Ajker Patrika

নওগাঁয় টানা বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে দিনমজুরেরা

নওগাঁ প্রতিনিধি
Thumbnail image

নওগাঁয় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পথঘাটে জলাবদ্ধতা। নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে উঠেছে পানি। অতি বৃষ্টিতে কাজ না পাওয়া দিনমজুরদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। এদিকে ফলসের মাঠে পানি জমে থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ধানসহ সবজির খেত। 

আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে জেলার বদলগাছি, মহাদেবপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনমজুরদের অনেকে বৃষ্টির মধ্যেই বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে। অনেকে আবার বৃষ্টিতে কাজে যেতে পারেননি। ভোগান্তি বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের না হওয়ায় ভ্যান, রিকশা ও অটোরিকশার যাত্রী মিলছে না। 

বেলা ১১টায় শহরের মুক্তির মোড়ে ভ্যান চালক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কদিন থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। যাত্রী কমেছে। দিন আনি দিন খাওয়া পরিবার আমার। এখন ঘরে বসে না থেকে টাকা আয় করতে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি। এভাবে বৃষ্টি হলে ছয়জনের পরিবারে খাবারের টাকা জোগাড় করায় কষ্টকর হয়ে যাবে।’ 

চা দোকানি সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টির কারণে চায়ের দোকান খুলতে পারছি না। আমার দোকানটা খোলা আকাশের নিচে। দোকান বন্ধ থাকায় চরম কষ্টে আছি।’ 

অপরদিকে গত সোমবার থেকে চলা বিরামহীন বৃষ্টিতে মাঠে কৃষকের কাজ থমকে গেছে। শীতের আগাম সবজির খেতে পানি জমে থাকায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষকেরা। 

বদলগাছির কৃষক মিঠু হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে মাঠের সব কাজ থমকে গেছে। সবজির খেতে পানি জমে থাকার কারণে এবার ব্যাপক ক্ষতি হবে মনে হচ্ছে। সবজির গাছ পচে নষ্ট হচ্ছে।’ 

নওগাঁর বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত) এ অঞ্চলে ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। আগামী তিন দিন এমন বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। 

অপরদিকে জেলার মান্দা, মহাদেবপুর, রাণীনগর, আত্রাই উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় টানা বৃষ্টিতে নতুন করে বেড়েছে দুর্ভোগ। গত কয়েক দিন নদীর পানি কমার ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে নদীর পানি। 

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) দেওয়া তথ্য মতে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ছোট যমুনার লিটন ব্রিজ পয়েন্টে ৩০, আত্রাই নদীর শিমুলতলী পয়েন্টে ২১, মহাদেবপুর পয়েন্টে ৩৯, মান্দা উপজেলার জোতবাজার পয়েন্টে ৩৫, আত্রাই উপজেলার রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে সকল পয়েন্টেই পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

জেলা পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, নদীর পানি কমার ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু নতুন করে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রতিনিয়তই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে নদীর পানি। এতে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে সবজি খেতে ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি জমি থেকে পানি বের করে দেওয়ার। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে আরও সময় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত