Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জ

নির্মাণাধীন সেতু ঝুঁকিতে ফেলে চলছে বালু তোলা

  • মহানন্দা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর পাশ থেকেই বালু তোলা হচ্ছে।
  • স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলামের দিকে অভিযোগের তির।
  • বালু তোলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার শহিদুলের।
  • ঠিকাদার আবদুল মান্নান বলছেন, ইউপি চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়েই বালু তুলছেন।
আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে মহানন্দা নদীর ওপর চলছে সেতুর নির্মাণকাজ। কিন্তু সেতুর পাশের এলাকায় খননযন্ত্র বসিয়ে অবাধে তোলা হচ্ছে বালু। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন সেতুটি। সম্প্রতি উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে মহানন্দা নদীর ওপর চলছে সেতুর নির্মাণকাজ। কিন্তু সেতুর পাশের এলাকায় খননযন্ত্র বসিয়ে অবাধে তোলা হচ্ছে বালু। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন সেতুটি। সম্প্রতি উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে মহানন্দা নদীর ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে সেতু। সেই সেতুর পাশ থেকেই বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ও ঠিকাদার আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে। এভাবে বালু তোলায় নদী-তীরবর্তী বাসিন্দারা যেমন ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে, পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়েছে নির্মাণাধীন সেতুটিও।

এ নিয়ে গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দারা। তবে ঠিকাদার দাবি করেছেন, বৈধভাবেই নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে কারও ক্ষতি হবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউএনওর কাছে জমা পড়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গোমস্তাপুরের বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রাম দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীতীরের বহু মানুষ ইতিমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে বাড়িঘর হারিয়েছে। প্রতিবছর বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ছে তারা। এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে মহানন্দার ওপর নির্মাণাধীন সেতুর পাশ থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর পাড় দুর্বল হয়ে ভয়াবহ ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হুমকি বেড়েছে নদীতীরের বাড়িঘর ও কৃষিজমির। বালু তোলার প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি।

উল্টো প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা-মামলার হুমকি দিচ্ছেন চেয়ারম্যানের লোকজন।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, ভবানীপুর এলাকায় মহানন্দার ওপর নির্মাণাধীন সেতুর ঠিক পাশের এলাকা থেকে ভারী যন্ত্রপাতির মাধ্যমে বালু তোলা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও মান্নান ঠিকাদার দুইজনে মিলে ফহারাম ঘাটের সেতুর পাশ থেকে বালু তুলে বিক্রি করছেন। তাঁরা নাকি ডিসি অফিস থেকে কাগজপত্র (টেন্ডার) করে এনে বালু বৈধভাবে তুলছেন। কিন্তু এলাকাবাসী তো ঝুঁকিতে পড়ে গেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এরপর খুদে বার্তা পাঠানো হলে তিনি কলব্যাক করে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে বালু তুলছি না। এটা মান্নান ঠিকাদার ও প্রশাসন জানে। ঠিকাদার সেতুর কাজ করার জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে বালু তুলছেন। তবে কত দিন কী পরিমাণে বালু তুলতে পারবে, তা আমার জানা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই মনে করছে, এগুলো চেয়ারম্যানের লোকজন করছে। কিন্তু এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

নির্মাণাধীন সেতুর ঠিকাদার আবদুল মান্নান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের দপ্তরে টাকা জমা দিয়ে বৈধভাবে বালু তুলছি। জুন মাস পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজার সেফটি বালু তুলতে পারব। কিন্তু এলাকাবাসী আমাকে বাধা দিচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে নিয়ে আমি কাজটি করছি। ইতিমধ্যে মে মাসে বালু তোলার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি।’

গোমস্তাপুরের ইউএনও জাকির মুন্সি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা মঙ্গলবার আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি সেটা পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আইআরজিসির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন খামেনি

পরবর্তী লক্ষ্য কোন দেশ, জানাল ইসরায়েল

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন ফ্রন্ট গড়তে ইরানের কাছে অর্থ চাইলেন জেনারেল ডাল্লা

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হত্যার ইসরায়েলি ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিল তেহরানের গোয়েন্দারা

হামলার মুখে নাগরিকদের নিরাপদ রাখে ইসরায়েলের ‘মামাদ’ কৌশল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত