Ajker Patrika

পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে কৃষক লীগ নেতার হুমকি-ধমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ২২: ১৩
পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে কৃষক লীগ নেতার হুমকি-ধমকি

পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে হুমকি-ধমকি দিয়েছেন রোকনুজ্জামান রোকন নামে স্থানীয় এক কৃষক লীগ নেতা। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। 

আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের বাদ দিয়ে তাঁদের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবা খাতুনকে হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন। 

গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন আজ সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবা খাতুন হাসপাতালে যাননি। এ ছাড়া আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া ৯ কর্মচারীর মধ্যে তিনজন এদিন হাসপাতালে যাননি। আগের দিন কয়েকজন কর্মচারীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন কৃষক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ঠিকাদারের মাধ্যমে সারা দেশে কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। 

দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ জন নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ওয়ার্ড বয় ও আয়াকে পদায়ন করা হয়। গত ২৫ মার্চ তাঁরা যোগদান করেন। 

গতকাল রোববার দুপুরে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, পৌর যুবলীগের নেতা সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী সোহানুর রহমানসহ ১০-১২ জন নেতা-কর্মী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে ওই ৯ জনের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান। তাঁরা দাবি করেন, তাদের পছন্দ অনুযায়ী জনবল নিয়োগ করতে হবে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই নিয়োগ হয়েছে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে। এ ব্যাপারে তার কিছু করার নেই। এতে উত্তেজিত হয়ে দলীয় নেতা কর্মীরা তার সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন। নানা রকম হুমকি-ধমকি দেন। একপর্যায়ে তাঁরা হাসপাতালে মহড়া দেন। এতে হাসপাতালে রোগী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

একপর্যায়ে এই নেতা-কর্মীরা নিয়োগপ্রাপ্তদের খুঁজে খুঁজে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। তাঁদের আর হাসপাতালে না আসার জন্যও বলে দেন তাঁরা। এতে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

পরে পুলিশ গিয়ে নেতা-কর্মীদের বের করে দেন। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে যায়। তবে নেতা-কর্মীদের ভয়ে কেউ কেউ পরদিন আর হাসপাতালে যাননি। 

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবা খাতুন বলেন, ‘এই নিয়োগে আমাদের কোনো হাত নেই। এটা সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ঠিকাদারের মাধ্যমে নিয়োগ। তারপরও যে আচরণ করা হয়েছে, সেটা দুঃখজনক। এটা সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার শামিল। বিষয়টা আমি সিভিল সার্জন স্যারকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, আজ মিটিং থাকায় তিনি হাসপাতালে যেতে পারেননি। নিয়োগ পাওয়া অস্থায়ী তিন কর্মচারীও হাসপাতালে যাননি। তবে তাঁরা কেন হাসপাতালে যাননি তা তিনি জানেন না। 

রাজশাহীর সিভিল সার্জন অবশ্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিপক্ষে। বরং স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে তিনি। সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘এটা আমাদের বিষয় না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি। তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করে নেবে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে আজ বিকেলে উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকনকে ফোন করা হয়। তবে তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন জানিয়ে কথা বলতে চাননি। রাতে আবার যোগাযোগ করা হলে সেখানে যাওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন। সিসি ক্যামেরার ফুটে যেয়ে তাকে দেখা গেছে, এমন কথা জানালে রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শুধু আমাকে দেখা গেছে, নাকি আরও অনেককেই দেখা গেছে? এটা রাজনৈতিক ব্যাপার। রাজনৈতিকভাবেই সমাধান হবে।’ 

হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাঙ্গামার বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির দুর্গাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শাকিল খান বলেন, ‘এ রকম একটি ঘটনার কথা শুনেছি। তবে ছাত্রলীগের কেউ ছিল কি না সেটি আমি জানি না।’ সোহানুর রহমানের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তার বাড়ি উপজেলা সদরেই। ছাত্রলীগের কোনো পদে নেই। ছাত্রলীগের সমর্থক হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চিত্রনায়ক সালমান শাহর হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
আজ বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে সালমান শাহর ভক্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে সালমান শাহর ভক্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চিত্রনায়ক সালমান শাহর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তরুণ প্রজন্মের আইডল চিত্রনায়ক সালমান শাহর হত্যা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাঁর হত্যার রহস্য এখনো উন্মোচন করা হয়নি।

বক্তারা জোর দাবি জানান, এখন সময় এসেছে প্রকৃত তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা এবং কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা।

চুয়াডাঙ্গা সালমান শাহ ভক্তকুলের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নাফিসা সুরভি। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিরণ উর রশিদ শান্ত প্রধান অতিথি হিসেবে এবং শাহাবুদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। এ সময় সালমান শাহর বিপুলসংখ্যক ভক্ত উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ককে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকার ইস্কাটনে তাঁর নিজ বাড়িতে কৌশলে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাঁর মা নীলা চৌধুরী মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করেন। এই হত্যা মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরাসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে কষ্টিপাথরের তৈরি শিবলিঙ্গসহ আটক ৩

সিরাজগঞ্জ ও তাড়াশ প্রতিনিধি
কষ্টিপাথরের তৈরি শিবলিঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত
কষ্টিপাথরের তৈরি শিবলিঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার দবিরগঞ্জ গ্রামে অভিযান চালিয়ে একটি মূল্যবান কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ উদ্ধার করেছে র‍্যাব। শিবলিঙ্গটি বিদেশে পাচারের চেষ্টার অভিযোগে তিনজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।

আটক করা তিনজন। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা তিনজন। ছবি: সংগৃহীত

আজ শনিবার (১ নভেম্বর) র‍্যাব-১২-এর পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। র‍্যাব-১২ সদর কোম্পানির একটি আভিযানিক দল গতকাল (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার দবিরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা পলাতক আসামি হামিদুর রহমান ওরফে লাবুর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। ওই বাড়ি থেকে মূল্যবান কষ্টিপাথরের তৈরি শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করা হয়।

এ সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ভেংরী গ্রামের মৃত সাইদুল ইসলামের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম বাবলু (৫২), দবিরগঞ্জ গ্রামের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম (৫২) এবং একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মো. কফিল উদ্দিন (৪৮)।

তাঁদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল এবং তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সলঙ্গা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আসামিদের পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
নিহত মো. শিহাব। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. শিহাব। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। চলতি বছর এসএসসি পাস করে সে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে সে মারা যায়। এর আগে গত ২০ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকে সে অচেতন অবস্থায় ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়স্বজন তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের আঁধারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। এ সময় তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।

একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। পরে তাকে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। তারপর স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুতর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। সেখানেই সে মারা যায়।

শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিমের (৩২) নাম উল্লেখসহ এবং আরও ৮-৯ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন। তবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত তাঁদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তিনি তার মৃত্যুর খবর শুনেছেন। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর হামলার ঘটনায় আগেই করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮ দফা দাবিতে সিলেট বিভাগে রেলপথ অবরোধ, আটকা পড়েছে পারাবত ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৬
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে পারাবত এক্সপ্রেস আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে পারাবত এক্সপ্রেস আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আখাউড়া-সিলেট রেল সেকশনে বন্ধ থাকা সব রেলস্টেশন পুনরায় চালু করাসহ ৮ দফা দাবিতে আজ শনিবার (১ নভেম্বর) সিলেট বিভাগের রেলপথ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এই অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস আটকা পড়েছে।

কুলাউড়া স্টেশনমাস্টার মো. রোমান আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন’ আন্দোলনের ব্যানারে সিলেট বিভাগে রেলপথ অবরোধ করা হয়েছে। অবরোধকারীদের বাধার মুখে সিলেটগামী পারাবত ও চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস আটকা পড়েছে।

কুলাউড়া রেলস্টেশন অবরোধ করছেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুলাউড়া রেলস্টেশন অবরোধ করছেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন রেলস্টেশন অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। এর ফলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস প্রথমে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন ও পরে কুলাউড়া স্টেশনে আটকে দেওয়া হয়।

একই সঙ্গে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পাহাড়িকা এক্সপ্রেস মাইজগাঁও রেলস্টেশনে আটকে দেওয়া হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল স্টেশনমাস্টার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা কিছু সময় পারাবত এক্সপ্রেস আটকে রেখেছিল, পরে ছেড়ে দিয়েছে।’

দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ‘৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন কমিটি’ সিলেট-আখাউড়া রেলপথের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ রেলপথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। তাদের প্রধান দাবিগুলো হলো: সিলেট-ঢাকা এবং সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন আন্তনগর ট্রেন চালু করা। সিলেট-আখাউড়া সেকশনের রেলপথ সংস্কার করে ডুয়েলগেজে উন্নীত করা। সিলেট অঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলস্টেশনগুলো এবং সিলেট-আখাউড়া লোকাল ট্রেন পুনরায় চালু করা। কুলাউড়া স্টেশনে টিকিটের বরাদ্দ বাড়ানো ও কালোবাজারি বন্ধ করা।

সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর কালনী ও পারাবত এক্সপ্রেসের আজমপুর স্টেশন-পরবর্তী যাত্রাবিরতি বন্ধ করা। সব ট্রেনে নতুন ইঞ্জিন ও যাত্রী অনুপাতে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা।অবরোধকারীরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের দাবিগুলো যুক্তিসংগত, কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা সিলেট বিভাগের রেলপথ অবরোধের ডাক দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত