Ajker Patrika

এক বট গাছেই অর্ধশতাধিক মৌচাক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯: ৫৩
এক বট গাছেই অর্ধশতাধিক মৌচাক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি বট গাছেই প্রায় ১৫ বছর ধরে বাসা বেঁধে অবস্থান করে অর্ধশতাধিক মৌচাক। বিশাল আকৃতির বট গাছটির ডালে সারিবদ্ধভাবে বাসা বাঁধার এমন দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। দৃশ্যটি চোখে পড়বে কানসাট-ভোলাহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের ভোলাহাট উপজেলার সোনাজল এলাকায়। 

ফলিমারি বিলের রাস্তার ধারে যেতেই চোখে পড়ে পাইকড়ের গাছ। আর এই গাছেই অর্ধশতাধিক বাসা বেঁধেছে মৌমাছিরা। একসঙ্গে এতগুলো মৌচাক দেখার জন্য প্রতিদিনই এই গাছটির কাছে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। কেউ কেউতো আবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে এক-দুই-তিন করে গুনতে শুরু করেন চাকের সংখ্যা। তবে আতঙ্কও রয়েছে কামড়ের। যার কারণেই সাধারণ মানুষ গাছে উঠে মধু সংগ্রহ করতে পারে না। তবে এ নিয়ে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় কৃষি বিভাগ। 

জানা যায়, ফলিমারির বিশাল বিলে এখন সরিষার চাষাবাদ করছেন কৃষকেরা। ওই সরিষার খেত থেকে মৌমাছিরা মধু আহরণ করে নিয়ে আসে। ফলে মৌমাছির গুনগুন ধ্বনিতে গাছ তলা ও আশপাশ মুখরিত হয় সব সময়। 

একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি শাহনেওয়াজ বলেন, ‘প্রতিদিন চাকরির সুবাদে ভোলাহাট বড় গেছি এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। বট গাছটির নিচে গেলেই মৌমাছির গুনগুনানিতে দৃষ্টি আটকে যায়। শীতকালে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় মাসের জন্য এমন চিত্র দেখা যায়। 

কলেজশিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠের মধ্যে এক গাছে অর্ধশত মৌচাক দেখে প্রকৃতি আছে বলে মন জুড়িয়ে যায়। এই দৃশ্য দেখতে খুবই ভালো লাগে। না দেখলে বলে বোঝাতে পারব না দৃশ্যটি দেখতে কত সুন্দর।’ তিনি মৌচাকগুলো সংরক্ষণে বট গাছটি অসাধু চক্রের হাত থেকে রক্ষার দাবি জানান। 

স্থানীয় কৃষক আসাদুল ইসলাম জানান, রাস্তার পাশে এতগুলো মৌমাছি চাক বানিয়ে বাসা বাঁধলেও কোনো দিন কারও ক্ষতি করেনি। তবে সাধারণ মানুষ চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে পারে না। যারা প্রকৃত মৌয়ালি শুধু তাঁরায় কৌশলে মধু সংগ্রহ করেন। 

রংপুর থেকে আসা মৌয়ালি এহসান আলী বলেন, আগুনের ধোঁয়া দিয়ে বিশেষ কায়দায় মধু সংগ্রহ করতে হয়। এখানকার মৌমাছির মধুর সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। মৌমাছিগুলো আশ্বিন মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত থেকে চলে যায়। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সেভ দ্যা নেচার’র প্রধান সমন্বয়ক রবিউল হাসান ডলার বলেন; ‘একটি মাত্র গাছে এত মৌচাক সাধারণত খুব কমই দেখা যায়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মৌমাছিদের ভূমিকা অপরিসীম।’ 

ভোলাহাট উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুলতাল আলী বলেন, ‘রাস্তার ধারের পাইকোড়ের গাছটিতে ৫০-৬০টি মৌচাক রয়েছে। যত টুক জেনেছি ১৫ বছর ধরে এই গাছে মৌমাছিরা বাসা বাঁধে। ফসলের পরাগায়নে মৌমাছির ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলায় এবার মাঠে ৯০০ মৌ বক্স বসিয়েছে মৌয়ালরা।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত