Ajker Patrika

তাহেরপুরে এমপি স্বামীর শূন্যস্থান পূরণে স্ত্রী

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১১: ৩৯
Thumbnail image

রাজশাহীর তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। পদত্যাগ করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে লড়ে হয়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি)। এখন মেয়র পদে উপনির্বাচন হবে পৌরসভায়। তাতে লড়তে চান আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী শাইলা পারভীন।

আগামী ৯ মার্চ এই পৌরসভায় মেয়র পদে উপনির্বাচন হবে। এতে মেয়র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সম্ভাব্য চারজন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে দুজন জানিয়েছেন, এমপিপত্নী শাইলা পারভীন প্রার্থী না হলেই কেবল তাঁরা প্রার্থী হবেন। দলের ভেতর প্রতিযোগিতা করে তাঁরা নির্বাচন করবেন না।

শাইলা প্রার্থী হলে তাঁকে সাবেক সর্বহারা নেতা আবদুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে।

শাইলা পারভীনের বাবা এই পৌরসভার প্রয়াত মেয়র আলো খন্দকারকে গলা কেটে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন সর্বহারা ক্যাডার আর্ট বাবু। তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তাঁর দাবি।

বাবা আলো খন্দকারের মৃত্যুর পর ২০০৩ সালে শাইলা পারভীন তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র হয়েছিলেন। পরে সাবেক ছাত্রনেতা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। আবুল কালাম আজাদ পরপর দুবার পৌরসভার মেয়র হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগের তিনবারের এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হককে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেবে না। কেউ নৌকা প্রতীকও পাবেন না। মেয়র পদে এমপিপত্নী ও সাবেক মেয়র শাইলা পারভীন এবং সাবেক সর্বহারা নেতা আর্ট বাবু ছাড়াও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর মৃধা মনসুর রহমান ও পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র বাবুল খানের নির্বাচন করার আগ্রহ রয়েছে।

তাঁদের মধ্যে আবু বকর মৃধা মনসুর রহমান ও বাবুল খান জানিয়েছেন, এমপি আবুল কালাম আজাদ সমর্থন দিলে তাঁরা নির্বাচন করবেন। এমপিপত্নী শাইলা পারভীন প্রার্থী হলে তাঁরা নির্বাচন করবেন না। শাইলা প্রার্থী না হলে এমপি চাইলে তাঁরা প্রার্থী হবেন, না চাইলে হবেন না।

তবে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আর্ট বাবুর নির্বাচন করার সম্ভাবনা বেশি।

দলীয় নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, আর্ট বাবু এই আসনের সদ্য সাবেক এমপি এনামুল হকের আশীর্বাদপুষ্ট। এবারের সংসদ নির্বাচনের সময় এনামুলের পাশে ছিলেন আর্ট বাবু। আর বর্তমান এমপি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এনামুলের দা-কুমড়া সম্পর্ক। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার এই বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার বিপক্ষে গিয়ে এনামুলের পাশে ছিলেন। তাই এমপিপত্নী মেয়র প্রার্থী হলে তাঁর বিপক্ষে আর্ট বাবুকেই এনামুলের পক্ষের প্রার্থী করা হতে পারে।

জানতে চাইলে আর্ট বাবু বলেন, ‘নির্বাচন করার আগ্রহ আছে। কিন্তু কিছুদিন আগেই একটা নির্বাচন হলো। নির্বাচনে যে রকম পরিবেশ দেখলাম, সে রকম হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে লাভ নাই। নানা বিষয় আছে। সবকিছু দেখছি। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি।’

শাইলা পারভীন বলেন, ‘আমি তো মেয়র ছিলাম। আমার নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা ছিল না। ইচ্ছা ছিল, নিজে রাজনীতি করব না, রাজনীতি করাব। কিন্তু জনগণের প্রচুর চাপ। নির্বাচন না করলে ৯০ থেকে ৯৫ পার্সেন্ট মানুষ আমার বাড়ির সামনে এসে বসে থাকবে। তাই নির্বাচন করতে হবে।’

এ বিষয়ে এমপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আর এলাকাবাসী চাচ্ছে, শাইলা আবার পৌরসভার মেয়র হয়ে মানুষের সেবা করুক। তাই সে নির্বাচন করবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার বলেন, ‘দলীয় প্রধান পৌর নির্বাচন ওপেন করে দিয়েছেন। নৌকা থাকবে না। তাই কে প্রার্থী হবেন, তা এখনই বলতে পারছি না। তাহেরপুর এমপি সাহেবের নিজের এলাকা। তিনি পৌরসভার মেয়রও ছিলেন। তাঁর নিজের কোনো ইচ্ছা থাকতে পারে। আর্ট বাবু প্রার্থী হবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু শুনিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত