Ajker Patrika

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ: ট্রেন আসে, ট্রেন যায়, স্টেশন তাকিয়ে রয়

  • সাড়ে ৩৮ হাজার কোটির প্রকল্পে চলে ৬টি আন্তনগর ট্রেন।
  • ২০ স্টেশনের ৮টিতে এখনো কোনো ট্রেন থামছে না।
  • কার্যক্রম না থাকা স্টেশন ভবন থেকে চুরি হচ্ছে সরঞ্জাম।
  • দিনে ৪৮টি ট্রেন চলার সক্ষমতা থাকলেও বাড়ছে না ট্রেন।
  • ১,৫৭৪ জনকে নিয়োগের প্রস্তাব ফেরত গেছে পাঁচবার।
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৫৩
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ৮টি স্টেশনে থামে না কোনো ট্রেন। ফলে এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব এলাকার মানুষ। একই সঙ্গে জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি পদ্মবিলা জংশন এলাকায়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ৮টি স্টেশনে থামে না কোনো ট্রেন। ফলে এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব এলাকার মানুষ। একই সঙ্গে জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি পদ্মবিলা জংশন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ২০টি স্টেশনের ৮টিতেই কোনো ট্রেন থামে না। ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেললাইন চালুর ১০ মাস পরও ট্রেন থামার অপেক্ষায় এসব স্টেশন। ট্রেন না থামায় এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব এলাকার মানুষ। অন্যদিকে কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ থাকায় আধুনিক এসব স্টেশন ভবন নষ্ট হচ্ছে। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে।

ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ২৩৬ দশমিক ২৭ কিলোমিটার। সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে নিয়মিত ট্রেন চলে মাত্র ৬টি; অথচ সক্ষমতা রয়েছে ৪৮টি ট্রেন চলাচলের। ফলে এই রেলপথ বাণিজ্যিকভাবে এখনো লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ১৭টি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৩টি পুরোনো স্টেশন সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার করা তিন স্টেশনের মধ্যে রয়েছে কমলাপুর, কাশিয়ানী ও ভাঙ্গা। গেন্ডারিয়ায় আগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ছোট স্টেশন ছিল। সেখানে আধুনিক স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এই স্টেশনে এখনো শুধু ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনই থামে। কিন্তু পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলো থামে ১১টি স্টেশনে। এগুলো হলো ভাঙ্গা জংশন, কাশিয়ানী, লোহাগড়া, নড়াইল, সিঙ্গিয়া, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা, শিবচর, ভাঙ্গা স্টেশন ও কমলাপুর রেলস্টেশন। ট্রেন থামায় এসব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করতে পারে। পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করা ট্রেন যে ৯টি স্টেশনে থামছে না, সেগুলো হলো গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, নিমতলা, নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, জামদিয়া, পদ্মবিলা, রূপদিয়া। এসব স্টেশনে বর্তমানে কয়েকজন ওয়েম্যান ও প্রহরী আছেন, কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রেন না থামায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক স্টেশন ভবনগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে। ঢাকায় একটি সরকারি দপ্তরে কর্মরত মো. জুবায়ের হোসেনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কপথ এখন বেশ ভালো, তাই প্রতিদিন বাড়ি থেকে অফিসে যাতায়াত করেন। সিরাজদিখানের কাছে নিমতলা রেলস্টেশন নির্মিত হলেও কোনো ট্রেন থামে না। ফলে ট্রেনের সুবিধা তিনি পান না। সরকারি টাকায় স্টেশন তৈরি করে ব্যবহার না হওয়া অর্থের অপচয়।

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, কার্যক্রম না থাকা কিছু স্টেশন থেকে এরই মধ্যে দামি ইলেকট্রিক ফিটিংস, বাথরুমের সরঞ্জাম ও ভায়াডাক্টের গ্রিটিং চুরি হয়েছে। ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই বলেই এসব স্টেশন চালু করা হয়নি। পূর্ণরূপে পরিচালনার আগে জনবল অনুমোদন এবং সময়সূচি চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।

২০২৩ সালে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের একাংশ চালু হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে এই রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা, মধুমতি, জাহানাবাদ, বেনাপোল এক্সপ্রেসসহ ছয়টি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে। নতুন রেললাইন চালু হলেও বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা।

প্রকল্প সূত্র জানায়, এই রুট দিয়ে দিনে ৪৮টি যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল, কোচ, লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) না থাকায় পূর্ণ সক্ষমতায় পৌঁছানো যায়নি। প্রকল্পে প্রস্তাবিত ১ হাজার ৫৭৪ জন নতুন জনবল নিয়োগের অনুমোদন এখনো দেয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে পাঁচবার সেই প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তনগর ট্রেন সব স্টেশনে থামানো সম্ভব নয়। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতেই ট্রেনের বিরতি দেওয়া হয়। তবে কিছু স্টেশন এখন বন্ধ আছে। ধীরে ধীরে লোকাল বা কমিউটার ট্রেন চালু হলে সব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে। এ ছাড়া জনবলসংকটের কারণে এখনই সব স্টেশন চালু করা যায়নি। তিনি বলেন, সব স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের বিরতি দিলে সময়সূচি ব্যাহত হবে। কিছু স্টেশনের সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় জিআরপি মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

প্রকল্পের নথি থেকে জানা যায়, ডিপিপি অনুযায়ী এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৬২৮ দশমিক ৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নির্মাণ চুক্তির আওতায় ছিল ২৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। অবশিষ্ট খরচ হয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স ৮ হাজার কোটি, ভূমি অধিগ্রহণে ৪ হাজার কোটি, পুনর্বাসনে ২০০ কোটি, ইউটিলিটি পরিষেবা স্থানান্তরে ৩০০ কোটি, পরামর্শক ব্যয় ১ হাজার ৩৩৩ কোটি, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য প্রশাসনিক খরচ ৫০ কোটি টাকা।

২০২৬ সালের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে প্রকল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন অবকাঠামো তৈরি হয়, সেখানে ব্যবহারের আগেই স্টেশন বন্ধ থাকা পরিকল্পনার দুর্বলতা নির্দেশ করে। এ ছাড়া বড় বড় প্রকল্প নেওয়া থেকে মনোযোগ কমাতে হবে রেলওয়েকে। রেলসেবাকে টেকসই করতে হলে স্টেশনভিত্তিক ব্যবসা এবং কমিউটার সার্ভিস চালুর দিকে নজর দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বহিষ্কারের নির্দেশ ডিজির

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান ও ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনার সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে এক চিকিৎসকের বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মনকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়। বাগ্‌বিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

শনিবার সকালে শিশুদের মূত্রাশয় ও প্রজননতন্ত্র-সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসাবিষয়ক চলমান চিকিৎসার সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে একটি সেমিনারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রধান অতিথি হিসেবে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর। সেমিনারে অংশগ্রহণের আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সেবার মান, জরুরি বিভাগ পরিচালনা, রোগী ব্যবস্থাপনা ও স্টাফদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ সময় ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন তাঁর বিভাগের সীমাবদ্ধতা, জনবল-সংকট এবং দায়িত্ব পালনের চাপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ডিজি ও তাঁর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে ডা. ধনদেব বর্মনকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন খান বলেন, ‘পরিদর্শনে সেবার মান নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্যার এবং ডা. ধনদেব বর্মনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে, যা মোটেও কাম্য নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ৮ দলের সমাবেশ শুরু

সিলেট প্রতিনিধি
সমাবেশ সফল করতে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সমাবেশ সফল করতে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ৮ দলের সমাবেশ শুরু হয়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে জড়ো হতে দেখা গেছে ৮ দলের নেতা-কর্মীদের। বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন দিয়ে তাঁরা আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে আসছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোট, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ পাঁচ দাবি ও গণভোটে ‘হ্যাঁ’ বিজয় নিশ্চিতে সিলেটে ইসলামী ও সমমনা ৮ দলের বিভাগীয় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

শনিবার দুপুর ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়ে আসরের আগে সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশ সফল করতে ৮ দলের পক্ষ থেকে কয়েক দিন ধরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সমাবেশে ৮ দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির মাওলানা সারওয়ার কামাল আজিজি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রাশেদ প্রধান ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক চাঁন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৮০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে নোবিপ্রবিতে রান ফর ইউনিটি ম্যারাথন

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আজ সকালে নোবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে রান ফর ইউনিটি ম্যারাথন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নোবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে রান ফর ইউনিটি ম্যারাথন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ‘রান ফর ইউনিটি’ ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা। শারীরিক সুস্থতা ও ঐক্যের বার্তা নিয়ে এই আয়োজনে অংশ নেন নোবিপ্রবির প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে নোবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে এই দৌড় শুরু হয়। বাংলা বাজার প্রদক্ষিণ করে ম্যারাথনটি শেষ হয় প্রধান ফটকেই। নোবিপ্রবি শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পুরো ক্যাম্পাসে এক উৎসবের আমেজ তৈরি করে।

আজ সকালে নোবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে রান ফর ইউনিটি ম্যারাথন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নোবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে রান ফর ইউনিটি ম্যারাথন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সম্মাননা এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সুস্থ ক্যাম্পাস গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি শিবির শাখা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাগেরহাটে স্বেচ্ছাশ্রমে জেলখানা পুকুরের কচুরিপানা পরিষ্কার

বাগেরহাট প্রতিনিধি
স্বেচ্ছাশ্রমে জেলখানা পুকুরের কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বেচ্ছাশ্রমে জেলখানা পুকুরের কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্রে পুরোনো জেলখানা পুকুরে থাকা কচুরিপানা স্বেচ্ছাশ্রমে পরিষ্কার করছেন রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন। এ সময় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বাগেরহাট ইউনিটের সহসভাপতি অধ্যাপক মোস্তাহিদুল আলম রবি, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান টুটুলসহ রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাগেরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্রের পুকুরটি শহরের জন্য নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। পুকুরের পূর্ব পাশে পুরোনো শিল্পকলা, পশ্চিমে পুরোনো জেলখানা জামে মসজিদ, দক্ষিণে স্বাধীনতা উদ্যান এবং উত্তরে শহীদ মিনার। তিন পাশে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে।

ছয় বছরের বেশি সময় ধরে পুকুরটি কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। অথচ একসময় জেলখানা মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা এবং আশপাশের হোটেলগুলোয় এই পুকুরের স্বচ্ছ পানি ব্যবহার করা হতো। দীর্ঘদিন পর হলেও রেড ক্রিসেন্ট সদস্যদের এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা শুকুর আলী বলেন, ‘পুকুরটি আমাদের জন্য খুব প্রয়োজন। এই পুকুর থেকেই আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ করি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পানির সমস্যা থাকলেও সমাধানে কেউ এগিয়ে আসেনি। রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমে কচুরিপানা পরিষ্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছেন, এ জন্য আমরা খুবই আনন্দিত।’

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বাগেরহাট ইউনিটের সহসভাপতি অধ্যাপক মোস্তাহিদুল আলম রবি বলেন, ‘সকাল থেকে রেড ক্রিসেন্টের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কচুরিপানা পরিষ্কার করছেন। ধারণা করছি, বিকেল নাগাদ পুকুরের কচুরিপানা পরিষ্কার সম্পন্ন হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে শহরের সকল জলাশয়ের পানি যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হবে।’ সেই সঙ্গে হাসপাতাল, মসজিদ, মন্দিরসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার আশপাশ পরিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত