Ajker Patrika

‘পানির হিস্যা পেতে আবার লংমার্চ হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহীতে সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহীতে সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘পদ্মা নদীতে পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে ৪৯ বছর আগে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত লংমার্চ করেছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। এখনো সংকটের সমাধান হয়নি। তাই সেই পানির অধিকারের দাবিতে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে পায়ে হেঁটে আবার লংমার্চ হবে। ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে এভাবেই আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহীতে আয়োজিত গণজমায়েত ও সমাবেশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। রাজশাহীর ৪৯তম ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উদ্‌যাপন কমিটি নগরের সাহেববাজার বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে সমাবেশটি হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম রফিকুল ইসলাম। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও ভাসানী ফাউন্ডেশন, রাজশাহীর সভাপতি ড. জি এম শফিউর রহমান।

প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের রাজশাহীর সভাপতি এনামুল হক, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর রাজশাহীর সভাপতি তৌফিক আহসান টিটু, রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জমসেদ আলী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জেলার সমন্বয়ক আবুল হাসনাত বেগ প্রমুখ। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ড্যাবের রাজশাহীর সভাপতি ডা. মো. ওয়াসিম হোসেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ভারত ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ফারাক্কা বাঁধ উদ্বোধন করে। এই ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের জন্য একটি মরণফাঁদ উপলব্ধির পর মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠ থেকে ফারাক্কা লংমার্চ শুরু করেন। ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯ বছর অতিবাহিত হলেও ভারত বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। পানির ন্যায্য অধিকারের আশ্বাসের কথা বললেও আজ পর্যন্ত তাদের কোনো আশ্বাস বাস্তবায়ন বাংলাদেশের মানুষ এখন পর্যন্ত দেখতে পায়নি। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উজানে ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের প্রায় ৪৪টি অভিন্ন নদী আজ বিলুপ্তির পথে। পানির কারণে নদীগুলো মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।’

বক্তারা বলেন, ‘ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের জন্য একটি জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে। ফারাক্কার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হলে প্রয়োজনে মওলানা ভাসানীর মতো নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিল যা ভারতের পক্ষে। হাসিনা সরকার ১৬ বছর ক্ষমতায় থেকে ভারতকে একতরফা পানি ব্যবহার করতে দিয়েছে।’ তারা আরও বলেন, ‘এই ফারাক্কার পানি চুক্তি নিয়ে আর কোনো অপরাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না। এটা দেশের মানুষের বাঁচা-মরার বিষয়। এই অবস্থায় পানির অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ আওয়াজ তুলতে শুরু করেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত