Ajker Patrika

৩০ বছর পর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর পাবনার ভাঙ্গুড়ার ময়দানদিঘি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন এলাকাবাসী। আজ সোমবার শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে শহীদ মিনারটিতে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা শহীদ মিনারটি সংস্কার করে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপযোগী করা হয়। 

জানা যায়, ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রায় ৩০ বছর আগে উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের ময়দানদিঘি বাজারে সরকারি ভূমিতে নির্মাণ করা হয় একটি শহীদ মিনার। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত শহীদ মিনারটিতে স্থানীয় লোকজন প্রতি বছর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শহীদ মিনারটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। এ ছাড়া এলাকার প্রভাবশালী মহল শহীদ মিনারটির প্রবেশপথসহ জায়গা দখল করে ঘর তোলেন। এতে শহীদ মিনারটিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। 

গত শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দৈনিক আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত শহীদ মিনারটি সংস্কার করে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত করে। দীর্ঘ দিন পর আজ সোমবার শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারটিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খাঁন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপাশা হোসাইন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুর রহমান আসাদ ও ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন মিঠু শহীদ মিনারটিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এদিকে দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর ময়দানদিঘি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মানিক হোসেন বলেন, দীর্ঘ অনেক বছর পর ময়দানদিঘি শহীদ মিনারে ফুল দিতে পেরে তিনি খুব খুশি। বহু আগে তিনি এই শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছিলেন। 

ময়দানদিঘি বাজার সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন মিলন বলেন, দীর্ঘদিন পর ময়দানদিঘি শহীদ মিনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। বাজার সমিতির পক্ষ থেকে তাঁরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। শহীদ মিনারটিতে ফুল দিতে পেরে তাঁর খুব ভালো লাগছে। 

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুর রহমান আসাদ বলেন, ‘খানমরিচ ইউনিয়নে যখন কোনো শহীদ মিনার ছিল না; তখন আমি ওই শহীদ মিনারটি স্থাপন করেছিলাম। দীর্ঘ বছর শহীদ মিনারটি ময়লা-আবর্জনার স্তূপ হয়ে অযত্নে পড়ে ছিল।’ 

তিনি সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কাজের মাধ্যমে শহীদ মিনারটি আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খাঁন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা শহীদ মিনারটি সংস্কার করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপযোগী করা হয়েছে। তিনি নিজে গিয়ে ওই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ মিনারের জায়গা কেউ যদি দখল করে রাখে তবে জমি পরিমাপ করে তা উদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত