Ajker Patrika

রাজশাহী বোর্ডে ‘ফেল’ থেকে ‘এ প্লাস’ পেল ১৮ শিক্ষার্থী

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ২২
রাজশাহী বোর্ডে ‘ফেল’ থেকে ‘এ প্লাস’ পেল ১৮ শিক্ষার্থী

সাদিকুন নাহার এসএসসি পরীক্ষা খুব ভালো দিয়েছিল। পরীক্ষায় ভালো ফল প্রকাশের অপেক্ষা ছিল তার, কিন্তু ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর দেখা গেল, পদার্থবিজ্ঞানে সে ফেল করেছে। মানতে না পেরে সাদিকুন নাহার বোর্ড চ্যালেঞ্জ করেছিল। খাতা পুনঃনিরীক্ষায় দেখা গেল সাদিকুন পদার্থবিজ্ঞানে পেয়েছে ‘এ প্লাস’। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ১৮ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে ফেল থেকে এ প্লাস পেয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের খাতা পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা গেছে, এবার মোট ১১৬ জন শিক্ষার্থীর ১২০টি বিষয়ের ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। ফেল থেকে পাস করেছে ৭৯ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৮ জন কোনো বিষয়ে ফেল থেকে পেয়েছে এ প্লাস। এ গ্রেড থেকে ফল পাল্টে উচ্চতর গ্রেড পেয়েছে ২২ জন। এ মাইনাস থেকে উচ্চতর গ্রেড পেয়েছে ১২ জন, বি গ্রেড থেকে ৭ জনের ফল পাল্টে উচ্চতর গ্রেড হয়েছে। 

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফল প্রকাশের পর এবার এসএসসি পরীক্ষার ৯ হাজার ৪৪৩টি খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করে ৮ হাজার ৩৮৭ জন শিক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৪৭৭টি পদার্থবিজ্ঞান খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন পড়ে। এ ছাড়া ভূগোল ও পরিবেশের ১ হাজার ২৮১টি, উচ্চতর গণিতের ৩১৮টি, রসায়নের ২ হাজার ১৭০টি, জীববিজ্ঞানের ৫৭৭টি, পৌরনীতি ও নাগরিকতার ১০২টি, অর্থনীতির ৬৭টি, ব্যবসায় উদ্যোগের ৬৯টি, হিসাববিজ্ঞানের ৩৫৫টি, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংয়ের ৩৭৯টি এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতার ৬৪৮টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন জমা পড়ে। বেশির ভাগ খাতার ফল একই থাকলেও ১১৬ জনের ১২০টি বিষয়ের পরীক্ষার ফলাফল পাল্টে গেছে। 

প্রসঙ্গত, এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর চারঘাটের বেলঘরিয়া আবদুস সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুইটি খাতুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। গণিতে ফেল এসেছিল তার। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের ভাষ্যমতে, সুইটি মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। আত্মহত্যা করায় তার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন কেউ করেনি। তবে তার ফেল নিয়ে আমাদেরও একটু সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, পরীক্ষকেরা যত্ন নিয়েই খাতা পরীক্ষণ করেন। তা-ও ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে বলেই খাতা পুনঃনিরীক্ষণে ফল পাল্টায়। তাই পরীক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার।

একই মন্তব্য করছেন শিক্ষাবিদেরাও। রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, ‘যারা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে, তাঁদের মধ্যে অল্প কিছু শিক্ষার্থীর ফল পাল্টায়। কয়েক হাজার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন পড়ে। অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীরা আবেদন করে। কিন্তু দ্বিতীয়বার খাতা দেখা হয় না। শুধু নম্বর ঠিকমতো যোগ করা হয়েছে কি না, সেটুকু দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পয়সার অপচয় হলো। বেশির ভাগেরই লাভ হয় না।’ 

সাবেক এই অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘প্রধান পরীক্ষক বা শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার অপারেটর ভুল করলে তার জন্য শিক্ষার্থীরা কেন টাকা গুনবে? তাই আমি মনে করি, ফল ঘোষণার আগেই বোর্ডই খাতা পুনঃনিরীক্ষণ করবে। তাহলে ভুলটা কম হবে। এটা যদি বোর্ড না-ই পারে, তাহলে বিনা পয়সায় খাতা পুনঃনিরীক্ষণ করতে হবে। যাঁরা ভুল করবেন, তাঁদের বড় শাস্তি দিতে হবে।’ 

এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো পরীক্ষক ভুল করলে আমরা পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজ থেকে তাঁকে দুই বছর বা তার বেশি বিরত রাখতে পারি। এর বেশি কিছু আমরা পারি না।’ 

শিক্ষার্থীদের টাকায় পুনঃনিরীক্ষণ আবেদন করতে হয়—এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আন্তবোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ের জন্য ১২০ টাকা নেওয়া হয়। এই টাকা শিক্ষার্থীরা ফেরত পায় না। এটা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত