Ajker Patrika

আমের ট্রেনে গরু-ছাগল তুলেও এড়ানো যাচ্ছে না লোকসান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৩, ২০: ৪১
আমের ট্রেনে গরু-ছাগল তুলেও এড়ানো যাচ্ছে না লোকসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে চালু করা হয় ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল’ ট্রেন। কিন্তু চাষি ও ব্যবসায়ীদের এই ট্রেনের প্রতি আগ্রহ কম। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। লোকসান কমাতে ট্রেনে কোরবানির আগে গরু-ছাগল পরিবহনেরও ব্যবস্থা করা হয়। এরপরও এড়ানো যাচ্ছে না লোকসান। এ বছরও লোকসান গুনেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, লাভ-লোকসান কোনো বিষয় নয়। চাষি ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই ট্রেন চালু করা হয়।

তবে চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ট্রেনে তাঁদের তেমন আগ্রহ নেই। কম মূল্যে ট্রেনে আম পরিবহন করা গেলেও স্টেশনে আম আনা-নেওয়ার কারণে পরিবহন খরচ বেড়েই যায়। এতে ঝামেলাও বেশি। 

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা একবার যাওয়া-আসা করতে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের প্রয়োজন হয় প্রায় এক হাজার লিটার ডিজেল। রেলের অন্য সব খরচ বাদ দিলেও শুধু ডিজেল খরচও ওঠে না ট্রেনটি চালিয়ে।

রেল কর্মকর্তারা জানান, সক্ষমতা ও প্রত্যাশার চেয়ে কম আম এবং পশু পরিবহন হওয়ার কারণে ট্রেনটি চালিয়ে প্রতিবছরই লোকসান গুনতে হচ্ছে রেলওয়েকে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজারের কার্যালয় জানিয়েছে, প্রথমবার ২০২০ সালের ৫ জুন থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ৪৬ দিন চলেছে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। ওই বছর ট্রেনে ১ হাজার ২০০ মেট্রিকটন আম পরিবহন হয়। প্রতি লিটার ডিজেলের তৎকালীন মূল্য ৬৫ টাকা ধরলে ৪৬ দিনে শুধু তেল খরচই হয় প্রায় ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর বিপরীতে আম পরিবহন করে রেলের আয় হয় ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫৩৬ টাকা। লোকসান দাঁড়ায় প্রায় ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৬৪ টাকা। ওই বছর ট্রেনে কোরবানির পশু পরিবহন হয়নি।

পরের বছর ২০২১ সালের ২৭ মে থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ৫০ দিন চলে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। ৮০ টাকা লিটার হিসেবে সে বছর এই ট্রেনে তেল খরচই হয় ৪০ লাখ টাকা। এর বিপরীতে কোরবানির পশু ও আম পরিবহন করে আয় হয়েছিল ২৭ লাখ ২২ হাজার ৯৬৮ টাকা। ফলে রেলের আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৩২ টাকা। ওই বছর ট্রেনে ২ হাজার ২৩৫ মেট্রিকটন আম পরিবহন হয়েছিল। এ ছাড়া ১৩১টি গরু ও ১১২টি ছাগল পরিবহন করা হয়েছিল।

গত বছর ১৩ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত সাত দিন চলেছিল এই ট্রেন। ৮০ টাকা লিটার হিসেবে এতে ডিজেল খরচই হয় ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার। আর সাত দিনে রেল আয় করেছিল ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৯৪ টাকা। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫ হাজার ৭০৬ টাকা। এ বছর ১৭৯ মেট্রিকটন আম, ৩৬টি গরু ও ১৬০টি ছাগল পরিবহন হয়েছিল।

এ বছর ৮ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ১৮ দিন ট্রেন চলেছে। এ বছর ১০৯ টাকা লিটার হিসেবে ট্রেন চালাতে ডিজেল খরচই হয়েছে ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা। আর আয় হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩৪২ টাকা। ফলে রেলের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৮ টাকা। এ বছর ৩৮২ মেট্রিকটন আম, ৭৮টি গরু এবং ১৬১টি ছাগল পরিবহন হয়েছে।

তিন বছরে ট্রেনটিতে মোট ২৪৫টি গরু ও ৪৩৩টি ছাগল পরিবহন হয়েছে। এতে রেলের আয় হয়েছে মাত্র ২ লাখ ২১ হাজার টাকা। আর চার বছরে পরিবহন হয়েছে ৩ হাজার ৯৯৫ মেট্রিকটন আম। এতে রেল পেয়েছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা। তবে চার বছরে শুধু তেল খরচের হিসাবেই ট্রেনটি চালিয়ে লোকসান হয়েছে ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ টাকা।

ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে সাধারণত সাতটি ওয়াগন থাকে। এসব ওয়াগনে ৩০১ মেট্রিকটন আম পরিবহন করা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রতি কেজিতে ১ টাকা ৩২ পয়সা ও রাজশাহী থেকে ১ টাকা ১৭ পয়সায় ঢাকায় আম নেওয়া যায় এই ট্রেনে। এবার ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত দুটি ওয়াগন যুক্ত করে কোরবানির পশু পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিটি ওয়াগনের জন্য রেলওয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছিল ১১ হাজার ৮৩০ টাকা।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা এলাকার গরুর ব্যাপারী আবদুস সামাদ বলেন, ‘ট্রেনে গরু পরিবহনের সমস্যা আছে। ট্রেনে যেতে হলে গরুকে আগে বাড়ি থেকে অন্য গাড়িতে করে স্টেশনে নিতে হয়। এরপর আবার স্টেশন থেকে অন্য গাড়িতে করে হাটে নিতে হবে। এ ছাড়া চাইলেই দু-একটি গরু নিয়ে যাওয়া যায় না। পুরো বগিই ভাড়া নিতে হবে। এসব ঝামেলা এড়িয়ে ট্রাকে করে সরাসরি বাড়ি থেকে হাটে গরু নেওয়ায় সহজ।’

একই কথা বললেন রাজশাহীর নওদাপাড়া এলাকার আম ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, ‘ট্রেনে কম পয়সায় আম পরিবহন করা গেলেও দুইবার অন্য পরিবহনে আনা-নেওয়ার খরচ বেশি হয়ে যায়। এর চেয়ে সড়কপথে আম পরিবহন করা সহজ। এ জন্য ট্রেনে আমরা যাই না।’

বছর বছর এই ট্রেনের লোকসানের বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘লাভ-লোকসান আমরা বুঝি না। চাষি ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সরকারের ওপর মহল প্রতিবছর এই সেবা চালু করতে বলে। আমরা এটা চালু করি। জনস্বার্থে অনেক খাতেই তো সরকার ভর্তুকি দেয়। এই ট্রেন সার্ভিসটাও অনেকটা সে রকম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধোঁয়া-ধুলায় দূষিত রাজশাহীর বাতাস

  • রাজশাহী শহরে গতকাল বাতাস ছিল দেশের সবচেয়ে দূষিত।
  • যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় এবং নির্মাণকাজে বাড়ছে দূষণ।
  • কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহনের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় ট্রাফিক পুলিশ।
 রিমন রহমান, রাজশাহী
গাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়ে বায়ুদূষণ হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়ে বায়ুদূষণ হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

যানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া আর নির্মাণকাজের ধুলার কারণে দূষিত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাতাস। অথচ ২০১৬ সালে বাতাসে ক্ষতিকর ধূলিকণা কমানোয় বিশ্বসেরার খেতাব পেয়েছিল রাজশাহী শহর। ৯ বছরের ব্যবধানে এখন নিয়মিতই রাজশাহীর বায়ুদূষণের কথা উঠে আসছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের প্রতিবেদনে। গতকাল সোমবারও এখানকার বাতাস ছিল দেশের আট বিভাগীয় শহরের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত।

আইকিউএয়ার বাতাসের মান নির্ধারণে একটি তাৎক্ষণিক সূচক তৈরি করে, যা কোনো নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে। গতকাল দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে বায়ুর মান সূচক সবচেয়ে বেশি ছিল, ১৬৭। তারপরই ছিল খুলনায়, ১৫৭। এ ছাড়া রংপুরে বায়ুর মান সূচক ১৩৭, বরিশালে ১১৪, ময়মনসিংহে ১১৩, ঢাকায় ১০২, সিলেটে ৮২ এবং চট্টগ্রামে ৭৩ রেকর্ড করা হয়েছে।

গবেষকেরা বলছেন, বায়ুদূষণের নানা নিয়ামকের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর হলো অতিক্ষুদ্র কণা, যা পিএম ২.৫ নামে পরিচিত। বাতাসে মিশে থাকা অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা, গাড়ি ও কলকারখানার ধোঁয়া, ইটভাটা ও নির্মাণকাজ থেকে এই কণা তৈরি হয়। রাজশাহীতে এখন ইটভাটাগুলো বন্ধ। কলকারখানাও তেমন নেই। বায়ুদূষণ করছে মূলত যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং শহরজুড়ে চলমান নির্মাণকাজ থেকে তৈরি হওয়া ধূলিকণা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শংকর কে রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজশাহীর মতো শহরে আমরা এমন বায়ুদূষণ কল্পনাও করতে পারি না। এখন এমনিতেই আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে সর্দি, জ্বর, কাশি, ফ্লু, ডেঙ্গু রয়েছে। এর সঙ্গে দূষিত বায়ু ফুসফুসে গেলে শিশু ও বয়স্ক এবং যারা আগে থেকে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত, তাদের নানা অসুখ দেখা দেবে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরজুড়ে প্রচুর নির্মাণকাজ হচ্ছে। বালু রাখা হচ্ছে রাস্তার ওপর। গাড়ি সেদিক দিয়ে গেলে চাকা উঠছে বালুর ওপর। এতে বালু উড়ছে। বাতাসে ধূলিকণা বাড়ছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পরিবেশবান্ধব হলেও সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে সেগুলোও চলাচলের কারণে ধুলোবালি ওড়াচ্ছে; পাশাপাশি অন্যান্য যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তো শোনা যায় না।’

ধোঁয়া দেখে সনদ

রাজশাহী নগরের ভেতর দিয়ে এখনো বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করে। শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লক্কড়ঝক্কড় বাস এক জেলা থেকে আরেক জেলায় চলাচল করছে। গতকাল দুপুরে নগরের ভদ্রা এলাকায় একটি বাস থেকে কালো ধোঁয়া নির্গত হতে দেখা যায়।

সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী এসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) নূরে আলম সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে মোটরসাইকেল একবার কেনার পর আর কখনো ধোঁয়া পরীক্ষা হয় না। এ ব্যাপারে মামলা হয় না। আমাদের দেশে বিষয়টা ওই পর্যায়ে যায়নি। তবে বাস-ট্রাকের মতো অন্যান্য যানবাহন কালো ধোঁয়া নির্গত করলে আমরা ব্যবস্থা নিই। এটা অবশ্য দেখার মূল দায়িত্ব বিআরটিএর। আমরা বিআরটিএকে বলি, যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া নির্গত করে, তাদের যেন ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়া হয়।’

বিআরটিএর রাজশাহী কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁরা যানবাহনের কালো ধোঁয়া চোখে দেখেই ফিটনেস সনদ দেন। ধোঁয়ার মান পরীক্ষার জন্য তাঁদের কাছে কোনো ডিভাইস নেই। অথচ গ্যাস, পেট্রল বা অকটেনচালিত মোটরযানের ধোঁয়া পরীক্ষার জন্য গ্যাস অ্যানালাইজার ও ডিজেলচালিত গাড়ির জন্য স্মোক মিটার আছে। এ যন্ত্র শুধু বিআরটিএর ঢাকা কার্যালয়ে আছে। দেশের আর কোথাও নেই।

জানতে চাইলে বিআরটিএর রাজশাহীর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) ফয়সাল হাসান বলেন, প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য আগে একবার তাঁকে শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) দেওয়া হয়েছিল। তাই প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়া তিনি কথা বলবেন না।

রাসিকে জরুরি বৈঠক

রাজশাহীর বাতাসের মান দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হয়ে পড়ার খবর জানতে পেরে গতকাল দুপুরে জরুরি বৈঠক করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) কর্মকর্তারা। সেখানে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্মাণাধীন বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্যোগে নির্মাণাধীন বাসাবাড়ির বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। এ বৈঠকে ধূলিকণা কমানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে রাসিকের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদ-উল-হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাতাসের মান নিয়ে যে খবর এসেছে, তা দুঃখজনক। এখন শহরে বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারের কাজ চলছে। সে কারণে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় ধুলোবালি উড়ছে। পানি ছিটিয়ে এটা কমানো যায় কি না, সে জন্য সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখাকে বলা হয়েছে। ফ্লাইওভারগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে এটা থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন

মনোনয়ন লড়াইয়ে দুই শিল্পপতি

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ 
আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দুই শিল্পপতি। দৃশ্যত তাঁদের দুজনের প্রতিযোগিতার মাঝে পিছিয়ে পড়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেতারা। এমনকি মহানগর বিএনপির অনেক নেতা, যাঁরা ৫ আগস্টের পর নিজেদের সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিতেন, তাঁদের কেউ কেউ এখন দুই ব্যবসায়ীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই শিল্পপতি হচ্ছেন মডেল ডি ক্যাপিটাল গ্রুপের মালিক ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ। অপরজন প্রাইম গ্রুপের মালিক ও বিকেএমইএর সাবেক পরিচালক আবু জাফর আহমেদ বাবুল। দুজনের কেউই বিএনপির পদধারী কোনো নেতা নন। মাসুদুজ্জামান মাসুদ গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছ থেকে দলীয় সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তবে এলাকায় উভয় ব্যবসায়ী আগে থেকেই বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। জেলা, মহানগর এমনকি কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও তাঁদের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে শোনা যায়।

দুই ব্যবসায়ীর বাইরে আসনটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তবে মাসুদ ও বাবুলের কারণে ইতিমধ্যেই আলোচনা থেকেও ছিটকে পড়েছেন তাঁরা। এমনকি কয়েকজনকে এই দুই শিল্পপতির পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে তাঁদের সমর্থন দিতেও দেখা গেছে।

পুরো মহানগর বিএনপি এখন মাসুদ ও বাবুলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই দৌড়াচ্ছেন তাঁদের পেছনে। দলে পদপদবি না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন নিয়ে তাঁদের দৌড়ঝাঁপ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নেতা-কর্মীদের ধারণা, এ দুজনের একজনই পাবেন আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন থেকে শুরু করে বিএনপির বহু রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আর্থিকভাবে পাশে ছিলাম। এমনকি আওয়ামী লীগ আমলে আমার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের অর্থায়নের অভিযোগে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমার কারখানা পুড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছে। ফলে বিএনপির পদপদবিতে না থেকেও ঝুঁকিতে ছিলাম। আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। বাকিটা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন।’

অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু জাফর আহমেদ বাবুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনে আমি ছায়া হয়ে ছিলাম। দলের নির্দেশনা পেয়েই সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি। মনোনয়ন পাব কি না সেটা নির্ভর করছে হাইকমান্ডের ওপর। তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মেনে নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ

ট্রেন আসে, ট্রেন যায়, স্টেশন তাকিয়ে রয়

  • সাড়ে ৩৮ হাজার কোটির প্রকল্পে চলে ৬টি আন্তনগর ট্রেন।
  • ২০ স্টেশনের ৮টিতে এখনো কোনো ট্রেন থামছে না।
  • কার্যক্রম না থাকা স্টেশন ভবন থেকে চুরি হচ্ছে সরঞ্জাম।
  • দিনে ৪৮টি ট্রেন চলার সক্ষমতা থাকলেও বাড়ছে না ট্রেন।
  • ১,৫৭৪ জনকে নিয়োগের প্রস্তাব ফেরত গেছে পাঁচবার।
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ৮টি স্টেশনে থামে না কোনো ট্রেন। ফলে এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব এলাকার মানুষ। একই সঙ্গে জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি পদ্মবিলা জংশন এলাকায়।	ছবি: আজকের পত্রিকা
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ৮টি স্টেশনে থামে না কোনো ট্রেন। ফলে এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব এলাকার মানুষ। একই সঙ্গে জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি পদ্মবিলা জংশন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ২০টি স্টেশনের ৮টিতেই কোনো ট্রেন থামে না। ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেললাইন চালুর ১০ মাস পরও ট্রেন থামার অপেক্ষায় এসব স্টেশন। ট্রেন না থামায় এই রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব এলাকার মানুষ। অন্যদিকে কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ থাকায় আধুনিক এসব স্টেশন ভবন নষ্ট হচ্ছে। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে কিছু স্টেশন থেকে সরঞ্জাম চুরি হচ্ছে।

ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ২৩৬ দশমিক ২৭ কিলোমিটার। সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে নিয়মিত ট্রেন চলে মাত্র ৬টি; অথচ সক্ষমতা রয়েছে ৪৮টি ট্রেন চলাচলের। ফলে এই রেলপথ বাণিজ্যিকভাবে এখনো লাভজনক হয়ে উঠতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ১৭টি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৩টি পুরোনো স্টেশন সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার করা তিন স্টেশনের মধ্যে রয়েছে কমলাপুর, কাশিয়ানী ও ভাঙ্গা। গেন্ডারিয়ায় আগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ছোট স্টেশন ছিল। সেখানে আধুনিক স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এই স্টেশনে এখনো শুধু ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনই থামে। কিন্তু পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলো থামে ১১টি স্টেশনে। এগুলো হলো ভাঙ্গা জংশন, কাশিয়ানী, লোহাগড়া, নড়াইল, সিঙ্গিয়া, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা, শিবচর, ভাঙ্গা স্টেশন ও কমলাপুর রেলস্টেশন। ট্রেন থামায় এসব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করতে পারে। পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করা ট্রেন যে ৯টি স্টেশনে থামছে না, সেগুলো হলো গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, নিমতলা, নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, জামদিয়া, পদ্মবিলা, রূপদিয়া। এসব স্টেশনে বর্তমানে কয়েকজন ওয়েম্যান ও প্রহরী আছেন, কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রেন না থামায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক স্টেশন ভবনগুলো ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে। ঢাকায় একটি সরকারি দপ্তরে কর্মরত মো. জুবায়ের হোসেনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কপথ এখন বেশ ভালো, তাই প্রতিদিন বাড়ি থেকে অফিসে যাতায়াত করেন। সিরাজদিখানের কাছে নিমতলা রেলস্টেশন নির্মিত হলেও কোনো ট্রেন থামে না। ফলে ট্রেনের সুবিধা তিনি পান না। সরকারি টাকায় স্টেশন তৈরি করে ব্যবহার না হওয়া অর্থের অপচয়।

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, কার্যক্রম না থাকা কিছু স্টেশন থেকে এরই মধ্যে দামি ইলেকট্রিক ফিটিংস, বাথরুমের সরঞ্জাম ও ভায়াডাক্টের গ্রিটিং চুরি হয়েছে। ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই বলেই এসব স্টেশন চালু করা হয়নি। পূর্ণরূপে পরিচালনার আগে জনবল অনুমোদন এবং সময়সূচি চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।

২০২৩ সালে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের একাংশ চালু হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে এই রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা, মধুমতি, জাহানাবাদ, বেনাপোল এক্সপ্রেসসহ ছয়টি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে। নতুন রেললাইন চালু হলেও বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা।

প্রকল্প সূত্র জানায়, এই রুট দিয়ে দিনে ৪৮টি যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল, কোচ, লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) না থাকায় পূর্ণ সক্ষমতায় পৌঁছানো যায়নি। প্রকল্পে প্রস্তাবিত ১ হাজার ৫৭৪ জন নতুন জনবল নিয়োগের অনুমোদন এখনো দেয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে পাঁচবার সেই প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তনগর ট্রেন সব স্টেশনে থামানো সম্ভব নয়। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতেই ট্রেনের বিরতি দেওয়া হয়। তবে কিছু স্টেশন এখন বন্ধ আছে। ধীরে ধীরে লোকাল বা কমিউটার ট্রেন চালু হলে সব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে। এ ছাড়া জনবলসংকটের কারণে এখনই সব স্টেশন চালু করা যায়নি। তিনি বলেন, সব স্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের বিরতি দিলে সময়সূচি ব্যাহত হবে। কিছু স্টেশনের সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় জিআরপি মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

প্রকল্পের নথি থেকে জানা যায়, ডিপিপি অনুযায়ী এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৬২৮ দশমিক ৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নির্মাণ চুক্তির আওতায় ছিল ২৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। অবশিষ্ট খরচ হয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স ৮ হাজার কোটি, ভূমি অধিগ্রহণে ৪ হাজার কোটি, পুনর্বাসনে ২০০ কোটি, ইউটিলিটি পরিষেবা স্থানান্তরে ৩০০ কোটি, পরামর্শক ব্যয় ১ হাজার ৩৩৩ কোটি, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য প্রশাসনিক খরচ ৫০ কোটি টাকা।

২০২৬ সালের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে প্রকল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন অবকাঠামো তৈরি হয়, সেখানে ব্যবহারের আগেই স্টেশন বন্ধ থাকা পরিকল্পনার দুর্বলতা নির্দেশ করে। এ ছাড়া বড় বড় প্রকল্প নেওয়া থেকে মনোযোগ কমাতে হবে রেলওয়েকে। রেলসেবাকে টেকসই করতে হলে স্টেশনভিত্তিক ব্যবসা এবং কমিউটার সার্ভিস চালুর দিকে নজর দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কার্গো ভিলেজে আগুন

পণ্য পেরিয়ে দ্রুত পৌঁছাতে পারেনি বেবিচকের দল

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনে বহু ব্যবসায়ীর পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়েছে কয়েক শ কোটি টাকার মালপত্র। গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনে বহু ব্যবসায়ীর পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়েছে কয়েক শ কোটি টাকার মালপত্র। গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন নেভানোর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব একটি বিভাগ রয়েছে। তবে গত শনিবার কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে আগুন লাগার পর বিভাগটি বিভিন্ন কারণে তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারেনি। ফলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ভবনের সবকিছু পুড়ে যায়। বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বেবিচক বলেছে, ভবনটির যেখানে আগুন লাগে, তার সামনে একটি টিনের শেড এবং নিচে আমদানি করা টন টন পণ্যের স্তূপ থাকায় বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ গাড়ি নিয়ে দ্রুত পানি দিতে পারেনি। এতে দেরি হয়। পরে তারা বাইরে ভবনের সামনের সড়ক দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যরা এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।

বেবিচক জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের উত্তর পাশে বেবিচক কর্তৃপক্ষের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের দপ্তর। এই বিভাগের নেতৃত্বে রয়েছেন পরিচালক আবু সালেহ মো. খালেক। এই বিভাগের সদস্যরা দুই বছর পরপর শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে ডামি উড়োজাহাজ তৈরি করে আগুন নেভানোর মহড়া করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে মহড়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তাদের জনবল, যানবাহন, প্রশিক্ষণ ও নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা রয়েছে।

বেবিচক সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের আগুন নেভানোর চারটি যানবাহন রয়েছে, একটি প্রোটেক্টর গাড়ি, একটি রোজেনবাওয়ার ও দুটি মরিতা। তবে একটি মরিতা গাড়ি নষ্ট। প্রোটেক্টর গাড়িতে একবারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার লিটার পানি ও ১ হাজার ৫০০ লিটার ফোম বহন করা যায়। অপর গাড়িগুলোতে ১০ হাজার লিটার পানি ও ১ হাজার ২০০ লিটার ফোম বহন করা যায়। গাড়ির পানি বা ফোম শেষ হলে আবার ভরতে হয়।

সূত্র জানায়, এসব গাড়ির নকশা আলাদা। এগুলো উড়োজাহাজের আগুন নেভানোর জন্য তৈরি। এসব গাড়ির সঙ্গে বড় পাইপের সংযোগ কম করা থাকে। অর্থাৎ ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ির চেয়ে এগুলো ভিন্ন। তাই বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের আগুনে পানি ছুড়ে তেমন সফল হয়নি।

দুটি সংস্থার প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত ৯ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা শুরুর দিকে বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ দলকে সাহায্য করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থলের ৩০০ মিটারের মধ্যেই বেবিচকের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ। কিন্তু তারা আগুনের কাছে এসে তাৎক্ষণিক পানি দিতে পারেনি। প্রথমে ধোঁয়া দেখে ভবনটির সামনের সড়কের আনসার সদস্যরা দ্রুত বিষয়টি জানান। এরপর বিমানবন্দরের অগ্নিনির্বাপণ দলের একটি গাড়ি মাঠ দিয়ে আগুনের দিকে এগোনের চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের সূত্রপাতস্থলের সামনে একটি টিনের বড় শেড ও তার সামনে খোলা মাঠে কয়েক শ’ টন আমদানি করা ভারি মালামাল রাখা ছিল। এসব মালামাল সরিয়ে ওই গাড়ির পানি পৌঁছাতে পারেনি। এরপর বাইরে এসে পানি দেওয়ার চেষ্টা করার সময় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়। নিরাপত্তাজনিত কারণে এলাকাটির প্রতিটি ফটকে ছিল কড়াকড়ি। কেউ প্রথমে ধারণা করেননি, আগুন এত তীব্র হবে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাতে যোগ দেয়। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা আন্তর্জাতিক কুরিয়ার এলাকার সামনের ফটক ভেঙে ফেলেন। কিন্তু আগুন এর মধ্যেই ছড়িয়ে যায়।

সূত্র জানায়, বেবিচকের অগ্নিনির্বাপক দলের প্রতিটি গাড়ির জন্য চালকসহ ছয়জন স্টাফ রয়েছেন। সেই হিসাবে চার গাড়ির জন্য ২৪ জন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন। তারা শিফটে দায়িত্ব পালন করেন।

ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী আগুন নেভার পর সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডের জন্য যথেষ্ট প্রটেকশন ছিল না।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে বেবিচকের কর্মকর্তারা জানান, বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক আজ মঙ্গলবার সব বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।

শনিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো ভবনের আন্তর্জাতিক কুরিয়ারের জায়গায় আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর অন্তত ৩৬ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসাধীন এবং বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আগুন নেভানোর কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বিপুল নামে আনসারের এক সদস্য গাড়ি চাপায় বিমানবন্দরের সামনের সড়কে নিহত হন।

গতকাল দেখা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের তিন দিনের মাথায় বিকল্প ব্যবস্থা চালু হলেও আমদানি পণ্য ছাড় ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়নি। সচল করা যায়নি পুড়ে যাওয়া আমদানি কার্গো ভিলেজের নেটওয়ার্কিং সিস্টেম। ফলে আমদানির মালামাল ছাড়ের আংশিক কার্যক্রম চলছে বিমানের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ল্যাপটপ দিয়ে। এতে কার্যক্রমে ধীরগতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আমদানিকারক ও এজেন্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধর্ষণ, আড়াল করতে সাউন্ডবক্সে চলে গান

দেড় মাস ধরে কর্মস্থলে নেই সহকারী কমিশনার, নিয়োগ বাতিল করল সরকার

পর্নো সাইটে বাংলাদেশি যুগলের ১১২ ভিডিও, র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম: সিআইডি

জুবায়েদ হত্যার নেপথ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক’, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটক ৩

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত