্তু সব এ পর্যন্তই। কোনো প্রশংসা তাঁর ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারেনি। নিজের চেষ্টায় গানের ওপর বেশ দখল আনতে পারলেও জীবন–বাস্তবতার কাছে বড় অসহায় রেজাউল করিম। তিন সন্তানের অভাবের সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বউটা রান্নার জন্য ঘুঁটে কুড়াতে কুড়াতে স্বপ্ন দেখেন স্বামী একদিন বড় গায়ক হয়ে নাম কুড়াবেন।
সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর সন্ধ্যায় যখন ঘরে ফেরেন রেজাউল ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে, তার পরও হারমোনিয়াম নিয়ে বসে পড়েন ঘরের কোনাকাঞ্চিতে। না, গান গাইতে নয়, হারমোনিয়ামটাকে পরম যত্নে পরিষ্কার করতেন। মন চাইলে একটু গলাও সাধেন। না হলে হারমোনিয়ামে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর তো ‘সম্পদ ওই গলাটুকুই।
রাতের পরে সকাল আসে। ভ্যান চালিয়ে রেজাউলকে যেতে হয় বহু দূরে, নতুন খ্যাপে। ভালো করে ভ্যানের চেইনে তেল দেন। এখনো বহু পথ পেরোনো বাকি, বাকি জীবনের বহু খুনসুটিও। ভ্যানের ক্যাঁচর-ক্যাঁচর শব্দের সঙ্গে মিশে যায় বাড়ির গাছে পাখির শিসের আওয়াজ, মেঘলা আকাশের নিচে গাই-বাছুরের ডাক আর তাঁর গান ‘…নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল, ফুল নেবে না অশ্রু নেবে...’।
চট্টগ্রাম নগরে আবর্জনার স্তূপ থেকে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম আবুল হাশেম হাছু (৬০)। আজ সোমবার দুপুরে নগরের চন্দনপুরা এলাকার বাকলিয়ায় আবর্জনার স্তূপ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তিনি একই এলাকার পশ্চিম গলির বাসিন্দা।
১০ ঘণ্টা আগেরাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী হালিমা মোহাম্মদ (১৮)। এবার তার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ঈদুল আজহায় বাড়িতে বেড়াতে এসে বাবা বাবুল আহমেদ বাবুর (৬০) সঙ্গে পুকুরে নেমেছিল সাঁতার শিখতে। কিন্তু হালিমার সাঁতার শেখা আর হয়নি। বাবার হাত ফসকে ডুবে মারা যায়।
১১ ঘণ্টা আগেনীলফামারী জেলা শহরে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-৮২২৩) আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল রোববার (৮ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে যৌথ বাহিনীর চেকপোস্ট পরিচালনার সময় কারটি জব্দ করা হয়। তবে, গাড়ির চালক দ্রুত পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
১১ ঘণ্টা আগেঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান। সোমবার চাচা নাছির উদ্দীন ভাতিজা আরিয়ানকে সাঁতার শিখাতে নিয়ে যান বাড়ির পুকুরে। সাঁতার শেখানোর একপর্যায়ে হাত থেকে ভাতিজা ছুটে ডুবে যায়। ভাতিজাকে খুঁজতে গিয়ে পানির
১১ ঘণ্টা আগে