দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে নারী এসআইয়ের মামলা

রাজশাহী: রাজশাহীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আদালতে মামলা করেছেন পুলিশের এক নারী এসআই (৩৫)। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে তিনি রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, পুলিশের আরেক এসআই ওবাইদুল কবির সুমন (৩৫) ও এসআই পলি আক্তার (৩০)। এসআই ওবাইদুল কবির মামলার বাদী এসআইয়ের স্বামী। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বোম ডিসপোজার ইউনিটে কর্মরত। আরেক অভিযুক্ত এসআই পলি কর্মরত ঢাকার নবাবগঞ্জ থানায়।

মামলার বাদী পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) রাজশাহী মহানগর শাখায় কর্মরত। তাঁর বাবার বাড়ি রাজশাহী। এসআই ওবাইদুলের বাড়ি নরসিংদী। নারী এসআইয়ের পক্ষে রাজশাহী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মোখলেসুর রহমান স্বপন আদালতে মামলার নথিপত্র উপস্থাপন করেন।

রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন। তিনি আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে মামলার প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিশি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে এসআই ওবাইদুলের সঙ্গে ওই নারী এসআইয়ের বিয়ে হয়। এরপর থেকে তিনি যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে তিনি এসআই পলি আক্তারের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। এরপর থেকে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। তিনি স্ত্রীকে চাকরি ছাড়ার জন্যও চাপ দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে ওই নারী এসআই ঢাকা থেকে বদলি হয়ে রাজশাহী চলে আসেন। তারপর থেকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন এসআই ওবাইদুল।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ওই নারী এসআইকে হেয় প্রতিপন্ন করতে তাঁর নামে ভুয়া অশ্লীল ছবি ও ভিডিও বিভিন্নজনকে পাঠিয়েছেন এসআই ওবাইদুল কবির। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমোর মাধ্যমে তিনি এসব পাঠিয়েছেন এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। নানাভাবে বারণ করা সত্ত্বেও এসআই ওবাইদুল এসব থেকে বিরত থাকেননি। এর ফলে ওই নারী এসআই এবং তার পরিবারের সদস্যরা অপমান-অপদস্থ এবং হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে ওই নারী এসআই স্বামীসহ দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৩/২৪/২৫/২৬/২৯/৩১/৩৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায়য পাঁচজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সাক্ষী হাজির করা হবে বলেও মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে তিনি এখনো কোনো নথিপত্র পাননি। মামলা হলে দু–একদিনের মধ্যে নথি আসতে পারে। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।