Ajker Patrika

ঈদে সবাই বাড়ি আসে, কিন্তু আমার ছেলের খবর আসে না: জিম্মি নাবিক নাজমুলের মা

কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯: ৫২
Thumbnail image

পবিত্র ঈদুল ফিতরের মাত্র কয়েক দিন বাকি। মুসলিমরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য কেনাকাটায় ব্যস্ত। তবে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’র নাবিক নাজমুল হকের পরিবারে ঈদের আনন্দ নেই। জিম্মি হওয়া নাজমুল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের চর-নুরনগর গ্রামের আবু সামা-নার্গিস দম্পতির সন্তান। 

রোববার ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৭টা বেজে ৫ মিনিট। টিনের গেটের সামনে দাঁড়াতেই নাবিক নাজমুলের মা নার্গিস খাতুন ছুটে আসেন। জানতে চান, তাঁর ছেলের কোনো খবর আছে কি না। তিনি বলেন, ‘ঈদে সবাই বাড়ি আসে। কিন্তু আমার ছেলের কোনো খবর আসে না। আল্লাহ কাছে অনেক কান্নাকাটি করি, দোয়া করি। কিন্তু আমার ছেলে ফিরে এলো না।’ 

নাজমুলের মা নার্গিস খাতুন বাবা আবু সামার কাছে নিয়ে যান। বলেন, ‘দেখো বাবা, তোমার চাচা কান্নাকাটি করে অসুস্থ হয়ে গেছে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না।’ পাশে ছিলেন তাঁর বড় মেয়ে লিপি খাতুন। 

নাজমুলের মা নার্গিস বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছেলেসহ যারা জাহাজে জিম্মি আছে, তাদের জন্য সব সময় দোয়া করি, আল্লাহ যেন আমাদের ছেলেদের জীবিত ফিরিয়ে আনেন।’ 

নার্গিস বেগম বলেন, ‘আমাদের ঈদ কেনাকাটা বলতে কিছু নেই। আমাদের সন্তানেরা বাড়ি ফিরে আসলেই ঈদ। গতবার ঈদে ছেলে বাড়িতে জামা-কাপড় ও বাজার করার জন্য টাকা পাঠিয়েছিল। এবার আমার ছেলেও নাই, টাকা পাঠানেরও কেউ নাই।’ 

নার্গিস বেগম আরও বলেন, টাকা না দিক, শুধু যদি শুনতাম আমাদের ছেলেরা ছাড়া পেয়েছে, তাতেই আমি খুশি। 

ঈদের বাজার বা কেনাকাটার জন্য টাকা আছে কি না—জানতে চাইলে নার্গিস বেগম বলেন, ‘তোমার চাচা খুব অসুস্থ বাবা, হাতে নগদ টাকাও নেই। আল্লাহ চালাইব। একদিন শুধু পুলিশ, এসিল্যান্ড, উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের বাড়িতে এসে ঘুরে গেছে আর সান্ত্বনা দিয়ে গেছে। এরপর আর কেউ খোঁজ নেয়নি।’ 

নাজমুলের বোন লিপি খাতুন বলেন, ‘বাবা-মা কান্নাকাটি করে তাদের চোখের জ্বল শুকিয়ে গেছে, মা-বাবার জন্য চিন্তা হয়। বিশেষ করে বাবার জন্য। দোয়া করিয়েন আমার ভাই যেন ফিরে আসে।’ 

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোমবার পরিবারটির জন্য ঈদসামগ্রী পাঠাব। বিষয়টি শোনার পরে ঘটনাস্থলে এসিল্যান্ড গিয়েছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত