রিমন রহমান, রাজশাহী
অভাবের সংসারে রাজুর পড়াশোনা হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন রিকশায় উঠে। স্বপ্ন দেখেন—ছোট মেয়েটি একদিন বড় হবে, পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন ঘরে বসে থাকেননি ২১ বছরের যুবক রাজু। আন্দোলনে নেমে পড়েন ১৬ জুলাই, কিন্তু ১৭ জুলাইয়েই গ্রেপ্তার হন। নির্মম নির্যাতনের পর ঠাঁই হয় জেলখানায়।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজু থাকতেন শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। পাশাপাশি দুই সেলে পাঁচজন করে মোট বন্দী ছিলেন ১০ জন। দিনে যখন সেলের তালা খোলা হতো, তখন সবার সঙ্গে বসে সময় কাটাতেন আখতার। ভাগ করে খেতেন খাবার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের সঙ্গী রিকশাচালক রাজুকে। গতকাল রোববার রাজশাহীতে আখতার হোসেনের আসার খবরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রাজু। পথসভা, সমাবেশের ভিড়ের ভেতর রিকশা রেখে আখতারের কাছে যেতে পারেননি তিনি। রাতে যখন দেখা হলো, তখন রাজুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন আখতার। রিকশার পেছনের সিটে পাশাপাশি বসেন। দুজনের চোখের কোণেই তখন পানি চলে আসে। রাতে একসঙ্গে বসে খেয়েছেন পর্যটন মোটেলে।
রিকশাচালক রাজুর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। আগে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের কারণে তাঁর পরিবার আর তাঁকে ঢাকায় থাকতে দেয়নি। তিনি চলে এসেছেন রাজশাহী। এ শহরে এখন রিকশা চালান।
আজ সোমবার রাতে নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় রাজুর সঙ্গে। তিনি জানালেন, আখতার হোসেনকে তিনি শুধু টিভিতে দেখতেন। কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে এনসিপির পোস্টার দেখে তিনি জানতে পারেন, আখতার রাজশাহী আসছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আখতারের সঙ্গে দেখা করবেন।
গতকাল রাজশাহীতে নগরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সকাল থেকে সেখানে বসে ছিলেন রাজু। বিকেলে আখতারসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের হারিয়ে ফেলেন রাজু। তিনি যেতে থাকেন মিছিলের পেছনে পেছনে। মিছিল শেষে সমাবেশ হয়, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজু। রাতে গাড়িবহরের সঙ্গেই রিকশা নিয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ঢুকে পড়েন। কিন্তু একে একে সব নেতা নামলেও আখতার নামছিলেন না গাড়ি থেকে। মন ভেঙে যায় রাজুর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আখতার গিয়েছেন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
আখতারের অপেক্ষায় পর্যটন মোটেলের সামনে বসে থাকেন রাজু। রাতে আসেন আখতার। তাঁকে দেখেই ‘আখতার ভাই’ বলে ডাক দেন রাজু। আখতার পেছনে ঘুরে তাঁকে দেখেই কাছে গিয়ে বুকে টেনে নেন। তারপর দুজনে উঠে বসেন রিকশার পেছনের সিটে। দুজন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন। পরে পর্যটন মোটেলের ভেতরে নিয়ে রাজুর সঙ্গে রাতের খাবার খান আখতার।
রিকশাচালক রাজু বলেন, ‘আমার মেয়েটা খুবই ছোট। মনে করেছি, আমি তো চাকরি পাব না। ছোট মেয়েটা তো একদিন বড় হবে। তার তো চাকরি দরকার। কোটা থাকা যাবে না। তাই আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’
রাজু জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের খবর তাঁরা জানার পর আখতার হোসেন শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কারাগারের ভেতরে কবিতা বলতে শুরু করেন। রাতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে যায়। তখন তাঁরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, হয়তো সরকার পতনের খবরটি সঠিক নয়। শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কবিতা বলার কারণে আখতার হোসেনকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা জেগে থাকেন। পরে একজন কারারক্ষী নিশ্চিত করেন, সত্যিই সরকারের পতন হয়েছে। সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে ৭ আগস্ট রাজুসহ অন্য আন্দোলনকারীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আখতার মনে রাখায় গর্বিত রিকশাচালক রাজু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে তো আমি ভাই এটা ভাবতে পারি না। আমি ছোট একজন রিকশাচালক। আখতার ভাই এত বড় নেতা। আমার মতো ক্ষুদ্র রিকশাচালককে মনে রেখেছেন। দেখেই বুকে জড়িয়েছেন। একসঙ্গে খেয়েছেন। আমি খুব গর্বিত। ১ তারিখে ভাই আমাকে ঢাকায় ডেকেছেন। আমি ঢাকায় যাব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।’
অভাবের সংসারে রাজুর পড়াশোনা হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন রিকশায় উঠে। স্বপ্ন দেখেন—ছোট মেয়েটি একদিন বড় হবে, পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন ঘরে বসে থাকেননি ২১ বছরের যুবক রাজু। আন্দোলনে নেমে পড়েন ১৬ জুলাই, কিন্তু ১৭ জুলাইয়েই গ্রেপ্তার হন। নির্মম নির্যাতনের পর ঠাঁই হয় জেলখানায়।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজু থাকতেন শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। পাশাপাশি দুই সেলে পাঁচজন করে মোট বন্দী ছিলেন ১০ জন। দিনে যখন সেলের তালা খোলা হতো, তখন সবার সঙ্গে বসে সময় কাটাতেন আখতার। ভাগ করে খেতেন খাবার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের সঙ্গী রিকশাচালক রাজুকে। গতকাল রোববার রাজশাহীতে আখতার হোসেনের আসার খবরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রাজু। পথসভা, সমাবেশের ভিড়ের ভেতর রিকশা রেখে আখতারের কাছে যেতে পারেননি তিনি। রাতে যখন দেখা হলো, তখন রাজুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন আখতার। রিকশার পেছনের সিটে পাশাপাশি বসেন। দুজনের চোখের কোণেই তখন পানি চলে আসে। রাতে একসঙ্গে বসে খেয়েছেন পর্যটন মোটেলে।
রিকশাচালক রাজুর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। আগে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের কারণে তাঁর পরিবার আর তাঁকে ঢাকায় থাকতে দেয়নি। তিনি চলে এসেছেন রাজশাহী। এ শহরে এখন রিকশা চালান।
আজ সোমবার রাতে নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় রাজুর সঙ্গে। তিনি জানালেন, আখতার হোসেনকে তিনি শুধু টিভিতে দেখতেন। কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে এনসিপির পোস্টার দেখে তিনি জানতে পারেন, আখতার রাজশাহী আসছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আখতারের সঙ্গে দেখা করবেন।
গতকাল রাজশাহীতে নগরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সকাল থেকে সেখানে বসে ছিলেন রাজু। বিকেলে আখতারসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের হারিয়ে ফেলেন রাজু। তিনি যেতে থাকেন মিছিলের পেছনে পেছনে। মিছিল শেষে সমাবেশ হয়, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজু। রাতে গাড়িবহরের সঙ্গেই রিকশা নিয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ঢুকে পড়েন। কিন্তু একে একে সব নেতা নামলেও আখতার নামছিলেন না গাড়ি থেকে। মন ভেঙে যায় রাজুর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আখতার গিয়েছেন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
আখতারের অপেক্ষায় পর্যটন মোটেলের সামনে বসে থাকেন রাজু। রাতে আসেন আখতার। তাঁকে দেখেই ‘আখতার ভাই’ বলে ডাক দেন রাজু। আখতার পেছনে ঘুরে তাঁকে দেখেই কাছে গিয়ে বুকে টেনে নেন। তারপর দুজনে উঠে বসেন রিকশার পেছনের সিটে। দুজন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন। পরে পর্যটন মোটেলের ভেতরে নিয়ে রাজুর সঙ্গে রাতের খাবার খান আখতার।
রিকশাচালক রাজু বলেন, ‘আমার মেয়েটা খুবই ছোট। মনে করেছি, আমি তো চাকরি পাব না। ছোট মেয়েটা তো একদিন বড় হবে। তার তো চাকরি দরকার। কোটা থাকা যাবে না। তাই আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’
রাজু জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের খবর তাঁরা জানার পর আখতার হোসেন শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কারাগারের ভেতরে কবিতা বলতে শুরু করেন। রাতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে যায়। তখন তাঁরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, হয়তো সরকার পতনের খবরটি সঠিক নয়। শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কবিতা বলার কারণে আখতার হোসেনকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা জেগে থাকেন। পরে একজন কারারক্ষী নিশ্চিত করেন, সত্যিই সরকারের পতন হয়েছে। সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে ৭ আগস্ট রাজুসহ অন্য আন্দোলনকারীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আখতার মনে রাখায় গর্বিত রিকশাচালক রাজু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে তো আমি ভাই এটা ভাবতে পারি না। আমি ছোট একজন রিকশাচালক। আখতার ভাই এত বড় নেতা। আমার মতো ক্ষুদ্র রিকশাচালককে মনে রেখেছেন। দেখেই বুকে জড়িয়েছেন। একসঙ্গে খেয়েছেন। আমি খুব গর্বিত। ১ তারিখে ভাই আমাকে ঢাকায় ডেকেছেন। আমি ঢাকায় যাব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।’
‘বিপ্লব উদ্যানে কোনো নতুন স্থাপনা হবে না। এখানে সবুজের সমারোহ হবে। এখানে আবারও পাখি ডাকবে। মানুষ হাঁটবে ও অক্সিজেন নেবে। এখানে একটি গ্রিন পার্ক করব’। কথাগুলো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের। কথাগুলো খুব বেশি দিনের নয়। গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব উদ্যানে দাঁড়িয়ে এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগেঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভিডব্লিউবির বরাদ্দ হওয়া চাল বিতরণ না করে গুদামে রেখে ২২ জন সুবিধাভোগীকে এক মাসের বেশি সময় ধরে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে। ইউপি কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ঘুরেও চাল দিচ্ছে না বলে অভিযোগ সুবিধাভোগীদের।
২ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামে ৪ খুনের ফেরারী আসামি সন্ত্রাসী রায়হান কয়েক মাসের ব্যবধানে এবার দিনদুপুরে আরও একটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। রাউজানে যুবদল নেতা সেলিমকে খুনের পরে দলবল নিয়ে পাহাড়ে পালিয়ে যান রায়হান। ঘটনাস্থলের কাছের একটি সিসিটিভি ফুটেজে এ দৃশ্য ধরা পড়েছে। পুলিশও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
২ ঘণ্টা আগেএকসময় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ত পায়রা নদীতে। তবে এখন কমে গেছে। এমনকি ভরা মৌসুমেও পাওয়া যাচ্ছে না ইলিশ। ইলিশ ধরা না পড়ায় এই এলাকার ১৪ হাজার জেলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গবেষকেরা বলছেন, মোহনায় ডুবোচর, নদীতে পড়ছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য—এতে করে ভরা মৌসুমেও পায়রা নদীতে ইলিশের দেখা নেই।
২ ঘণ্টা আগে