Ajker Patrika

রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৩০
রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তাসিন খান। ছবি: সংগৃহীত
রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তাসিন খান। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) ৬৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো নারী শিক্ষার্থী সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বেশ সাড়াও পাচ্ছেন ঘনিষ্ঠদের। তবে ভোটের পরিবেশ নিয়ে রয়েছে ভয়। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে তৎপর হওয়ার পরামর্শ তাঁর।

ভিপি পদের এই প্রার্থীর নাম তাসিন খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি রাজশাহীতেই। নানা সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছেন তাসিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও ছিলেন সামনের সারিতে। আন্দোলন চলাকালে দায়িত্ব পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক হিসেবে। আন্দোলনের মাঠে মৃত্যুর ভয়কে জয় করার সাহসই তাঁকে প্রার্থী হওয়ার প্রেরণা দিয়েছে।

১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি নির্বাচনে কোনো নির্বাচিত নারী ভিপি তো দূরের কথা, কোনো নারী শিক্ষার্থী এ পদে প্রার্থীই হননি। দীর্ঘ ৩৫ বছরের বিরতির পর এবার আবার রাকসু নির্বাচন হচ্ছে, যেখানে নারী হিসেবে শুধু তাসিন ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া ছাত্রী হলের একাধিক ছাত্রীও অন্যান্য পদে প্রার্থী হয়েছেন।

শীর্ষ পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তাসিন খান বললেন, ‘আমরা যখন জুলাই আন্দোলনে অংশ নিলাম, বিশেষ করে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক হিসেবে নাম লিখালাম, তখন ভাবছিলাম হয়তো আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাব না। হয় রাজপথে মারা যাব, নয় বাকিটা জীবন কারাগারে কাটাতে হবে। সেই জায়গায় মৃত্যুকে খুব কাছে থেকে দেখলাম। স্বাভাবিক জীবন পেলাম। এখন আবার রাকসু নির্বাচনের ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হতে যাচ্ছি। তাই ভাবলাম, এখানে ভিপি প্রার্থী হওয়া উচিত।’

রাকসু নির্বাচন হলে তাসিন যে লড়বেন, সেই সিদ্ধান্ত আগেই ছিল। তবে কোন পদে লড়বেন, তা ঠিক ছিল না। বললেন, ‘রাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই ছিল, কিন্তু পদ ঠিক ছিল না। যখন ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করলাম, তখন সিদ্ধান্ত হলো ভিপি পদে দাঁড়াতে পারি।’

সাড়া কেমন পাচ্ছেন—এমন প্রশ্নে তাসিন বললেন, ‘এখন যাদের সাড়া পাচ্ছি, তারা সবাই আমার কাছের মানুষজন। তারা আমার সঙ্গে বিভিন্ন সংগঠনে, রাজপথে কাজ করে এসেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাড়া বুঝতে পারব প্রচারণা শুরু হওয়ার পর, ইশতেহার দেওয়ার পর। এখন আমার সাধ্য অনুযায়ী একটা গ্রহণযোগ্য ইশতেহার নিয়ে কাজ চলছে।’

নির্বাচন নিয়ে কিছুটা ভয়ও আছে তাসিনের। জানালেন, ‘মতাদর্শিক দ্বন্দ্ব আছে এমন বেশ কয়েকটা সংগঠন সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এই জায়গায় একটা অপ্রীতিকর অবস্থা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু প্রার্থী হিসেবে নয়, ভোটার হিসেবেও অনিশ্চয়তায় ভুগছি। প্রশাসন এখনো সেভাবে তৎপর নয়। সাইবার বুলিং সেল গঠনের কথা ছিল, কিন্তু এটার এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। এই সংকটগুলো দূর করতে হবে। ভোটার ও প্রার্থীরা যাতে সহাবস্থান করতে পারে, সেটা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।’

রাকসুর প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়েছে ২৪ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত। প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন ১ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর। ভোট গ্রহণ করা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। বহুল প্রতীক্ষিত এই ভোটে এখনই প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রাহকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার জেলহাজতে

‎জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তাঁর ছাত্রী সপরিবারে পুলিশ হেফাজতে

পুরান ঢাকায় বাসার সিঁড়িতে জবি ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত লাশ

৪৯তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯

ফরিদপুরে এ কে আজাদের গণসংযোগে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত