Ajker Patrika

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর হামলা, বিচারের দাবিতে ইউএনওকে স্মারকলিপি

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮: ২৫
শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর হামলা, বিচারের দাবিতে ইউএনওকে স্মারকলিপি

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার আম্বইল-গোঁড়তা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পল্লিতে হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে স্মারকলিপি দিয়েছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বগুড়া জেলা শাখা। শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা তাঁদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগে শেরপুর পৌর শিশুপার্কের শহীদ মিনার চত্বর থেকে একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। 

ইউএনও সানজিদা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে জানান, স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, বাসদ বগুড়া জেলার আহ্বায়ক  কমরেড সাইফুল ইসলাম পল্টু, নওগাঁ জেলার আহ্বায়ক কমরেড জয়নাল আবেদীন মুকুল, দিনাজপুর জেলার আহ্বায়ক কিবরিয়া হোসেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নাটোর জেলার সভাপতি রঘুনাথ টেক্কা, বগুড়া জেলার সভাপতি সন্তোষ সিং, স্থানীয় নারীনেত্রী গীতা রানী সিং প্রমুখ।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, ‘এখানে দফায় দফায় হামলা করে নারী-শিশু-পরুষ নির্বিশেষে আহত করা হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তাঁরা কাজে যেতে পারছে না, সন্তানেরা স্কুলে যেতে পারছে না। আদিবাসীরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’ 

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ৮ জানুয়ারি ভবানীপুর ইউনিয়নের আঘইল গ্রামের নিবাসী সন্তোষ সিংয়ের পৈতৃক জমিসহ আম্বইল, গোঁড়তা মৌজার আদিবাসীদের ভোগদখলে থাকা খাসজমি স্থানীয় ভূমিদস্যু সলেমান মাস্টারের নেতৃত্বে জবর দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়। এ সময় আদিবাসী নারী, দিনমজুর, শ্রমজীবী, শিক্ষার্থীদের কেউ রেহাই পাননি। নারী, শিশু, বৃদ্ধদের গুরুতর জখম করে। থানায় জানানোর পর পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এই ঘটনার পর প্রশাসনের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়। 

বক্তারা আরও বলেন, সমঝোতা বৈঠক থেকেই ১০ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং উভয় পক্ষকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু পরদিনই (১১ জানুয়ারি) সকালে পুনরায় বেলতলা মাদ্রাসা মসজিদসহ চারটি মসজিদ থেকে মাইকে একযোগে ঘোষণা দিয়ে, সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে শত শত মানুষকে একত্র করে পাহারারত পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা করা হয়। এরপর থানায় পুনরায় ফোন করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স এসে হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়। আবারও আহতদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে এলাকার আদিবাসী নারী, পুরুষ এখন পর্যন্ত নিরাপত্তাহীন-মানবেতর জীবন যাপন করছে। আদিবাসী পল্লিতে এক ভয়াবহ আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাড়িতে অবরুদ্ধ। স্কুলে, বাজারে, জমিতে ও কর্মস্থলে যেতে পারছে না। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। 

এ সময় বক্তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, বিচার, ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসাসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান। পাশাপাশি একই দাবিতে ২৪ জানুয়ারি বগুড়ার সাতমাথায় বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত