রিমন রহমান, রাজশাহী

অভাবের সংসারে রাজুর পড়াশোনা হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন রিকশায় উঠে। স্বপ্ন দেখেন—ছোট মেয়েটি একদিন বড় হবে, পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন ঘরে বসে থাকেননি ২১ বছরের যুবক রাজু। আন্দোলনে নেমে পড়েন ১৬ জুলাই, কিন্তু ১৭ জুলাইয়েই গ্রেপ্তার হন। নির্মম নির্যাতনের পর ঠাঁই হয় জেলখানায়।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজু থাকতেন শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। পাশাপাশি দুই সেলে পাঁচজন করে মোট বন্দী ছিলেন ১০ জন। দিনে যখন সেলের তালা খোলা হতো, তখন সবার সঙ্গে বসে সময় কাটাতেন আখতার। ভাগ করে খেতেন খাবার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের সঙ্গী রিকশাচালক রাজুকে। গতকাল রোববার রাজশাহীতে আখতার হোসেনের আসার খবরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রাজু। পথসভা, সমাবেশের ভিড়ের ভেতর রিকশা রেখে আখতারের কাছে যেতে পারেননি তিনি। রাতে যখন দেখা হলো, তখন রাজুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন আখতার। রিকশার পেছনের সিটে পাশাপাশি বসেন। দুজনের চোখের কোণেই তখন পানি চলে আসে। রাতে একসঙ্গে বসে খেয়েছেন পর্যটন মোটেলে।
রিকশাচালক রাজুর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। আগে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের কারণে তাঁর পরিবার আর তাঁকে ঢাকায় থাকতে দেয়নি। তিনি চলে এসেছেন রাজশাহী। এ শহরে এখন রিকশা চালান।
আজ সোমবার রাতে নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় রাজুর সঙ্গে। তিনি জানালেন, আখতার হোসেনকে তিনি শুধু টিভিতে দেখতেন। কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে এনসিপির পোস্টার দেখে তিনি জানতে পারেন, আখতার রাজশাহী আসছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আখতারের সঙ্গে দেখা করবেন।
গতকাল রাজশাহীতে নগরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সকাল থেকে সেখানে বসে ছিলেন রাজু। বিকেলে আখতারসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের হারিয়ে ফেলেন রাজু। তিনি যেতে থাকেন মিছিলের পেছনে পেছনে। মিছিল শেষে সমাবেশ হয়, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজু। রাতে গাড়িবহরের সঙ্গেই রিকশা নিয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ঢুকে পড়েন। কিন্তু একে একে সব নেতা নামলেও আখতার নামছিলেন না গাড়ি থেকে। মন ভেঙে যায় রাজুর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আখতার গিয়েছেন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
আখতারের অপেক্ষায় পর্যটন মোটেলের সামনে বসে থাকেন রাজু। রাতে আসেন আখতার। তাঁকে দেখেই ‘আখতার ভাই’ বলে ডাক দেন রাজু। আখতার পেছনে ঘুরে তাঁকে দেখেই কাছে গিয়ে বুকে টেনে নেন। তারপর দুজনে উঠে বসেন রিকশার পেছনের সিটে। দুজন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন। পরে পর্যটন মোটেলের ভেতরে নিয়ে রাজুর সঙ্গে রাতের খাবার খান আখতার।
রিকশাচালক রাজু বলেন, ‘আমার মেয়েটা খুবই ছোট। মনে করেছি, আমি তো চাকরি পাব না। ছোট মেয়েটা তো একদিন বড় হবে। তার তো চাকরি দরকার। কোটা থাকা যাবে না। তাই আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’
রাজু জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের খবর তাঁরা জানার পর আখতার হোসেন শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কারাগারের ভেতরে কবিতা বলতে শুরু করেন। রাতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে যায়। তখন তাঁরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, হয়তো সরকার পতনের খবরটি সঠিক নয়। শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কবিতা বলার কারণে আখতার হোসেনকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা জেগে থাকেন। পরে একজন কারারক্ষী নিশ্চিত করেন, সত্যিই সরকারের পতন হয়েছে। সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে ৭ আগস্ট রাজুসহ অন্য আন্দোলনকারীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আখতার মনে রাখায় গর্বিত রিকশাচালক রাজু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে তো আমি ভাই এটা ভাবতে পারি না। আমি ছোট একজন রিকশাচালক। আখতার ভাই এত বড় নেতা। আমার মতো ক্ষুদ্র রিকশাচালককে মনে রেখেছেন। দেখেই বুকে জড়িয়েছেন। একসঙ্গে খেয়েছেন। আমি খুব গর্বিত। ১ তারিখে ভাই আমাকে ঢাকায় ডেকেছেন। আমি ঢাকায় যাব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।’

অভাবের সংসারে রাজুর পড়াশোনা হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন রিকশায় উঠে। স্বপ্ন দেখেন—ছোট মেয়েটি একদিন বড় হবে, পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন ঘরে বসে থাকেননি ২১ বছরের যুবক রাজু। আন্দোলনে নেমে পড়েন ১৬ জুলাই, কিন্তু ১৭ জুলাইয়েই গ্রেপ্তার হন। নির্মম নির্যাতনের পর ঠাঁই হয় জেলখানায়।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজু থাকতেন শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। পাশাপাশি দুই সেলে পাঁচজন করে মোট বন্দী ছিলেন ১০ জন। দিনে যখন সেলের তালা খোলা হতো, তখন সবার সঙ্গে বসে সময় কাটাতেন আখতার। ভাগ করে খেতেন খাবার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের সঙ্গী রিকশাচালক রাজুকে। গতকাল রোববার রাজশাহীতে আখতার হোসেনের আসার খবরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রাজু। পথসভা, সমাবেশের ভিড়ের ভেতর রিকশা রেখে আখতারের কাছে যেতে পারেননি তিনি। রাতে যখন দেখা হলো, তখন রাজুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন আখতার। রিকশার পেছনের সিটে পাশাপাশি বসেন। দুজনের চোখের কোণেই তখন পানি চলে আসে। রাতে একসঙ্গে বসে খেয়েছেন পর্যটন মোটেলে।
রিকশাচালক রাজুর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। আগে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের কারণে তাঁর পরিবার আর তাঁকে ঢাকায় থাকতে দেয়নি। তিনি চলে এসেছেন রাজশাহী। এ শহরে এখন রিকশা চালান।
আজ সোমবার রাতে নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় রাজুর সঙ্গে। তিনি জানালেন, আখতার হোসেনকে তিনি শুধু টিভিতে দেখতেন। কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে এনসিপির পোস্টার দেখে তিনি জানতে পারেন, আখতার রাজশাহী আসছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আখতারের সঙ্গে দেখা করবেন।
গতকাল রাজশাহীতে নগরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সকাল থেকে সেখানে বসে ছিলেন রাজু। বিকেলে আখতারসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের হারিয়ে ফেলেন রাজু। তিনি যেতে থাকেন মিছিলের পেছনে পেছনে। মিছিল শেষে সমাবেশ হয়, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজু। রাতে গাড়িবহরের সঙ্গেই রিকশা নিয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ঢুকে পড়েন। কিন্তু একে একে সব নেতা নামলেও আখতার নামছিলেন না গাড়ি থেকে। মন ভেঙে যায় রাজুর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আখতার গিয়েছেন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
আখতারের অপেক্ষায় পর্যটন মোটেলের সামনে বসে থাকেন রাজু। রাতে আসেন আখতার। তাঁকে দেখেই ‘আখতার ভাই’ বলে ডাক দেন রাজু। আখতার পেছনে ঘুরে তাঁকে দেখেই কাছে গিয়ে বুকে টেনে নেন। তারপর দুজনে উঠে বসেন রিকশার পেছনের সিটে। দুজন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন। পরে পর্যটন মোটেলের ভেতরে নিয়ে রাজুর সঙ্গে রাতের খাবার খান আখতার।
রিকশাচালক রাজু বলেন, ‘আমার মেয়েটা খুবই ছোট। মনে করেছি, আমি তো চাকরি পাব না। ছোট মেয়েটা তো একদিন বড় হবে। তার তো চাকরি দরকার। কোটা থাকা যাবে না। তাই আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’
রাজু জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের খবর তাঁরা জানার পর আখতার হোসেন শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কারাগারের ভেতরে কবিতা বলতে শুরু করেন। রাতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে যায়। তখন তাঁরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, হয়তো সরকার পতনের খবরটি সঠিক নয়। শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কবিতা বলার কারণে আখতার হোসেনকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা জেগে থাকেন। পরে একজন কারারক্ষী নিশ্চিত করেন, সত্যিই সরকারের পতন হয়েছে। সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে ৭ আগস্ট রাজুসহ অন্য আন্দোলনকারীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আখতার মনে রাখায় গর্বিত রিকশাচালক রাজু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে তো আমি ভাই এটা ভাবতে পারি না। আমি ছোট একজন রিকশাচালক। আখতার ভাই এত বড় নেতা। আমার মতো ক্ষুদ্র রিকশাচালককে মনে রেখেছেন। দেখেই বুকে জড়িয়েছেন। একসঙ্গে খেয়েছেন। আমি খুব গর্বিত। ১ তারিখে ভাই আমাকে ঢাকায় ডেকেছেন। আমি ঢাকায় যাব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।’
রিমন রহমান, রাজশাহী

অভাবের সংসারে রাজুর পড়াশোনা হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন রিকশায় উঠে। স্বপ্ন দেখেন—ছোট মেয়েটি একদিন বড় হবে, পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন ঘরে বসে থাকেননি ২১ বছরের যুবক রাজু। আন্দোলনে নেমে পড়েন ১৬ জুলাই, কিন্তু ১৭ জুলাইয়েই গ্রেপ্তার হন। নির্মম নির্যাতনের পর ঠাঁই হয় জেলখানায়।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজু থাকতেন শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। পাশাপাশি দুই সেলে পাঁচজন করে মোট বন্দী ছিলেন ১০ জন। দিনে যখন সেলের তালা খোলা হতো, তখন সবার সঙ্গে বসে সময় কাটাতেন আখতার। ভাগ করে খেতেন খাবার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের সঙ্গী রিকশাচালক রাজুকে। গতকাল রোববার রাজশাহীতে আখতার হোসেনের আসার খবরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রাজু। পথসভা, সমাবেশের ভিড়ের ভেতর রিকশা রেখে আখতারের কাছে যেতে পারেননি তিনি। রাতে যখন দেখা হলো, তখন রাজুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন আখতার। রিকশার পেছনের সিটে পাশাপাশি বসেন। দুজনের চোখের কোণেই তখন পানি চলে আসে। রাতে একসঙ্গে বসে খেয়েছেন পর্যটন মোটেলে।
রিকশাচালক রাজুর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। আগে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের কারণে তাঁর পরিবার আর তাঁকে ঢাকায় থাকতে দেয়নি। তিনি চলে এসেছেন রাজশাহী। এ শহরে এখন রিকশা চালান।
আজ সোমবার রাতে নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় রাজুর সঙ্গে। তিনি জানালেন, আখতার হোসেনকে তিনি শুধু টিভিতে দেখতেন। কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে এনসিপির পোস্টার দেখে তিনি জানতে পারেন, আখতার রাজশাহী আসছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আখতারের সঙ্গে দেখা করবেন।
গতকাল রাজশাহীতে নগরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সকাল থেকে সেখানে বসে ছিলেন রাজু। বিকেলে আখতারসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের হারিয়ে ফেলেন রাজু। তিনি যেতে থাকেন মিছিলের পেছনে পেছনে। মিছিল শেষে সমাবেশ হয়, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজু। রাতে গাড়িবহরের সঙ্গেই রিকশা নিয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ঢুকে পড়েন। কিন্তু একে একে সব নেতা নামলেও আখতার নামছিলেন না গাড়ি থেকে। মন ভেঙে যায় রাজুর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আখতার গিয়েছেন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
আখতারের অপেক্ষায় পর্যটন মোটেলের সামনে বসে থাকেন রাজু। রাতে আসেন আখতার। তাঁকে দেখেই ‘আখতার ভাই’ বলে ডাক দেন রাজু। আখতার পেছনে ঘুরে তাঁকে দেখেই কাছে গিয়ে বুকে টেনে নেন। তারপর দুজনে উঠে বসেন রিকশার পেছনের সিটে। দুজন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন। পরে পর্যটন মোটেলের ভেতরে নিয়ে রাজুর সঙ্গে রাতের খাবার খান আখতার।
রিকশাচালক রাজু বলেন, ‘আমার মেয়েটা খুবই ছোট। মনে করেছি, আমি তো চাকরি পাব না। ছোট মেয়েটা তো একদিন বড় হবে। তার তো চাকরি দরকার। কোটা থাকা যাবে না। তাই আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’
রাজু জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের খবর তাঁরা জানার পর আখতার হোসেন শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কারাগারের ভেতরে কবিতা বলতে শুরু করেন। রাতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে যায়। তখন তাঁরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, হয়তো সরকার পতনের খবরটি সঠিক নয়। শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কবিতা বলার কারণে আখতার হোসেনকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা জেগে থাকেন। পরে একজন কারারক্ষী নিশ্চিত করেন, সত্যিই সরকারের পতন হয়েছে। সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে ৭ আগস্ট রাজুসহ অন্য আন্দোলনকারীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আখতার মনে রাখায় গর্বিত রিকশাচালক রাজু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে তো আমি ভাই এটা ভাবতে পারি না। আমি ছোট একজন রিকশাচালক। আখতার ভাই এত বড় নেতা। আমার মতো ক্ষুদ্র রিকশাচালককে মনে রেখেছেন। দেখেই বুকে জড়িয়েছেন। একসঙ্গে খেয়েছেন। আমি খুব গর্বিত। ১ তারিখে ভাই আমাকে ঢাকায় ডেকেছেন। আমি ঢাকায় যাব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।’

অভাবের সংসারে রাজুর পড়াশোনা হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন রিকশায় উঠে। স্বপ্ন দেখেন—ছোট মেয়েটি একদিন বড় হবে, পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে। তাই কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন শুরু হলো, তখন ঘরে বসে থাকেননি ২১ বছরের যুবক রাজু। আন্দোলনে নেমে পড়েন ১৬ জুলাই, কিন্তু ১৭ জুলাইয়েই গ্রেপ্তার হন। নির্মম নির্যাতনের পর ঠাঁই হয় জেলখানায়।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজু থাকতেন শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। পাশাপাশি দুই সেলে পাঁচজন করে মোট বন্দী ছিলেন ১০ জন। দিনে যখন সেলের তালা খোলা হতো, তখন সবার সঙ্গে বসে সময় কাটাতেন আখতার। ভাগ করে খেতেন খাবার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের সঙ্গী রিকশাচালক রাজুকে। গতকাল রোববার রাজশাহীতে আখতার হোসেনের আসার খবরে সারা দিন অপেক্ষায় ছিলেন রাজু। পথসভা, সমাবেশের ভিড়ের ভেতর রিকশা রেখে আখতারের কাছে যেতে পারেননি তিনি। রাতে যখন দেখা হলো, তখন রাজুকে বুকে জড়িয়ে ধরেন আখতার। রিকশার পেছনের সিটে পাশাপাশি বসেন। দুজনের চোখের কোণেই তখন পানি চলে আসে। রাতে একসঙ্গে বসে খেয়েছেন পর্যটন মোটেলে।
রিকশাচালক রাজুর বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। আগে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের কারণে তাঁর পরিবার আর তাঁকে ঢাকায় থাকতে দেয়নি। তিনি চলে এসেছেন রাজশাহী। এ শহরে এখন রিকশা চালান।
আজ সোমবার রাতে নগরের দড়িখড়বোনা মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা হয় রাজুর সঙ্গে। তিনি জানালেন, আখতার হোসেনকে তিনি শুধু টিভিতে দেখতেন। কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে এনসিপির পোস্টার দেখে তিনি জানতে পারেন, আখতার রাজশাহী আসছেন। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আখতারের সঙ্গে দেখা করবেন।
গতকাল রাজশাহীতে নগরের রেলগেট এলাকা থেকে এনসিপির পথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। দুপুর থেকে অপেক্ষা করছিলেন নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সকাল থেকে সেখানে বসে ছিলেন রাজু। বিকেলে আখতারসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের হারিয়ে ফেলেন রাজু। তিনি যেতে থাকেন মিছিলের পেছনে পেছনে। মিছিল শেষে সমাবেশ হয়, দূরে দাঁড়িয়ে দেখেন রাজু। রাতে গাড়িবহরের সঙ্গেই রিকশা নিয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ঢুকে পড়েন। কিন্তু একে একে সব নেতা নামলেও আখতার নামছিলেন না গাড়ি থেকে। মন ভেঙে যায় রাজুর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আখতার গিয়েছেন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
আখতারের অপেক্ষায় পর্যটন মোটেলের সামনে বসে থাকেন রাজু। রাতে আসেন আখতার। তাঁকে দেখেই ‘আখতার ভাই’ বলে ডাক দেন রাজু। আখতার পেছনে ঘুরে তাঁকে দেখেই কাছে গিয়ে বুকে টেনে নেন। তারপর দুজনে উঠে বসেন রিকশার পেছনের সিটে। দুজন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেন। পরে পর্যটন মোটেলের ভেতরে নিয়ে রাজুর সঙ্গে রাতের খাবার খান আখতার।
রিকশাচালক রাজু বলেন, ‘আমার মেয়েটা খুবই ছোট। মনে করেছি, আমি তো চাকরি পাব না। ছোট মেয়েটা তো একদিন বড় হবে। তার তো চাকরি দরকার। কোটা থাকা যাবে না। তাই আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম।’
রাজু জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের খবর তাঁরা জানার পর আখতার হোসেন শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কারাগারের ভেতরে কবিতা বলতে শুরু করেন। রাতে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়ে যায়। তখন তাঁরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, হয়তো সরকার পতনের খবরটি সঠিক নয়। শেখ হাসিনাকে ব্যঙ্গ করে কবিতা বলার কারণে আখতার হোসেনকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা জেগে থাকেন। পরে একজন কারারক্ষী নিশ্চিত করেন, সত্যিই সরকারের পতন হয়েছে। সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে ৭ আগস্ট রাজুসহ অন্য আন্দোলনকারীরা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আখতার মনে রাখায় গর্বিত রিকশাচালক রাজু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে তো আমি ভাই এটা ভাবতে পারি না। আমি ছোট একজন রিকশাচালক। আখতার ভাই এত বড় নেতা। আমার মতো ক্ষুদ্র রিকশাচালককে মনে রেখেছেন। দেখেই বুকে জড়িয়েছেন। একসঙ্গে খেয়েছেন। আমি খুব গর্বিত। ১ তারিখে ভাই আমাকে ঢাকায় ডেকেছেন। আমি ঢাকায় যাব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।’

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
৪ ঘণ্টা আগে
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
৪ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
৪ ঘণ্টা আগেবিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাদুকাটা নদীর ওপর আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তমা কনস্ট্রাকশনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা মাস ছয়েকের মধ্যে সেতু দুটির কাজ শেষ করবে।
এমন অবস্থায় বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু দুটির কাজ কবে শেষ হবে এবং চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ও খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর। এ ছাড়া উপজেলাটির ডাম্পেরবাজার এলাকার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এসব কারণে জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। জেলার দীর্ঘতম ৭৫০ মিটারের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। এর মধ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একই মাসে পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৫০ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। সেতু দুটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ৩০ মাস। সেই হিসাবে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করেই ৩৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৯ টাকা তুলে নিয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন। মৈত্রী সেতুর ৭৮ ভাগ কাজের বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ৭০ ভাগ। ডাম্পেরবাজার সেতুর ৮৫ ভাগ কাজে বিল দেওয়া হয়েছে ৮০ ভাগ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৈত্রী সেতুটি মাঝখানের অংশের কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজও বন্ধ রয়েছে। সেখানে চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বজলুল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ হলেও সংযোগ না হওয়ায় সেতুটি কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকা মেঘালয় খাসিয়া পাহাড়ের নিকটবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুলবাগান, বড়গোপ টিলা, বারেকটিলা, লাকমাছড়া, সীমান্ত হাট, জাদুকাটা, অদ্বৈত জন্মধাম, শাহ আরেফিন (রহ.) মাজারকেন্দ্রিক পর্যটন, কৃষিপণ্য বিপণন এবং বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁও—তিন শুল্ক স্টেশনের যাতায়াত সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর সীমান্ত
এলাকা হয়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।
তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিয়া মো. নাছির মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ডাম্পেরবাজার সেতুর সামান্য কাজ বাকি আছে। মৈত্রী সেতুর কাজ আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে শেষ করা হবে। বিগত বন্যায় মৈত্রী সেতুর একাধিক পিলার ভেঙে অনেক নির্মাণসামগ্রী তলিয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা কাজ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’
এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৈত্রী সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ডাম্পেরবাজার সেতুর কাজও শেষ হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অসমাপ্ত কাজের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রকল্প অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক প্রাক্কলনটি ফেরত পাঠিয়েছেন। ফের তা সংশোধন করে পাঠানো হবে।’

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাদুকাটা নদীর ওপর আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতু নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় তমা কনস্ট্রাকশনের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা মাস ছয়েকের মধ্যে সেতু দুটির কাজ শেষ করবে।
এমন অবস্থায় বহুল কাঙ্ক্ষিত সেতু দুটির কাজ কবে শেষ হবে এবং চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ও খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুর। এ ছাড়া উপজেলাটির ডাম্পেরবাজার এলাকার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করা হয়। এসব কারণে জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর দীর্ঘ দিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ওঠে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। জেলার দীর্ঘতম ৭৫০ মিটারের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৮ টাকা। এর মধ্যে ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একই মাসে পাটলাই নদের ওপর ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪৫০ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা। সেতু দুটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ৩০ মাস। সেই হিসাবে ২০২১ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করেই ৩৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৯ টাকা তুলে নিয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন। মৈত্রী সেতুর ৭৮ ভাগ কাজের বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ৭০ ভাগ। ডাম্পেরবাজার সেতুর ৮৫ ভাগ কাজে বিল দেওয়া হয়েছে ৮০ ভাগ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৈত্রী সেতুটি মাঝখানের অংশের কাজ শেষ হয়নি। এ ছাড়া ডাম্পেরবাজার-বালিয়াঘাট নতুন বাজার সেতুর সংযোগ সড়কের কাজও বন্ধ রয়েছে। সেখানে চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বজলুল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, মূল সেতুর কাজ হলেও সংযোগ না হওয়ায় সেতুটি কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকা মেঘালয় খাসিয়া পাহাড়ের নিকটবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুলবাগান, বড়গোপ টিলা, বারেকটিলা, লাকমাছড়া, সীমান্ত হাট, জাদুকাটা, অদ্বৈত জন্মধাম, শাহ আরেফিন (রহ.) মাজারকেন্দ্রিক পর্যটন, কৃষিপণ্য বিপণন এবং বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁও—তিন শুল্ক স্টেশনের যাতায়াত সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর সীমান্ত
এলাকা হয়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।
তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিয়া মো. নাছির মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ডাম্পেরবাজার সেতুর সামান্য কাজ বাকি আছে। মৈত্রী সেতুর কাজ আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে শেষ করা হবে। বিগত বন্যায় মৈত্রী সেতুর একাধিক পিলার ভেঙে অনেক নির্মাণসামগ্রী তলিয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা কাজ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’
এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৈত্রী সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ডাম্পেরবাজার সেতুর কাজও শেষ হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অসমাপ্ত কাজের প্রাক্কলন তৈরি করে প্রকল্প অফিসে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক প্রাক্কলনটি ফেরত পাঠিয়েছেন। ফের তা সংশোধন করে পাঠানো হবে।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে থাকতেন রিকশাচালক রাজু। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের
০৭ জুলাই ২০২৫
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
৪ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
৪ ঘণ্টা আগেমেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রতিদিনই শহরের রাস্তায় লেগে আছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।
জানা গেছে, দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল উপজেলা ফুলবাড়ী। জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলবাড়ী উপজেলা শহর দিয়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। তবে ফুলবাড়ী হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও আজও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের ওপরই। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় ও নৈশকোচ কাউন্টারের সামনে এবং বটতলি মোড়ে সড়কের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায় পৌর শহর দিয়ে যাওয়া দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলবাড়ী শহরের অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।
ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ জন। আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘যানজটের কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের যেখানে-সেখানে সড়কের ওপর গাড়ি থামায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। কষ্টটা আমাদেরই পোহাতে হয়। একটা টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে যেত।’
শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো জায়গা সংকটে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্টান্ড শাখার সভাপতি মহসীন আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে আমাদের পক্ষে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়, তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু জটিলতা আছে অনেক। কারণ, দূরপাল্লার কোচগুলোর দাঁড়ানোর কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।’

উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত। ফলে প্রতিদিনই শহরের রাস্তায় লেগে আছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ মাসে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে।
জানা গেছে, দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল উপজেলা ফুলবাড়ী। জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী হয়ে ঢাকাগামী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলবাড়ী উপজেলা শহর দিয়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। তবে ফুলবাড়ী হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও আজও উপজেলার পৌর শহরে নির্মাণ হয়নি কোনো বাস টার্মিনাল। ফলে শহরের যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো এবং মালবাহী ট্রাকগুলো থেকে পণ্য আনলোড করা হয় সড়কের ওপরই। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় সড়ক পারাপারে পথচারীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় ও নৈশকোচ কাউন্টারের সামনে এবং বটতলি মোড়ে সড়কের ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায় পৌর শহর দিয়ে যাওয়া দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলবাড়ী শহরের অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।
ফুলবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৩ জন। আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘যানজটের কারণে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। শহরের যেখানে-সেখানে সড়কের ওপর গাড়ি থামায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। কষ্টটা আমাদেরই পোহাতে হয়। একটা টার্মিনাল হলে এই ভোগান্তি অনেকটা কমে যেত।’
শিক্ষক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় পৌর শহরের ঢাকা মোড় (শাপলা চত্বর) থেকে উর্বশী সিনেমা হল পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো জায়গা সংকটে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় রয়েছে। ওইসব কাউন্টারে বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। ফলে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে এর ভয়াবহতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ফুলবাড়ী স্টান্ড শাখার সভাপতি মহসীন আলী সরকার বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব এক একর জায়গা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকার কারণে আমাদের পক্ষে বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ওই জায়গায় সরকার যদি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়, তবে যানজটসহ সড়ক দুর্ঘটনা ও শহরের যত্রতত্র দূরপাল্লার যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু জটিলতা আছে অনেক। কারণ, দূরপাল্লার কোচগুলোর দাঁড়ানোর কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তারা পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় যেতে চায় এবং কাউন্টার করে দিতে বলে। কিন্তু কাউন্টার করা ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে, যদি কখনো কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে এটা করা সম্ভব হবে।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে থাকতেন রিকশাচালক রাজু। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের
০৭ জুলাই ২০২৫
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
৪ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
৪ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
গত সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানের নাম রয়েছে। এদিকে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে তাঁর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। এদিকে বিষয়টি এখন ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
তাঁরা জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাঁদের বাবার নাম মনছুর আহমেদ। তিনি মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
গত সোমবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানের নাম রয়েছে। এদিকে কয়েক মাস আগে জামায়াত থেকে ওই আসনে তাঁর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও দুজনই জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি তাঁদের। এদিকে বিষয়টি এখন ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে থাকতেন রিকশাচালক রাজু। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের
০৭ জুলাই ২০২৫
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
৪ ঘণ্টা আগে
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
৪ ঘণ্টা আগে
ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়...
৪ ঘণ্টা আগেঅনলাইন ট্রেডিং সাইট
মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা

ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লিনো ইমেক্সে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রতারণার শুরু সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে। প্রায় চার মাস আগে মালয়েশিয়াপ্রবাসী আশিক (২২) নামের এক যুবক গ্রামের দুই তরুণ—নিরব হোসেন ও আকাশ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আশিক তাঁদের জানান, ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে টাকা রাখলে প্রতিদিন শতকরার ভিত্তিতে লাভ পাওয়া যায়। ১০০ টাকায় দৈনিক ৪ টাকা লাভ। এমন লোভনীয় প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে নিরব ও আকাশ কাজ শুরু করেন এবং কিছু টাকা লাভও তোলেন। এরপর তাঁরা গ্রামের আরও পাঁচজনকে নিয়ে মোট সাতটি দল তৈরি করে এই ‘লাভজনক’ স্কিম দ্রুত ছড়িয়ে দিতে থাকেন।
এই চক্রের প্রলোভনে পড়ে সদর উপজেলার বোয়ালিয়া, শ্রীকোল, নেহালপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া বড়শলুয়াসহ আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ নিরব ও আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা জমা দিতে থাকেন। হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এই দুই হোতা বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন।
জানা যায়, শুধু নিরবের গ্রুপেই সদস্যসংখ্যা ছিল ২১৮ জন। নিজেদের বিনিয়োগ এবং অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া কমিশন মিলিয়ে নিরব ও আকাশ প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতেন, যা দেখে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ আরও বেশি আকৃষ্ট হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালিয়া গ্রামের এক কৃষক জানান, প্রথমে বিশ্বাস না হলেও গ্রামের অনেকের লাভ দেখে তিনি হালের গরু বিক্রি করে এবং নিজের জমানো টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ওই সাইটে দিয়েছিলেন। এখন সাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব হারিয়েছেন।
একই গ্রামের কালাম নামের একজন বলেন, ‘টাকা দ্বিগুণ হওয়ার আশায় উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পাখি ভ্যানটি বিক্রি করে সেই টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন আমি পথের ফকির।’ ইজিবাইক চালক মিজানুর ছোট ভাইয়ের কথায় ১৮ হাজার টাকা জমা করে এখন বাকরুদ্ধ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু নেহালপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামেরই দুই শতাধিক ব্যক্তি ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে ৬ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন। এ ছাড়া শ্রীকোল, নেহালপুর, কুন্দিপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া ও বড়শলুয়ার অন্তত দুই শ পরিবার বিভিন্ন পরিমাণে বিনিয়োগ করেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষজন—কেউ হালের গরু, গাভি, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে, কেউ এনজিও বা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, আবার কেউ-বা জমি বন্ধক রেখে এই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।
গত সোমবার সকালে যখন সাইটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন গ্রামজুড়ে নেমে আসে হাহাকার। মান-সম্মানের ভয় এবং পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ভুক্তভোগী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের বলেন, ‘নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে অসচেতনভাবে এই অনলাইন সাইটে টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না। নেহালপুর ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

ক্লিনো ইমেক্স (Cleano IMEX) নামক একটি অনলাইন ট্রেডিং সাইটে বিনিয়োগ করে সব খুইয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবার। দ্বিগুণ মুনাফার লোভে ধারদেনা, চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ করেছিল পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লিনো ইমেক্সে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রতারণার শুরু সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে। প্রায় চার মাস আগে মালয়েশিয়াপ্রবাসী আশিক (২২) নামের এক যুবক গ্রামের দুই তরুণ—নিরব হোসেন ও আকাশ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আশিক তাঁদের জানান, ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে টাকা রাখলে প্রতিদিন শতকরার ভিত্তিতে লাভ পাওয়া যায়। ১০০ টাকায় দৈনিক ৪ টাকা লাভ। এমন লোভনীয় প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে নিরব ও আকাশ কাজ শুরু করেন এবং কিছু টাকা লাভও তোলেন। এরপর তাঁরা গ্রামের আরও পাঁচজনকে নিয়ে মোট সাতটি দল তৈরি করে এই ‘লাভজনক’ স্কিম দ্রুত ছড়িয়ে দিতে থাকেন।
এই চক্রের প্রলোভনে পড়ে সদর উপজেলার বোয়ালিয়া, শ্রীকোল, নেহালপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া বড়শলুয়াসহ আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ নিরব ও আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা জমা দিতে থাকেন। হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এই দুই হোতা বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন।
জানা যায়, শুধু নিরবের গ্রুপেই সদস্যসংখ্যা ছিল ২১৮ জন। নিজেদের বিনিয়োগ এবং অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া কমিশন মিলিয়ে নিরব ও আকাশ প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতেন, যা দেখে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ আরও বেশি আকৃষ্ট হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালিয়া গ্রামের এক কৃষক জানান, প্রথমে বিশ্বাস না হলেও গ্রামের অনেকের লাভ দেখে তিনি হালের গরু বিক্রি করে এবং নিজের জমানো টাকাসহ মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ওই সাইটে দিয়েছিলেন। এখন সাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সব হারিয়েছেন।
একই গ্রামের কালাম নামের একজন বলেন, ‘টাকা দ্বিগুণ হওয়ার আশায় উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পাখি ভ্যানটি বিক্রি করে সেই টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন আমি পথের ফকির।’ ইজিবাইক চালক মিজানুর ছোট ভাইয়ের কথায় ১৮ হাজার টাকা জমা করে এখন বাকরুদ্ধ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু নেহালপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামেরই দুই শতাধিক ব্যক্তি ‘ক্লিনো ইমেক্স’ সাইটে ৬ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন। এ ছাড়া শ্রীকোল, নেহালপুর, কুন্দিপুর, হিজলগাড়ি, বলদিয়া ও বড়শলুয়ার অন্তত দুই শ পরিবার বিভিন্ন পরিমাণে বিনিয়োগ করেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষজন—কেউ হালের গরু, গাভি, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে, কেউ এনজিও বা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, আবার কেউ-বা জমি বন্ধক রেখে এই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।
গত সোমবার সকালে যখন সাইটটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন গ্রামজুড়ে নেমে আসে হাহাকার। মান-সম্মানের ভয় এবং পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ভুক্তভোগী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জামাল আল নাসের বলেন, ‘নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও অনেকে অসচেতনভাবে এই অনলাইন সাইটে টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ক্ষেত্রে আমরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না। নেহালপুর ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শাপলা ভবনের তৃতীয় তলার ৯ নম্বর সেলে থাকতেন রিকশাচালক রাজু। আর পাশের ৮ নম্বর সেলেই থাকতেন ছাত্রনেতা আখতার হোসেন। সরকারের পতনের পর মুক্তি পান সবাই। আখতার এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব। তবে ভুলে যাননি কারাগারের
০৭ জুলাই ২০২৫
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় জাদুকাটা ও পাটলাই নদের ওপর ১২৯ কোটি টাকা প্রাক্কলনের দুটি সেতুর নির্মাণকাজ সাত বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই সেতুর বিল বাবদ ৮০ ভাগের বেশি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কয়েক দফায়...
৪ ঘণ্টা আগে
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা শহর ফুলবাড়ী। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গড়ে ওঠা জনবহুল এই শহর দিয়ে প্রতিদিন ছুটে চলে শত শত বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষ এখনো একটি নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা যাত্রীছাউনি থেকে বঞ্চিত।
৪ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী থেকে আপন দুই ভাইকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির আজিজুর রহমান।
৪ ঘণ্টা আগে