Ajker Patrika

দুই এমপি বিপক্ষে, তবু চমক দেখালেন যুবলীগ নেতা সোহেল

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ১০ মে ২০২৪, ১৮: ৩২
Thumbnail image

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বড় চমক দেখিয়েছেন যুবলীগ নেতা বেলাল উদ্দিন সোহেল। এ উপজেলায় দুজন সংসদ সদস্যের (এমপি) দুই প্রার্থীসহ প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। 

প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীর মোট প্রাপ্ত ভোট ৫৮ হাজার ৭২৭। আর সোহেল একাই পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৮৮ ভোট। বেলাল উদ্দিন সোহেল উপজেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক। 

উপজেলা নির্বাচনে আগে কখনো অংশ নেননি তিনি। ২০২১ সালে প্রথমবার গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। সেই ভোটে জিতে আড়াই বছর ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন সম্প্রতি। 

গত বুধবার অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে সোহেলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ২৪ হাজার ৩২৮ ভোট পেয়ে উপজেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক সোহেলের কাছে ধরাশায়ী হন। জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দিয়েছিলেন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। 

নির্বাচনে আরেক প্রার্থী গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম পেয়েছেন ২১ হাজার ১৩৪ ভোট। রবিউল আলমকে সমর্থন দিয়েছিলেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। 

এমপি ফারুকের সঙ্গে বৈরিতার কারণে গোদাগাড়ীতেও নিজের প্রার্থী দিয়েছিলেন পাশের আসনের এমপি আসাদ। তাঁর প্রার্থীও পরাজিত হয়েছেন সোহেলের কাছে। 

অন্য দুই প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুনন্দন দাস ১১ হাজার ৩৫ এবং বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাজেদুর রহমান খান মার্কনী মাত্র ২ হাজার ২৩০ ভোট পান। 

বড় ব্যবধানে বিজয়ী সোহেল আমদানি-রপ্তানির ব্যবসায়ী। টানা কয়েক বছর জেলার শ্রেষ্ঠ করদাতা হয়েছেন। আড়াই বছর দায়িত্ব পালনকালে জেলার ৭২ জন ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। 

দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন বেলাল উদ্দিন সোহেল। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার জন্য সোহেলকে বলেছিলেন এমপি ফারুক। তিনি সমর্থন দিয়েছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকেই। এরপর হুট করেই এমপি ফারুকের সঙ্গ ছাড়েন বেলাল উদ্দিন সোহেল। 

সম্প্রতি হুট করেই তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমাবেশের মঞ্চে দেখা যায়। সেই মঞ্চে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদও ছিলেন। তবে এমপি আসাদ গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য রবিউল আলমকে সমর্থন দিয়ে তাঁর সমর্থকদের মাঠে নামান। ভোটে বড় ব্যবধানে বিজয়ের পর সোহেল গতকাল বৃহস্পতিবার নগর ভবনে গিয়ে মেয়র লিটনকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান। 

নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল বলেন, ‘ভোটে জিততে আমাকে স্থানীয় দুজন এমপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। সবার সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করে মানুষের পাশে থাকার কারণে ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়েছেন। এখন গোদাগাড়ী উপজেলাকে আমি স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করব।’ 

ভোটের ফল নিয়ে কথা বলতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ও এমপি আসাদুজ্জামান আসাদকে ফোন করা হলেও তাঁরা ধরেননি। 

সম্প্রতি আসাদুজ্জামান আসাদ প্রার্থী হিসেবে রবিউল আলমকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘রবিউল যোগ্য মানুষ। ভোট করতে চায়। তাই সমর্থন দিয়েছি।’ 

এমপি ফারুক বলেছিলেন, ‘ভোটে কাউকে সমর্থন দিচ্ছি না তা বলব না।’ তাঁর এলাকায় এমপি আসাদ কেন প্রার্থী দিয়েছেন সে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত