Ajker Patrika

সৌদি আরবেই ওবাইদুলকে সমাহিত করতে চায় পরিবার

নাটোর ও নলডাঙ্গা প্রতিনিধি
সৌদি আরবেই ওবাইদুলকে সমাহিত করতে চায় পরিবার

আর্থিক অসচ্ছলতা নয়, এলাকার প্রবাসীদের দেখে প্রভাবিত হয়ে, উন্নত জীবনযাপনের জন্য সৌদি আরবে গিয়েছিলেন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের ওবাইদুল হক (৩৪)। সৌদি আরবে যে কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন, সেখানে অগ্নিকাণ্ডে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। 

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে একটি ফার্নিচার কারখানায় এ দুর্ঘটনার পর আজ শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। তবে নিহতদের তালিকার মধ্যে ওবাইদুলের নাম ও পাসপোর্ট নম্বর না থাকলেও সেখানে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ও নিহতের পরিবার।

পরিবারের দাবি, ওবাইদুলের মরদেহ ‘পবিত্রভূমি’ সৌদি আরবেই সমাহিত করা হোক। 

নাটোর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দুরে হালতি বিলের কাছে অবস্থিত খাজুরা চাঁদপুর গ্রাম। আজ দুপুর ১২টায় সরেজমিনে নিহত ওবাইদুলের বাড়িতে দেখা যায়, ছেলের একটি ফ্রেমে বাঁধানো ছবি কোলে নিয়ে নিষ্পলক চোখে চেয়ে আছেন শোকাতুর মা রাহেলা বিবি। পাশে বসা বড় ভাই মজনু। 

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাত ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন ওবাইদুল। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছিলেন তিনি। এলাকার বহু লোককে দেশের বাইরে গিয়ে জীবন মান পরিবর্তন করতে দেখে তাঁর আগ্রহ জন্মে বিদেশ যাওয়ার। ২০১৯ সালে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে প্রথমে একটি কোম্পানিতে কাজ নেন ওবাইদুল। কিছুদিন পর সেখান থেকে কাজ নেন একটি ফার্নিচার কারখানায়। চার বছর ধরে সেখানেই কাজ করছিলেন তিনি। শিগগিরই দেশে ফিরে বিয়ে করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। 

গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজে যাওয়ার আগে ভিডিও কলে কথা বলেন মায়ের সঙ্গে। নামাজ শেষে দুপুরে কী খাবেন, তাও জানিয়েছিলেন মাকে। সন্ধ্যার পর দাম্মামের আরেকটি কারখানায় কর্মরত তাঁর মামাতো ভাই ইয়াদুল ফোন করে জানান ওবাইদুলের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের খবর। পরে রাতভর পরিবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ওবাইদুলের সঙ্গে। আজ ভোরে ইয়াদুল জানান ওবাইদুলের মৃত্যুর সংবাদ। 

প্রতিবেশী মকবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছেলেটি স্বভাবে অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র ছিল। তাঁর এভাবে চলে যাওয়াটা আমরা মেনে নিতে পারছি না।’ 

ওবাইদুলের বড় ভাই মজনু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে আদরের ভাই ছিল ওবাইদুল। সে নিজ আগ্রহেই সৌদি আরবে গিয়েছিল। এভাবে সে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যাবে জানলে কোনো দিন তাঁকে পাঠাতাম না।’ 

ছেলের শোকে বাকরুদ্ধ মা রাহেলা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে পবিত্র দেশে। আমি চাই তাঁকে সেখানেই কবর দেওয়া হোক। ছেলে জীবিত থাকতে অনেকবার বলেছে, দেশটা এত সুন্দর ও পবিত্র। তাই সে সেখানেই থাকতে চায়।’ 

খাজুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওবাইদুলের পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা চান ছেলের মরদেহ সৌদি আরবেই সমাহিত করা হোক।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজিনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওবাইদুলের মৃত্যু দুঃখজনক। মরদেহ দেশে আনার জন্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়। এরই অংশ হিসেবে একটি ফর্ম পাঠানো হয়েছে পরিবারের কাছে। তবে আমরা জেনেছি, তাঁর পরিবার চায় সৌদিতেই সমাহিত হোক। আমরা এ ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে শিগগিরই কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত